ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: টানা জেরার মুখে অবশেষে ভাঙল ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী তাহাউর রানার ‘দরজার আগল’(Tahawwur Rana)। এনআইএ’র জিজ্ঞাসাবাদে তাহাউর স্বীকার করে নিয়েছে, সে পাক সেনার সক্রিয় এজেন্ট। কীভাবে ২৬/১১ সন্ত্রাসের নীল নকশা রচিত হয়েছিল সে তথ্যও প্রকাশ্যে এনেছে মুম্বই হামলার মূল ষড়যন্ত্রী। তাহাউরের স্বীকারোক্তি তদন্তকারীদের জন্য বড় সাফল্য তো বটেই, মনে করা হচ্ছে তার থেকে পাওয়া তথ্যে পাকিস্তানের চাপ আরও বাড়তে চলেছে।
তাহাউর রানার স্বীকারোক্তি (Tahawwur Rana)
তাহাউর রানা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিল(Tahawwur Rana)। কিন্তু ভারতের অনুরোধে তাকে ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল প্রত্যর্পণ করা হয়। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আপিল খারিজ করে দিলে সব বাধা কেটে যায়। ভারতে পৌঁছনোর পর থেকেই তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এনআইএ এবং মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।ইন্ডিয়া টুডের দাবি, তদন্তকারীদের জেরাতেই রানা জানিয়েছে, সে কেবল পাকিস্তানের একমাত্র কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যুক্ত ছিল না, বরং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সরাসরি নির্দেশেই কাজ করত। সে দাবি করে, তাঁকে গালফ যুদ্ধের সময় সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিল পাকিস্তানের হয়ে কাজ করার জন্য।

গুপ্তচর নেটওয়ার্ক (Tahawwur Rana)
তাহাউর রানা বলেছে, লস্কর-ই-তৈবা প্রথমে একটি গুপ্তচর সংস্থা হিসেবেই গড়ে ওঠে(Tahawwur Rana)। পরবর্তীতে তা সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। তাঁর দাবি, লস্করের বহু সদস্যকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিক সহায়তা দিয়েছে। রানা জানায়, তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং কুখ্যাত জঙ্গি ডেভিড হেডলি একাধিকবার লস্করের হয়ে সন্ত্রাসবাদ প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছিল।রানা বলেছে, হামলার আগে হেডলিকে ভারতীয় ভিসা পেতে সাহায্য করে জাল নথিপত্র বানিয়ে, যাতে সে নিরাপদে মুম্বইয়ে ঢুকে হামলার টার্গেট জায়গাগুলির রেকি করতে পারে। এসব কাজই ছিল পাকিস্তানের সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিকল্পনার অংশ।
আরও পড়ুন-Oxford University Graduate: চাকরি নেই! ফুড ডেলিভারির কাজ করছেন অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী
হামলার সময়ে মুম্বইয়ে তাহাউর রানা (Tahawwur Rana)
সবচেয়ে বিস্ফোরক তথ্য হল তাহাউর রানা দাবি করেছে, ২৬ নভেম্বর ২০০৮, যেদিন জঙ্গিরা তাজ হোটেল-সহ একাধিক জায়গায় হামলা চালায়, সেদিন সে মুম্বই শহরেই ছিল(Tahawwur Rana)। শুধু তাই নয়, হামলা শুরুর আগেই সে শহরের একাধিক জায়গায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে। যদিও ঠিক কোথায় ছিল, সে তথ্য রানা তদন্তকারীদের জানায়নি।তবে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ মনে করছে, তাঁর অবস্থান শহরের জুহু বা চেম্বুর এলাকার আশেপাশে ছিল। গোয়েন্দারা আরও খতিয়ে দেখছেন, হামলার সময় তাঁর মোবাইল ফোন, পাসপোর্ট বা অন্যান্য চিহ্ন, যা তাঁর অবস্থান প্রমাণ করতে পারে।

আরও পড়ুন-Bengaluru: দর্শনকাণ্ড থেকে অনুপ্রেরণা! প্রাক্তন প্রেমিকাকে অশ্লীল মেসেজ, যুবককে অপহরণ করে মারধর
আইনি প্রক্রিয়া (Tahawwur Rana)
গত মাসে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট তাহাউর রানাকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে একবার ফোনে কথা বলার অনুমতি দিয়েছিল(Tahawwur Rana)। এনআইএ জানিয়েছে, মানবিক কারণে একবার ফোনকলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ৯ জুলাই পর্যন্ত বিচারিক হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।অন্যদিকে, এই স্বীকারোক্তির পর ভারতের হাতে এমন একটি প্রমাণ উঠে এল, যা শুধু রানার বিরুদ্ধে নয়, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মদতের সন্ত্রাসের অভিযোগকে আরও জোরালো করে তুলবে। ২৬/১১-র তদন্তে এর আগেও পাকিস্তান সেনা ও আইএসআই-এর সম্পৃক্ততার আভাস মিলেছিল, এবার তা স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে রানার নিজের মুখে।
