ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রতিবারের মতো এবারও ১৯ জানুয়ারি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের(Soumitra Chatterjee) জন্মবার্ষিকী পালন করলেন সৌমিত্র কন্যা। বাবার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সৌমিত্র-কন্যা স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছিলেন এবারও। এবং তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আকাদেমি অফ ফাইন আর্টসের মঞ্চে অভিনীত হল তাঁরই লেখা হাসির নাটক চন্দনপুরের চোর। নাটকের নির্দেশক সৌমিত্র কন্যা পৌ্লমী চট্টোপাধ্যায়।
স্মরণে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee)
১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়(Soumitra Chatterjee)। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার মধ্যে ১৪ টিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সিনেমার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন মঞ্চ অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক এবং আবৃত্তিকার। জাতীয় পুরষ্কার, পদ্মভূষণসহ একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের নভেম্বরে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি। কিন্তু তাঁর মতো কিংবদন্তি শিল্পীর মৃত্যু হয় না দর্শকের মননে, যাপনে। তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
‘বাপির জন্মবার্ষিকী অন্যভাবে’ (Soumitra Chatterjee)
১৯ জানুয়ারি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের(Soumitra Chatterjee) জন্মবার্ষিকী একটু অন্যভাবে উদ্যাপন করে থাকেন তাঁর মেয়ে পৌলমী। তাই সৌমিত্রর-ই লেখা ও একসময়ের মঞ্চসফল নাটক ‘চন্দনপুরের চোর’ নাটকটি ফের ওইদিন মঞ্চে হাজির করলেন পৌলমী, তাঁর-ই নির্দেশনায়। প্রধান চরিত্রে দেখা গেল অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তীকে। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এ দুপুর আড়াইটে নাগাদ মঞ্চস্থ হল ‘চন্দনপুরের চোর’(Soumitra Chatterjee)। সেখানে উপস্থিত ছিলেন একাধিক থিয়েটারপ্রেমী ও সৌমিত্রপ্রেমী দর্শক। হল হাসিমুখে থেকে বেরিয়ে নাটক নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁরা।
আরও পড়ুন:Kangana Ranaut New Film: ৫ বছরের ‘ফ্লপ’ ছবির তকমা উধাও, কত আয় ‘এমার্জেন্সি’-র?
কী বলছেন পৌলমী?
পৌলমী চট্টোপাধ্যায় চন্দনপুরের চোর নিয়ে বলেছেন, “ ‘চন্দনপুরের চোর’ নাটকটি বাপির-ই লেখা। জ্যঁ অ্যানুয়ের রচিত ‘আ থিফস কার্নিভ্যাল’ নাটকের ছায়া অবলম্বনে তিনি এই নাটকটি রচনা করেছিলেন। আটের দশকে এই নাটক মঞ্চস্থ হত বিজন থিয়েটারে। খুব জনপ্রিয় হয়েছিল সেই সময়ে। সত্যি কথা বলতে কি, এই নাটকটা প্রথম থেকে মোটেই নির্বাচন করা ছিল না আমাদের। অন্য একটি নাটক বাছাই করে রেখেছিলাম, যা যথেষ্ট গুরুগম্ভীর। কিন্তু শেষমেশ সিদ্ধান্ত হল, ওঁর জন্মদিনে এমন একটি নাটক বাছাই করব যা ওঁর- লেখা এবং যা দেখে দর্শক হাসিখুশি মন নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।”
“এক কথায় বিশ্লেষণ সম্ভব না”
বর্তমান সময়ের বিখ্যাত থিয়েটার অভিনেতা গৌতম হালদার সৌমিত্রবাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে বললেন, “সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে অল্প পরিসরে বলা কঠিন । শেষ হবে না । প্রকৃত অর্থে একজন সম্পূর্ণ মানুষ ছিলেন তিনি । এক কথায় তাঁকে বিশ্লেষণ করা সম্ভব না । আমার দেখা তাঁর প্রথম নাটক ‘নামজীবন’। চমকে উঠেছিলাম দেখে । কী অদ্ভুত, কী অসাধারণ, কী অসামান্য অভিনয় ! বাস্তবের রূপায়ণ করলেন মঞ্চে । “থিয়েটার তো শুধু নয় অসংখ্য সিনেমা, কবিতাপাঠ, লেখালিখি সবই করেছেন এক জীবনে । কাজ করেছেন কবিতার স্বর নিয়ে । সম্পূর্ণ একটি জীবনের অভিজ্ঞতার নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । তপন থিয়েটারে বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় ‘ক্যালিগুলা’ নাটক দেখতে এসেছিলেন তিনি । কাজই তাঁকে সম্মান দিয়েছে । যে সম্মানের তিনি সুযোগ্য মানুষ ।”
আরও পড়ুন:Saif Mediclaim Bill: ছুরিকাহত সইফের অস্ত্রোপচারে খরচ কত? অবাক হবেন আপনি
“দাদু থাকলে কবিতা উপহার”
দাদুর স্মৃতিচারনায় জন্মদিনে নাতনি মেখলা বসু বললেন, “আজ কেবল দাদুকে মনে করার দিন। ওঁর সঙ্গে কাটানো স্মৃতি ফিরে দেখার দিন। দাদু থাকলে আজ ওঁকে নিয়ে কবিতা লিখে উপহার দিতাম। দাদু নিজেও লিখতেন। ওঁর কবিতা পড়ার ভঙ্গিও চমৎকার। নিশ্চয়ই আমার লেখা ও ভাবেই পড়তেন।”