ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এক সময়ের গৌরবময় টলিউড আজ নিজের ছায়া মাত্র (Shatarupa Sanyal on Tollywood)। এক সময় যেখানে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ভারতীয় সিনেমার অগ্রদূত হিসেবে সম্মান পেত, সেখানে এখন কাজ নেই, সম্মান নেই, ভবিষ্যৎ নেই— আছে শুধু ‘মাফিয়ারাজ’ আর ‘ভয়’।
হতে হবে ইউনিয়নের সদস্য (Shatarupa Sanyal on Tollywood)
অভিযোগ নির্দিষ্ট ইউনিয়নের সদস্য না হলে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা যাবে না (Shatarupa Sanyal on Tollywood)। আবার সেই ইউনিয়নের সদস্য হতে গেলেও দিতে হবে মোটা টাকা। টলিউডে বর্তমানে এমনিতেই কাজের সংখ্যা কম। তার মাঝেও ফেডারেশনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনে কাজ করতে হচ্ছে পরিচালকদের। এমনকি ফেডারেশনের ঠিক করে দেওয়া টেকনিশিয়ানদের নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ফলে পরিচালকদের কাজের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রতা বিঘ্নিত হচ্ছে। কাজের মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সহজেই ক্ষতির মুখ দেখছেন প্রডিউসাররা।
টলিপাড়ার বাস্তব (Shatarupa Sanyal on Tollywood)
এই চুপচাপ আতঙ্ক, এই নিঃশব্দ শোষণ— টলিপাড়ার ভিতরকার বাস্তবতা (Shatarupa Sanyal on Tollywood)। কাজ না পাওয়া শিল্পীদের হতাশা, প্রতিভাবানদের পেছনে ফেলে ‘চেনা গোষ্ঠী’দের প্রাধান্য, কাটমানি, ব্যান লিস্ট, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ— সব মিলিয়ে বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ আজ অন্ধকারে।
কী বললেন শতরূপা সান্যাল?
ট্রাইব টিভি বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে টলিউডের প্রখ্যাত পরিচালক শতরূপা সান্যাল জানিয়েছেন, “আমি যখন কাজ করতে শুরু করেছিলাম তখন যে পরিবেশ ছিল, আজ সেই পরিবেশ অনেকটাই বদলে গেছে। কাজ না পাওয়ার যে অদ্ভুত মনোপলি তৈরি হয়েছে, এটা অস্বাস্থ্যকর। একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু বাকিরা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না।”
কাজ মৌলিক অধিকার নয় টলিউডে
শতরূপা সান্যাল-এর কথায়, “যেখানে সংবিধান আমার কাজের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে, টলিগঞ্জ সেখানে সেই স্বীকৃতি দিচ্ছে না। কাজের অধিকারটা এখানে মৌলিক স্বীকৃতি নয়। তোমার কার্ড আছে কিনা সেটাই মৌলিক স্বীকৃতি। বিশেষ কোনো শিবিরের হলে তারা একটু সুযোগ সুবিধা পাবেন। কিন্তু ওই শিবিরের না হলে তারা পাত্তা পাবেন না।”
আরও পড়ুন: Subhabrata Chatterjee on Tollywood: টলিউডে দমবন্ধকর পরিস্থিতি! সরব পরিচালক শুভব্রত চ্যাটার্জী
পরিচালকদের কাজে হস্তক্ষেপ
শতরূপা সান্যাল-এর অভিযোগ, “পরিচালকদের কাজের ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এখানে পেশি শক্তি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার এই অসভ্যতাগুলো অনেকদিন ধরে চলে আসছে।টেকনিশিয়ানদের ক্ষেত্রে এমন কিছু নিয়ম কানুন করা হয়েছে যেগুলো গাজোয়ারি। কেউ আইনের ধার ধারে না এখানে, গায়ের জোরটাই শেষ কথা।” শতরূপা সান্যাল-এর আক্ষেপ,
“আমি সিনেমার এই অপমান দিনের পর দিন দেখতে পারছি না। তোমার ঘরে কাজ করতে গেলে তোমার মতন করেই আমায় কাজ করতে হবে। সেই জন্য আর কোনদিন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক তৈরী হবে না।”