ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পশ্চিম এশিয়ার আকাশে এবার গর্জন তুলতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি যুদ্ধবিমান (South Korean Fighter Jets)। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে এক প্রাথমিক প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তিতে সই করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (UAE)। ‘লেটার অফ ইনটেন্ট’-এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কেএফ-২১ বোরাম কেনার দিকে এক বড় পদক্ষেপ নিল আবু ধাবি ও দুবাইয়ের নেতৃত্বাধীন এই আরব মুলুক।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত (South Korean Fighter Jets)
সাম্প্রতিক এক সফরে দক্ষিণ কোরিয়ার বায়ুসেনার প্রধান জেনারেল লি ইয়ং-সুর সঙ্গে বৈঠক করেন আমিরশাহির বিমান ও প্রতিরক্ষা বিভাগের কমান্ডার মেজর জেনারেল রাশেদ মহম্মদ অল শামসি (South Korean Fighter Jets)। এসময় তারা ‘লেটার অফ ইনটেন্ট’-এ সই করেন, যা ভবিষ্যতের পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তির ভিত্তি স্থাপন করতে পারে। এই চুক্তি অনুযায়ী, আমিরশাহির সামরিক কর্মকর্তারা সিউলের কেএফ-২১ ইউনিট পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন এবং যুদ্ধবিমানটির মহড়াও প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।
কেন কেএফ-২১? (South Korean Fighter Jets)
দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি কেএফ-২১ যুদ্ধবিমানকে ‘৪.৫ প্রজন্মের’ বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে (South Korean Fighter Jets)। এর ককপিটে আধুনিক সেন্সর, অ্যারে রাডার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি রয়েছে, যা ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারে। ইতিমধ্যেই এর ছ’টি প্রোটোটাইপ তৈরি হয়েছে, এবং আগামী বছর দক্ষিণ কোরিয়ার বায়ুসেনায় যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে এই যুদ্ধবিমানটির।

আমিরশাহির প্রেক্ষাপট (South Korean Fighter Jets)
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিমানবাহিনী ফ্রান্সের মিরাজ-২০০০ এবং আমেরিকার এফ-১৬ ব্যবহার করে (South Korean Fighter Jets)। তবে এই যুদ্ধবিমানগুলি পুরনো হয়ে যাওয়ায় আধুনিক বিকল্পের সন্ধানে তারা। আমেরিকার এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আলোচনা চললেও তা নানা কূটনৈতিক জটিলতায় থেমে গেছে। বিশেষত, আমিরশাহির সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা এবং ইজরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি থেকে সরে আসে।
রাফাল এবং কেএফ-২১ (South Korean Fighter Jets)
এফ-৩৫ চুক্তি বাতিল হওয়ার পর, আমিরশাহি তড়িঘড়ি ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ে (South Korean Fighter Jets)। ৮০টি রাফালের জন্য ২০২১ সালে তারা ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে এক বিরাট চুক্তি করে, যা একক বৃহত্তম রাফাল বরাত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতের যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে আরও উন্নত এবং প্রযুক্তিনির্ভর বিকল্প খুঁজছে তারা—যেখানে কেএফ-২১ হয়ে উঠতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া (South Korean Fighter Jets)
বিশ্লেষকদের মতে, কোরিয়া অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (KAI)-এর সঙ্গে UAE-এর এই যোগাযোগ শুধু একটি সামরিক কেনাবেচা নয়, বরং এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় এক নতুন অধ্যায়। এতদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের অস্ত্রের বাজারে আমেরিকা, রাশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর আধিপত্য থাকলেও, কোরিয়ার মতো নতুন শক্তি সেখানে প্রবেশ করতে চাইছ।
প্রতিরক্ষা ঘনিষ্ঠতা (South Korean Fighter Jets)
কেএফ-২১ কেনার সম্ভাবনা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ঘনিষ্ঠতা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন রূপ দিতে চলেছে। যদি এই সমঝোতা পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তিতে পরিণত হয়, তবে দক্ষিণ কোরিয়া প্রথমবারের মতো পশ্চিম এশিয়ার অস্ত্র বাজারে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে। পাশাপাশি, আমেরিকার একচেটিয়া অস্ত্র সরবরাহকারী অবস্থানেও বড় ধাক্কা আসতে পারে। এই নতুন যুগের শুরুতে বিশ্বের নজর এখন কোরিয়া-আমিরশাহি প্রতিরক্ষা সম্পর্কের দিকেই।