ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শশী থারুর স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি অপারেশন সিঁদুরের সমর্থনে কথা বলবেন (Tharoor Snubbed Congress On Op Sindoor Debate), যেমনটি তিনি আগেও বলেছেন, এবং দলীয় বার্তার জন্য নিজের বিরোধিতা করতে পারবেন না।
কংগ্রেসের বার্তা উপেক্ষা করলেন থারুর (Tharoor Snubbed Congress On Op Sindoor Debate)
কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝেই পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ও অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে চলমান বিতর্কে পার্টির নির্ধারিত অবস্থান মানতে অস্বীকার করলেন শশী থারুর (Tharoor Snubbed Congress On Op Sindoor Debate)। সোমবার সকালে এই খবর জানা যায়। থারুর বলেন, পার্টির বার্তা বজায় রাখার জন্য তিনি নিজের বক্তব্য বদলাবেন না।
থারুরকে আক্রমণের মুখ হতে বলেছিল কংগ্রেস (Tharoor Snubbed Congress On Op Sindoor Debate)
কংগ্রেস এবং বিরোধী জোটের পক্ষে বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদে ১৬ ঘণ্টার উচ্চ পর্যায়ের বিতর্কে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য থারুরকে অনুরোধ করা হয়েছিল (Tharoor Snubbed Congress On Op Sindoor Debate)। এই বিতর্ক পহেলগাঁও হামলা, অপারেশন সিঁদুর ও পাকিস্তানের সঙ্গে প্রায় ১০০ ঘণ্টার সংঘর্ষ নিয়ে। সূত্রের দাবি, এই অনুরোধ এসেছিল রাহুল গান্ধীর দফতর থেকে। কিন্তু থারুর সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
মোদীর প্রশংসার পর থেকেই টানাপোড়েন (Tharoor Snubbed Congress On Op Sindoor Debate)
থারুর সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলা এবং ভারতের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী অবস্থান নিয়ে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকায় গিয়েছিলেন এবং সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেন। সেই থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সোমবার সেই দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়, যখন থারুর স্পষ্ট করে দেন যে তিনি অপারেশন সিঁদুরের পক্ষে কথা বলতেই পারেন, তবে নিজের আগের অবস্থান খণ্ডন করে দলীয় লাইনে কথা বলতে পারবেন না। এরপর কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিতর্কে থারুর বক্তব্য রাখবেন না। এই বিতর্কে কংগ্রেসের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, তাঁর সহকারী গৌরব গগৈ এবং ওয়েনাড়ের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা।
থারুর এড়িয়ে গেলেন, উত্তর দিলেন রেনুকা
থারুর এই বিষয়ে উত্তর না দিয়ে চলে যান। তখন দলের নেত্রী রেনুকা চৌধুরী তাঁর হয়ে বলেন, ‘‘…ওনার সাংবিধানিক অধিকার আছে, তিনি যেকোনও জায়গায় নিজের মত প্রকাশ করতে পারেন।’’
সংসদে বিতর্কের পটভূমি
বিরোধীদের চাপের মুখে সোমবার দুপুরে লোকসভায় এই ১৬ ঘণ্টার বিতর্ক সূচি করা হয়। যদিও হাউসে বিশৃঙ্খলার কারণে তা মুলতুবি হয়ে যায়। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরাসরি সংসদে বক্তব্য রাখার দাবিও জানায়। মোদী সোমবার লোকসভা এবং মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখবেন।
থারুরের অবস্থান কংগ্রেসের সংকটের ইঙ্গিত
থারুর অপারেশন সিঁদুরের বিরুদ্ধে কথা বলতে না চাওয়া কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সংকটকে সামনে এনেছে। ২০২১ সালে ‘জি-২৩’ নামে পরিচিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই থারুরের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক অনিশ্চিত। গান্ধী পরিবারকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। গত কয়েক মাসে এই দূরত্ব আরও বেড়েছে, বিশেষত মোদী এবং বিজেপি সম্পর্কে থারুরের ইতিবাচক মন্তব্যের পর, বিশেষ করে যখন তাঁকে বিরোধী দলের হাতে গোনা কয়েকজন সাংসদের একজন হিসেবে বিদেশি ‘পার্টনার নেশন’-দের সামনে ভারত সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পাঠানো হয়।
থারুরের বক্তব্য ও গুজবের জবাব
থারুর স্বীকার করেছেন, দলের সঙ্গে মতপার্থক্য আছে। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছিলেন, কিন্তু তার ফল মেলেনি। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে গত মাসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটি কেবল ‘কিছু নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্য’। কংগ্রেসের প্রতি তাঁর আনুগত্যের কথাও বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে আমি এই দলের সঙ্গে ছিলাম এবং তার মতাদর্শকেই মেনে চলেছি।” তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। মোদীর “গতি এবং নেতৃত্ব” নিয়ে মন্তব্য করার পর জল্পনা ছড়ালেও থারুর বলেন, “এটি মোটেই মোদীর দলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত নয়, যেমন অনেকেই ভাবছেন।”