ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ ৯ মাস পর পৃথিবীতে ফিরেছেন সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী নভোচারী বুচ উইলমোর। কিন্তু পৃথিবীতে ফিরে আসলেও এখনই বাড়ি ফেরা হবে না সুনীতার (Sunita Williams)। কারণ, দীর্ঘ ৯ মাস মহাকাশে থাকার কারণে সুনীতাদের শারীরিক অবস্থা মোটেই স্বাভাবিক নেই। তবে তাঁরা দুজনেই এখন সুস্থ রয়েছেন। স্পেসএক্সের ক্যাপসুল থেকে সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী মহাকাশচারী বুচ উইলমোর হাসি মুখে বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, তারপরেও কেন তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন না? কী এমন শারীরিক সমস্যা রয়েছে এই দুই নভোচারীর?
কেমন আছেন সুনীতারা? (Sunita Williams)
দু’জনেরই আগের তুলনায় মাথা ফুলেছে, পা গুলোও বেশ খানিকটা সরু হয়ে গেছে। তাঁরা বাইরে থেকে সুস্থ থাকলেও দুজনেরই শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক নেই (Sunita Williams)। শরীরের বিভিন্ন অংশে স্বাস্থ্যের অবক্ষয় তৈরি হয়েছে। এজন্য সুনীতা ও তাঁর সঙ্গী নভোচারী বুচ উইলমোরকে আরও বেশ কিছুদিন কাটাতে হবে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিশেষ বিশ্রামাগারে। সেখানেই তাঁদের স্বাস্থ্যের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চলবে।
সুনীতারা ৪৫ দিন থাকবেন পর্যবেক্ষণে (Sunita Williams)
মহাকাশে পৃথিবীর মতো কোনো মাধ্যাকর্ষণ নেই (Sunita Williams)। এজন্য সেখানে দীর্ঘ সময় মহাকাশে কাটালে শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। মহাকাশে দীর্ঘ ৯ মাস কাটানোর ফলে সুনিতা উইলিয়াম ও তাঁর সঙ্গী মহাকাশচারী বুচ উইলমোর দুজনেই মহাকাশের মাধ্যাকর্ষণ বিহীন পরিবেশে মানিয়ে নিতে শুরু করে ছিলেন। কিন্তু, তাঁরা আবার পৃথিবীতে ফিরে আসার পরে তাঁদের শরীরের উপর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব পরতে শুরু করেছে। ফলে তাঁদের আবারও মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবের সাথে মানিয়ে নিতে অনেক সময় লাগবে। সেই প্রক্রিয়ার জন্য তাঁদের দুজনকেই অন্তত ৪৫ দিন কাটাতে হবে নাসার বিশেষ ক্রু কোয়াটারে। সেখানে তাঁদের শারীরিক অবস্থার উপর বিশেষ নজর রাখা হবে। একই সাথে চলবে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
আরও পড়ুন: Holberg Prize: হোলবার্গ পুরস্কারে সম্মানিত হলেন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক
কী কী সমস্যা হতে পারে সুনীতাদের?
মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকলে নভোচারীদের শরীরে বিভিন্ন প্রভাব পরতে পারে ও স্বাস্থ্যের অবক্ষয় ঘটতে পারে। সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি দেখা যায় সেটি হল, হাড় এবং পেশির ক্ষয়, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা। এমনকি সহনশীলতার অভাব, ভারসাম্য বজায় রাখা-সহ নানা ধরনের সমস্যায় ভুগতে হতে পারে সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী নভোচারীর। এজন্য তাঁদের দুজনকেই সরাসরি বাড়িতে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না, তার বদলে নাসার বিশ্রামাগারে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। এতদিন মহাকাশে থাকার কারণে তাঁদের শরীরে যে পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণ করাবেন বিশেষজ্ঞরা। সুনীতাদের শরীরকে আবারও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা বেশ বড় চ্যালেঞ্জ নাসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছেও।

কী কী চিকিৎসা হবে সুনীতাদের?
৯মাস মহাকাশে কাটিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসা দুই নভোচারীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করেছে নাসা। প্রতি দিন দু’ঘণ্টা করে শারীরিক কসরত করতে হবে তাঁদের। তাঁদের এই দীর্ঘ ৪৫ দিনের ঘাটতি পূরণ কর্মসূচিকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে শরীরে অ্যাম্বুলেশন, নমনীয়তা এবং পেশিশক্তি পুনরুদ্ধারের উপর জোর দেওয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে কিছু বিশেষ ব্যায়াম করতে দেওয়া হবে। তৃতীয় পর্যায়ে,সুনীতাদের শারীরিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া হবে। শারীরিক পরীক্ষার ফল প্রতি মুহূর্তে লিপিবদ্ধ করা হবে। তার ভিত্তিতেই পরিবর্তন করা হবে চিকিৎসা পদ্ধতি।পাশাপাশি দুই নভোচারীর সুনীতাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে আবারও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁদের পছন্দের বিনোদনমূলক কার্যকলাপের উপরও জোর দেওয়া হবে। যত দিন পর্যন্ত না স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতা অর্জন করবেন তত দিন পর্যবেক্ষণে থাকবেন সুনীতারা।