ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়ে থাকে(Saraswati Puja 2025)। সরস্বতী পুজোর পাশাপাশি এই দিনটি বসন্ত পঞ্চমী হিসেবেও পালিত হয়। মনে করা হয়, এই দিনেই আবির্ভূতা হয়েছিলেন জ্ঞান, বিদ্যা ও শিল্পকলার দেবী সরস্বতী। প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী উদযাপিত হয় এবং এই দিনে দেবী সরস্বতীর পুজো করার প্রথা রয়েছে। দেখে নিন পঞ্জিকা অনুসারে এই বছর কবে পড়েছে বসন্ত পঞ্চমী? পুজোর শুভ সময় কখন(Saraswati Puja 2025)?
সরস্বতীর আরাধনায় মা লক্ষ্মী ও কালীর আশীর্বাদ লাভ (Saraswati Puja 2025)
হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, বসন্ত পঞ্চমীর দিনে, দেবী সরস্বতীর কাছে বুদ্ধি এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রার্থনা করা হয়(Saraswati Puja 2025)। সঙ্গীত, শিল্প ও সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই দিনে বিশেষ পুজো করেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ দিন। প্রচলিত হিন্দু রীতি ও ঐতিহ্য অনুসারে, সরস্বতী পুজোর দিনটি শিশুদের শিক্ষা ও বিদ্যা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি শুরু করার জন্য একটি অত্যন্ত শুভ দিন বলে মনে করা হয়। এছাড়াও এই পবিত্র দিনটি ব্যবসা, স্কুল প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি নতুন কাজ শুরু করার জন্যও শুভ বলে বিবেচিত হয়। বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞানের প্রার্থনা করেন সরস্বতী মায়ের কাছে। পুরাণ মতে, এই দিনে মা সরস্বতীর আরাধনা করলে মা লক্ষ্মী ও দেবী কালী উভয়ের আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
পঞ্জিকা অনুসারে কবে করাবেন পুজো? (Saraswati Puja 2025)
দৃকপঞ্জিকা অনুসারে ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকাল ৯টা ১৪ মিনিটে পঞ্চমী পড়ছে(Saraswati Puja 2025)। ৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ৬টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত পঞ্চমী থাকবে। তারপর মাঘ শুক্লা ষষ্ঠী তিথি পড়ে যাচ্ছে। উদয়া তিথি অনুসারে ৩ ফেব্রুয়ারি হল বসন্ত পঞ্চমী। কিন্তু সেদিন যেহেতু খুব সকালেই পঞ্চমী ছেড়ে যাচ্ছে, তাই ২ না ৩ ফেব্রুয়ারি, কবে সরস্বতী পুজো করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অনেকেই। আবার বেণীমাধব শীলের গার্হস্থ্য পঞ্জিকা অনুসারে রবিবার বেলা ১২টা ৩৪ মিনিটে পঞ্চমী পড়ছে। সোমবার ৯টা ৫৯ মিনিটে পঞ্চমী ছাড়ছে। সকালে পঞ্চমী ছেড়ে গেলেও বসন্ত পঞ্চমী তিথি যেহেতু ৩ ফেব্রুয়ারি, তাই সেদিনই পুজো করার পরামর্শ দিচ্ছেন জ্যোতিষবিদরা।
আরও পড়ুন:Weekly Horoscope: চন্দ্র-মঙ্গল রাশি পরিবর্তন যোগ, জানুন মেষ থেকে কন্যা রাশির কেমন যাবে এই সপ্তাহ?
ঋতুরাজ বসন্তের আগমন
বসন্ত পঞ্চমীর দিন থেকে ঋতু পরিবর্তন হয় এবং ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটে। গাছ এর পুরানো পাতা ঝরে নতুন অঙ্কুর গজায়। কোকিলের তান আর মহুয়া ও অন্যান্য ফুলের সুবাসে গোটা পরিবেশ মুখরিত থাকে। তাই বসন্ত পঞ্চমীকে বলা হয়েছে প্রকৃতির উৎসব। এই দিন থেকে, সূর্যের রশ্মি শক্তিশালী হতে শুরু করে যাতে কনক ফসল অর্থাৎ গম সোনার মতো পাকে এবং গৃহ ধন-শস্যে ভরে যায়। ক্ষেতে হলুদ সরিষা ফুলের সৌন্দর্য বসন্ত পঞ্চমীর হলুদ রঙের প্রতীকের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই দিনে হলুদ কাপড় বাধ্যতামূলকভাবে পরিধান করা হয়, যা বৃহস্পতি গ্রহের প্রতীক এবং যা জ্ঞান, শুভ ও সৌভাগ্য নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন:Weekly Horoscope: তুলা থেকে মীন রাশির সাপ্তাহিক রাশিফল, জীবনে কী পরিবর্তন আনছে চন্দ্র মঙ্গল যোগ?
জ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির সঙ্গমের প্রতীক
হিন্দু ধর্মে, বসন্ত পঞ্চমী একটি উৎসব যা জ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির সঙ্গমের প্রতীক। এটি একটি নতুন সূচনা এবং জ্ঞান অর্জনের দিন। বসন্ত পঞ্চমীর শুধু ধর্মীয় নয়, জ্যোতিষশাস্ত্রের দিক থেকেও তাৎপর্য রয়েছে। এই দিনে মা সরস্বতীর পাশাপাশি গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, পেন এবং বাদ্যযন্ত্রের পুজো করারও রীতি প্রচলিত আছে। অনেক বাড়িতে শিশুদের হাতেখড়ির অনুষ্ঠান করা হয় এদিন। তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম বিদ্যাচর্চা শুরু হয় এই দিন থেকে। বসন্ত পঞ্চমী থেকে শীত ঋতুর অবসান ও বসন্তের আগমন বার্তা ঘোষিত হয়।