ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২৬/১১ মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানাকে (Tahawwur Hussain Rana) বৃহস্পতিবারই আমেরিকা থেকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে। দিল্লির পালম বিমানবন্দরে নামার পর তাঁকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তাহাউর রানার আপাতত বর্তমান ঠিকানা এনআইএ-র সদর দফতরের নীচতলার ১৯৬ বর্গফুটের সেল। এনআইএ সদর দফতরের একতলার সংশ্লিষ্ট সেলে কেবলমাত্র একটি কলমই দেওয়া হয়েছে রানাকে এবং সেটাও ‘সফট টিপ’ কলম। কোনও ভাবে রানা যাতে নিজের ক্ষতি করতে না পারেন, সে জন্য ২৪ ঘণ্টার জন্য সিসিটিভি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
সদা সতর্ক গোয়েন্দারা (Tahawwur Hussain Rana)
রানাকে (Tahawwur Hussain Rana) গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। রাতেই রানাকে এনআইএ-র বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেখানে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থাটি। ২০ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয়। তবে ১৮ দিনের জন্য তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছিল। তাঁকে রাখা হয়েছে ১৪/১৪ ফুটের একটি সেলে। রাখা হয়েছে ‘সুইসাইড ওয়াচে।’ ৬৪ বছরের রানা যাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে না পারেন, সে জন্য সদা সতর্ক গোয়েন্দারা। জানা গেছে তাই এই বাড়তি সতর্কতা।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে (Tahawwur Hussain Rana)
তার আগে আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন রানা (Tahawwur Hussain Rana)। তাঁকে ভারতে ফেরানো এবং বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় আনার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে এনআইএ। এখন ১৮ দিনের জন্য রানার ঠিকানা এনআইএ-র সদর দফতরের নীচতলার একটি বিশেষ কক্ষ। এনআইএ-র একটি সূত্রে খবর, মুম্বই হামলার মূল চক্রী রানার কাছ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাক বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান রানাকে নিয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করে একটি বিশেষ বিমান।
আরও পড়ুন: Tahawwur Rana : ২৬/১১ মামলায় তাহাউর রানা জেরায় গোপন সাক্ষী এনআইএ-র তুরুপের তাস?
সর্বক্ষণের নজরদারিতে রাখা হয়েছে
সূত্রের খবর, পুরো সেলটি সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সিসিটিভির মাধ্যমে সর্ব ক্ষণের জন্য নজরদারিতে রাখা হয়েছে রানাকে। প্রতি ৪৮ ঘণ্টা অন্তর তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। রানাকে জেরার জন্য ১২ জনের একটি দল গঠন করেছে এনআইএ। একমাত্র ওই দলের সদস্যদেরই রানার সেলে ঢোকার অনুমতি রয়েছে। পাহারা দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা ওই সেলের সামনে এক জন নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই সেলে শোওয়ার জন্য একটি বিছানা দেওয়া হয়েছে। রয়েছে একটি শৌচাগারও।
তদন্তে সহায়ক ‘সংরক্ষিত’ সাক্ষী
জানা যাচ্ছে রানাকে নিয়ে তদন্তে সহায়ক হতে চলেছেন এক ‘সংরক্ষিত’ সাক্ষী, যিনি এনআইএ-র কাছে অন্যতম মূল্যবান সূত্র বলে ধরা হচ্ছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই সাক্ষী রানার ছেলেবেলার বন্ধুর সঙ্গে যুক্ত, এবং তাঁর ডেভিড হেডলির সঙ্গেও যোগ রয়েছে। ২০০৬ সালে হেডলি মুম্বই সফরে এলে, তিনিই তাঁকে স্বাগত জানান এবং থাকার ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয়, হেডলিকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদানও করেছিলেন এই ব্যক্তি। রানা ও হেডলি মিলে ২৬/১১ হামলার ছক কষেছিলেন এবং একাধিক দফায় মুম্বই শহর সম্বন্ধে গুপ্তচরবৃত্তি করেন। সেই পরিকল্পনায় সহায়তা করার পিছনে এই সংরক্ষিত সাক্ষীর ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।