ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ (SSC 2016 Panel Cancel) প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি চলে গেল। দেশের শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রেখেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ প্রার্থীকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ফলে গোটা প্রক্রিয়াটিই বাতিল করা হয়েছে। আর সেই সঙ্গে বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। কিন্তু কাদেরকে দিতে হবে বেতন ফেরত?
‘অযোগ্য’ বা ‘দাগী’ প্রার্থী হিসাবে চিহ্নিত (SSC 2016 Panel Cancel)
সংবিধানের ১৪ ও ১৬ নম্বর ধারার পরিপন্থী হওয়ায় পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই অবৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, যাঁরা ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগী’ প্রার্থী হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন, তাঁদের কেবল চাকরি নয়, এতদিনের পাওয়া বেতনও ফেরত দিতে হবে (SSC 2016 Panel Cancel)। এই ধরণের প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় সাত হাজার বলে জানা গিয়েছে। যাঁদের সরাসরি ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি, তাঁদের চাকরি গেলেও বেতন ফেরত দিতে হবে না।
‘রায় পরিবর্তনের কোনও কারণ নেই’ (SSC 2016 Panel Cancel)
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২৬ হাজার চাকরি সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেল। হাইকোর্টের রায়ের পর সকলের ধারণা ছিল, সুুপ্রিম কোর্ট হয়তো মানবিকতার কারণে বেতন ফেরতের অর্ডারটা পুর্নবিবেচনা করতে পারে। কিন্তু সেই অর্ডারটাও সুপ্রিম কোর্ট বহাল রেখেছে। বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে।” এ প্রসঙ্গে আদালতের বক্তব্য, ‘‘চিহ্নিত অযোগ্যদের চাকরি বাতিলের যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছে, তাতে নাক গলানোর কোনও কারণ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। তাঁরা যা বেতন পেয়েছেন, তা ফেরত দিতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগ হয়েছে। ফলে এটি প্রতারণা। এই রায় পরিবর্তনের কোনও কারণ নেই।’’
আরও পড়ুন: SSC 2016 Panel Cancel: একই স্কুলের একসাথে চাকরি গেল ৩৬ জন শিক্ষকের, সমস্যায় স্কুল কর্তৃপক্ষ
কারা বেতন ফেরত দেবেন?
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রচুর সাদা খাতা উদ্ধার করেছে সিবিআই। অর্থাৎ, কোনও প্রশ্নের উত্তর না-লিখে সাদা খাতা জমা দিয়েই তাঁরা পাশ করেছেন এবং চাকরি পেয়েছেন। তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এসএসসির নিয়োগের জন্য যে প্যানেল গঠন করা হয়েছিল, চাকরিপ্রাপকদের অনেকের নামই ছিল না সেই প্যানেলে। অর্থাৎ, প্যানেলের বাইরে থেকে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। তাঁদেরও ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, এসএসসির নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেউ কেউ তার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন। তাঁরাও আদালতের চোখে ‘অযোগ্য’ হিসাবে চিহ্নিত। মূলত এই তিন ধরনের চাকরিপ্রাপক ‘চিহ্নিত অযোগ্য’। তাঁদের চাকরি তো বাতিল হলই, সেই সঙ্গে বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।
বেতন ফেরত দেবেন না কারা?
নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যে কারচুপি হয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু উদ্ধার করা যায়নি উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট। তার ফলে অধিকাংশ ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ প্রার্থীকে চিহ্নিতই করা যায়নি। যে কারণে সম্পূর্ণ নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করতে হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, যাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে তাঁদের চাকরি বাতিল হবে।