ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ড (Trump on Greenland) কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের পরিকল্পনা করছেন। একইসঙ্গে তিনি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন এবং পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করার হুমকিও দিয়েছেন।
কত হতে পারে খরচ? (Trump on Greenland)
ডেনমার্কের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কেনার (Trump on Greenland) জন্য প্রাথমিক খরচ হতে পারে ১২.৫ বিলিয়ন থেকে ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। নিউইয়র্ক ফেডের প্রাক্তন অর্থনীতিবিদ ও রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার ডেভিড বার্কারের মতে, ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস এবং আলাস্কার দামের ভিত্তিতে এই হিসাব করা হয়েছে, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে।
নতুন নয় পরিকল্পনা (Trump on Greenland)
তবে গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের পরিকল্পনা একেবারে নতুন নয় (Trump on Greenland)। কয়েক দশক আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ডেনমার্ক-এর কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল, যা ১৯৯০-এর দশকে প্রকাশ্যে আসে। এমনকি যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড কিনতে না পারে, তবুও তারা বিভিন্ন উপায়ে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
গ্রিনল্যান্ড কেনার কারণ কী? (Trump on Greenland)
গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ রেয়ার আর্থ উপাদানগুলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নজর কেড়েছে। এই উপাদানগুলো মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে চীন এই বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছে। তাই গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: Pakistan Gold Mine: পাকিস্তানের স্বর্ণভাণ্ডারের উপর নজর আরবের, লগ্নি কবে?
কী বলেছেন ট্রাম্প?
ট্রাম্প বলেছেন, জাতীয় প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তিনি গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ করতে চান। এর মাধ্যমে রাশিয়া ও চীনের আর্কটিক অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মোকাবিলা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ করে দেবে।
গ্রিনল্যান্ড পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ, যা কোনো মহাদেশ নয় এবং আর্কটিক অঞ্চলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গ্রিনল্যান্ডে একটি বড় আমেরিকান মহাকাশ কেন্দ্রও রয়েছে। ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রথম গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: Gaza Ceasefire: সাফল্যের পথে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দীমুক্তি নিয়ে আলোচনা
২০১৯ সালে ব্যর্থ চেষ্টা
২০১৯ সালে ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব তখন কৌতুক হিসেবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বর্তমানে গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা ডেনমার্ক-এর হাত থেকে স্বাধীনতার দাবি জোরালো করছেন। তিন মাসের মধ্যে তারা সাধারণ নির্বাচন করবে, যা ডেনমার্কের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উপর আলোকপাত করবে।
বর্তমান ক্ষমতা
ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও তাদের সামরিক সক্ষমতা সীমিত। রাশিয়া ও চীনের ক্রমবর্ধমান হস্তক্ষেপের প্রেক্ষিতে গ্রিনল্যান্ডে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে তারা ধীরগতি দেখিয়েছে। বর্তমানে ডেনমার্কের সামরিক সরঞ্জামে রয়েছে চারটি পুরনো জাহাজ, একটি চ্যালেঞ্জার নজরদারি বিমান এবং বারোটি কুকুর টহল দল। ফাইনান্সিয়াল টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের সম্পদের মূল্য প্রায় ১.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।