ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশের ময়মনসিংহে একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে সংবেদনশীল বিতর্ক(Satyajit Ray House Demolished)। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রকে অনুরোধ করেন, বিষয়টি নিয়ে যেন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলা হয়। কেন্দ্র দ্রুত প্রতিক্রিয়াও জানায়। তবে এবার বাংলাদেশ সরকার (Yunus) একটি বিশদ বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, ভাঙা বাড়িটির সঙ্গে সত্যজিৎ রায় বা তাঁর পূর্বপুরুষদের কোনও সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশ সরকারের দাবি, “ভুল তথ্য ছড়াবেন না” (Satyajit Ray House Demolished)
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, যে বাড়িটি ভাঙা হয়েছে সেটি আসলে স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরীর তৈরি(Satyajit Ray House Demolished)। জমিদারির দাপ্তরিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য নির্মিত এই বাড়ি পরবর্তী সময়ে সরকারের অধীনে আসে এবং সেটিকে বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমিকে লিজ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের পর থেকে ভবনটি ব্যবহার না হওয়ায় এটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন অসামাজিক কাজকর্মের আখড়ায় পরিণত হয়।
২০২৪ সালে বাড়িটি ভেঙে তার জায়গায় আধা-স্থায়ী ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে ৭ মার্চ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভবন ভাঙার কথা জানানো হয়।
সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক ইতিহাস নিয়ে কী বলছে ঢাকা? (Satyajit Ray House Demolished)
বাংলাদেশ সরকার জানায়, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর প্রমাণ মিলেছে, এই ভবনের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পরিবারের কোনও যোগসূত্র নেই(Satyajit Ray House Demolished)। তবে, রায় পরিবারের পূর্বপুরুষ হরিকিশোর রায়ের নামেই বাড়িটির সামনের রাস্তাটির নাম — হরিকিশোর রায় রোড। এই রাস্তায় রায় পরিবারের একটি বাড়ি ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেলেও তা বহু বছর আগেই বিক্রি হয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে একটি বহুতল ভবন দাঁড়িয়ে আছে।
স্থানীয় ইতিহাসবিদ ও বিশিষ্টজনদের মতামত (Satyajit Ray House Demolished)
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে স্থানীয় কবি, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও সমাজকর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়, যেখানে সকলেই একমত হন যে ভাঙা বাড়িটি রায় পরিবারের নয়। বরং শিশুদের কল্যাণে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ হওয়া উচিত।

নয়াদিল্লির প্রস্তাব এবং মমতার উদ্বেগ (Satyajit Ray House Demolished)
বাড়িটি ভাঙা নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠতেই ভারত সরকারের তরফে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানানো হয়, যেন ভবনটির সংস্কার করে সাহিত্যের জাদুঘর বা প্রদর্শনশালা বানানো হয়। এমনকি নয়াদিল্লি অর্থসাহায্যের কথাও জানায়।এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় “সাংস্কৃতিক অপূরণীয় ক্ষতি” হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এবং কেন্দ্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানান।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : পশ্চিম এশিয়ায় অশান্তি! ইরানে যেতে ‘ভেবে দেখার’ পরামর্শ ভারতীয় দূতাবাসের
ঐতিহ্য না কি বিভ্রান্তি? (Satyajit Ray House Demolished)
এই মুহূর্তে বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে একটি প্রশ্ন— সত্যিই কি এটি সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ছিল? না কি এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এক ভুল বিশ্বাস? বাংলাদেশ সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান এবং স্থানীয় ইতিহাসবিদদের বক্তব্য অন্তত এটিই বলছে যে, সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক ইতিহাস এখানে যতটা প্রচারিত হয়েছে, বাস্তবে তার গভীর প্রমাণ নেই(Satyajit Ray House Demolished)। তবে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা রয়ে গেল— ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে হলে আবেগ নয়, প্রয়োজন তথ্যভিত্তিক তদন্ত।