ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রতীক্ষার অবসান। ১৭ ঘণ্টা পর শেষ হলো সারা বিশ্বের প্রহর গুনা। ২৮৬ দিন পর নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস(Sunita Williams)এবং তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর। বুধবার ভোর ৩টে ২৭ মিনিট নাগাদ (ভারতীয় সময়) তাঁদের নিয়ে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মহাকাশযান ফ্লরিডার সমুদ্রে অবতরণ করে।
নিরাপদে সুনীতাদের প্রত্যাবর্তন(Sunita Williams)
মহাকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সুনীতাদের(Sunita Williams) প্রত্যাবর্তন নিরাপদে হয়েছে বলে জানিয়েছে নাসা। তাঁদের সঙ্গে একই মহাকাশযানে ফিরেছেন নাসার নিক হগ এবং রুশ নভশ্চর আলেকজান্ডার গর্বুনভ। গত বছর জুন মাসে সুনীতারা মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে (ভারতীয় সময়) সুনীতাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) ছাড়ে স্পেসএক্সের ড্রাগন যান।

ফ্লরিডা উপকূলে অবতরণ(Sunita Williams)
বুধবার আটলান্টিক মহাসাগরের ফ্লরিডা উপকূলে মহাকাশচারীরা নিরাপদে অবতরণ করেন। তাঁদের আনার জন্য পৌঁছে গিয়েছিল মার্কিন নৌ সেনা বাহিনীর বোট। এর পরে মডিউল-সহ সুনীতাদের জাহাজের কাছে নিয়ে আসে নৌ বাহিনী। মহাকাশচারীদের হাইড্রোলিক পদ্ধতিতে তোলা হয় জাহাজে। সেখানে ড্রাগন ক্যাপসুলের দরজা খোলার পরে প্রথমে বেরিয়ে আসেন নিক হগ। তার প্রায় ৫ মিনিট পরে ভারতীয় সময় ভোর ৪টে ২২ নাগাদ হাসি মুখে বেরিয়ে আসেন সুনীতা উইলিয়ামস(Sunita Williams)। এর পরে জাহাজ পাড়ি দেয় স্থল ভাগের উদ্দেশে। সেখান থেকে গন্তব্য হিউস্টন জনসন স্পেস সেন্টার।

আরও পড়ুন: Sunita Williams : ‘ভারতকন্যা’ সুনীতাকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ মোদীর, লিখলেন বিশেষ চিঠি
অনুকূল ছিল আবহাওয়া
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, এদিন অবতরণের সময় আবহাওয়া অত্যন্ত অনুকূল ছিল, ফলে কোনও অসুবিধাই হয়নি। আকাশ ছিল পরিষ্কার, দৃশ্যমানতার ক্ষেত্রেও কোনও বাধা ছিল না। ফলে নির্বিঘ্নে অবতরণ করে মহাকাশযান। ড্রাগনের গতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চারটি প্যারাসুট জুড়ে যায়। জলে অবতরণ করার পর সেগুলি খুলে যেতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: Fact Check: ধর্ষণের ১৫ মিনিটের মধ্যে দুবাইতে দোষীকে গুলি করে হত্যা!
সুনীতাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা
পৃথিবীতে ফিরে এলেও এখনই নিজেদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না মহাকাশচারীরা। তাঁদের রাখা হবে ক্রু- কোয়ার্টারে। সেখানেই বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলবে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সুনীতাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। প্রতি দিন দু’ঘণ্টা করে করে চলবে বিভিন্ন শারীরিক কসরত। দীর্ঘ ৪৫ দিনের এই কর্মসূচিকে ভাগ করা হয়েছে কয়েকটি ভাগে। প্রথম ধাপে, শরীরে অ্যাম্বুলেশন, নমনীয়তা এবং পেশিশক্তি পুনরুদ্ধারের উপর জোর দেওয়া হয়। পরের ধাপে, কিছু বিশেষ ব্যায়াম করতে দেওয়া হবে সুনীতাদের। তবে তৃতীয় পর্যায়টি দীর্ঘস্থায়ী এবং গুরুত্বপূর্ণ। এই ধাপে বিশেষজ্ঞেরা নজর রাখবেন সুনীতাদের শারীরিক বিকাশের দিকে।
পরীক্ষার ফল প্রতি মুহুর্তে লিপিবদ্ধ করা হবে। তার ভিত্তিতেই পরিবর্তন করা হবে চিকিৎসা পদ্ধতি। একই সঙ্গে সুনীতাদের মন ভাল রাখার জন্য তাঁদের পছন্দের বিনোদনমূলক কার্যকলাপের উপরও জোর দেওয়া হবে। যত দিন পর্যন্ত না স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতা অর্জন করবেন তত দিন পর্যবেক্ষণে থাকবেন সুনীতারা। তার পরে সুনীতা ও বুচের সঙ্গে দেখা করার সম্মতি মিলবে তাঁদের পরিবারের।