Last Updated on [modified_date_only] by Sumana Bera
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রথম ২ মাসে কোনও গ্রেফতারি নয়। বধূ নির্যাতন (Dowry Harassment) আইনের অপব্যবহার রুখতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গভাইয়ের বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দিল, এখন থেকে ওই নির্দেশিকা মেনেই চলবে তদন্ত এবং গ্রেফতারি প্রক্রিয়া। বধূ নির্যাতনের আইন যেন কারও ব্যক্তিগত ক্ষোভ মেটানোর হাতিয়ার হয়ে না ওঠে, তাই এই নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
২০২২ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এক নির্দেশে জানায়, ৪৯৮এ ধারায় এফআইআর দায়ের হলেই অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা যাবে না। এফআইআর দায়েরের পর দু’মাস সময় দিতে হবে তদন্তের জন্য। এই সময়কালকে বলা হয়েছে ‘কুলিং পিরিয়ড’। এই সময়ের মধ্যে পুলিশি গ্রেফতার, জোরপূর্বক জেরা বা হেনস্থার মতো কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। বধূ নির্যাতনের মামলা হলে বিষয়টি জেলার পরিবার কল্যাণ কমিটির (District family welfare committee) কাছে পাঠাতে হবে।
অভিযোগ করলেই জেল নয়, আগে তদন্ত! (Dowry Harassment)
২০১৭ সালে রাজেশ শর্মা ও অন্যান্য বনাম উত্তর প্রদেশ সরকার ও অন্যান্যদের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট প্রথম এমন গাইডলাইন দেয়। তার ভিত্তিতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২০২২ সালে ওই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট নিজেই সোশ্যাল অ্যাকশন ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস বনাম ভারত সরকারের মামলায় সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু আবারও সুপ্রিম কোর্ট সেই গাইডলাইনকেই কার্যকর করার নির্দেশ দিল।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যদি অভিযোগকারীর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন না থাকে এবং অভিযোগপত্রে বর্ণিত অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা দশ বছরের কম হয় তাহলে এফআইআর দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে মামলাটি (Dowry Harassment) পারিবারিক কল্যাণ কমিটির কাছে যাবে। এই নিয়মকে বাধ্যতামূলক হিসেবে মেনে চলতে হবে পুলিশকে।
বধূ নির্যাতন মামলায় নতুন নির্দেশিকা (Dowry Harassment)
ভৌগোলিক আয়তন এবং জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে এক বা একাধিক এমন পারিবারিক কল্যাণ কমিটি থাকতে হবে। যে কমিটিতে ন্যূনতম তিন সদস্য থাকবেন। কমিটির কাজকর্ম নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর্যালোচনা করবেন জেলা দায়রা অথবা পারিবারিক আদালতের প্রিন্সিপ্যাল বিচারক। জেলার লিগাল সার্ভিস অথরিটির চেয়ারপার্সন হিসেবে থাকবেন পারিবারিক আদালতের বিচারক। কমিটিতে কাদের রাখা যাবে, সেই সম্পর্কেও গাইডলাইনের স্পষ্ট উল্লেখ আছে। ম্যাজিস্ট্রেটের থেকে অভিযোগ পেয়ে কমিটিকে দ্রুত অভিযুক্ত দুই পক্ষ-সহ পরিবারের অন্তত চার জন বর্ষীয়ান সদস্যকে ডেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালাতে হবে। কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করবেন ম্যাজিস্ট্রেট এবং তদন্তকারী অফিসার।
এই মামলায় এক মহিলার অভিযোগের (Dowry Harassment) ভিত্তিতে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরকে প্রায় ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি থাকতে হয়। পরে জানা যায় যে অভিযোগে ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল। শীর্ষ আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়ে স্পষ্ট জানায়, আইনের অপব্যবহার বরদাস্ত নয়। এমনকি, আদালত সেই বিবাহও ভেঙে দেওয়ার নির্দেশও দেয়। শুধু তাই নয়, বিচার শেষে স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারকে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ও অন্যান্য একই রকম প্লাটফর্মেও একই ক্ষমা প্রার্থনা প্রকাশ করতে হবে স্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে।