ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বছরে ৫টা দিনের অপেক্ষায় থাকে গোটা বাংলা। নতুন ভাবে সেজে ওঠে শহর কলকাতা। বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো মানে শুধু উৎসব নয়, শুরু নতুন কিছুর। মনের মণিকোঠায় ভেসে ওঠে প্রেমের আমেজ। কারও কাছে প্রথম প্রেমের ছাতছানি। আবার কারও পুরনো প্রেমকে ভুলতে না পারার বিষণ্ণতা। এই কটা দিন সমস্ত কিছু ভুলে একটু ভালোভাবে কাটানো। প্রথম প্রেম, চোখের সামান্য ইশারাতেই ভালোলাগা, আড্ডা, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা, কাছের মানুষের ফিরে আসা, আর কতকিছু। সব কিছু মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে। এমন দিনে নিজেকেও নতুনভাবে সাজিয়ে নেওয়ার পালা। ষষ্ঠী থেকে দশমী, কীভাবে সাজবেন?
পুজোর সাজ শুরু হয় গোটা সপ্তাহজুড়ে। সেকেলে এক জামা, এক প্যান্ট পরে দুর্গাপুজো কাটিয়ে দেওয়ার দিন শেষ। বছরভর ওয়েস্টার্নকে সঙ্গী করেই চলে কিন্তু পঞ্চমী থেকে শুধু শাড়িকেই লাইফ মনে করে রমণীরা। বাঙালির পুজোর সাজে শাড়ি নেই! এমন কল্পনা করা সহজ নয়। তবে মাঝেমাঝে ছক ভাঙলেও ক্ষতি নেই। কারও কাছে পঞ্চমী মানে হালকা, কমফর্টেবল কিছু জামা। যা সারাদিন হাঁটাচলার সুবিধা। হ্যাঁ, যাঁর যেমন পোশাক পছন্দ, তাই পরবেন।
ষষ্ঠীর সাজ:
ষষ্ঠীর দিনটা একটু হালকার উপরে কাটাতে পারেন। এদিন হালকা রঙের পোশাক পরাই ভালো। যাতে পুজো শুরুর আমেজ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত পছন্দ সাদা রং। তার বদলে যেকোনও হালকা রংয়ের পোশাক পরতে পারেন। সঙ্গে একেবারেই কম জুয়েলারি। না হলেও চলে।
সপ্তমীর সাজ:
ষষ্ঠীর তুলনায় সপ্তমীর সাজ একটু হেভি হবে। এদিনের জন্য আমার পছন্দের রং নীল বা একটু গোলাপি শেড। তার সঙ্গে ম্যাচিং জুয়েলারি। তবে খুব বেশি হেভি জুয়েলারি না শরীরে না রাখাই ভালো। যদি প্ল্যানিং থাকে সারারাত জেগে প্যান্ডেল হপিংয়ের তাহলে হেভি মেপআপ এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কুর্তি কিংবা সালোয়ারের সঙ্গে হাল্কা কাজল আর ঠোঁটে লিপ্সটিক হলেই, মোটামুটি চলবে সপ্তমীর রাত।
অষ্টমীর সাজ:
অষ্টমীর জন্য সাবেকিয়ানা। লাল-সাদা কম্বিনেশনের শাড়ি সবচেয়ে ভালো। শুনতে ক্লিশে লাগলেও মনে হয়, এটা ছাড়া অষ্টমী জাস্ট ভাবা যায় না। আবার পঞ্জিকা বলছে, অষ্টমীর অঞ্জলির সময় পেরিয়ে যাবে চড়া রোদ ওঠার আগেই। সে কারণে অনেকেই অষ্টমীর সাজ নিয়ে দোটানায়। ঐতিহ্য আর আবেগের কথা মাথায় রেখেই শাড়ি-পাঞ্জাবির বিকল্পের খোঁজ শুরু হয়েছে। অষ্টমীর সাজে সাবেকিয়ানার ছক ভাঙলেও পোশাকে সাদা-লালের ছোঁয়া রাখা যেতে পারে। এই দুটো রং ছাড়া অষ্টমী অসম্পূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। তাই মেয়েদের ক্ষেত্রে অষ্টমীর সাজে শাড়ির বিকল্প হতে পারে লাল রঙের ড্রেপ আনারকলি। সঙ্গে লাল ঘেঁষা দোপাট্টা আর কানে সোনালি ঝুমকা। খোলা চুলে অষ্টমীর সাজ সম্পূর্ণ।
নবমীর সাজ:
নবমী এক্সপেরিমেন্টের দিন। এদিন একটু বোল্ড কালারের দিকে যাওয়া ভালো, যেমন সবুজ, কালো কিংবা গ্রে। অনেকেই নবমীর দিনে ইন্দো-ওয়েস্টার্ন বা ফিউশন প্রেফার করেন। সেটা কিন্তু বেশ ভালো লাগে। একটা মর্ডার্ন আউটলুক পাওয়া যায়। নি-লেংথ ড্রেস অথবা বয়ফ্রেন্ড জিনস-এর সঙ্গে ক্রপ টপেও আপনাকে লাগবে ঝকঝকে। হেয়ারস্টাইল হোক হাই পনিটেলে, পায়ে থাকুক এক জোড়া সাদা স্নিকার্স। সহজ সাজে তাক লাগাতে তৈরি থাকুক ছেলেরাও। ক্লাসিক সাদা শার্ট, সঙ্গে জিনস আর ডেনিম জ্যাকেটে পরিপূর্ণ হোক নবমীর সাজ।
দশমীর সাজ:
দশমীতে আবারও লাল-সাদার যুগলবন্দি বেস্ট। ধুনুচি নাচ, সিঁদুর খেলার জন্য একেবারে আদর্শ। লালের সঙ্গে লাল মিশে গিয়ে একটা দারুণ আবহের সৃষ্টি হয়। সবশেষে একটাই কথা বলব, পোশাক ও সাজ যেমনই হোক না কেন মেয়েরা ব্যাগে কিন্তু একটা টিপের পাতা, লিপস্টিক আর কাজল রাখতে পারেন। আর শাড়ি পরলে সেফটিপিন। যেকোনও সময় প্রয়োজন হতে পারে।