ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার ব্যবহৃত ড্রোনে ভারতীয় প্রযুক্তির উপস্থিতি নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে(Russian Drone)। ইউক্রেনের অভিযোগ, ইরানি নকশায় তৈরি রুশ সেনার ড্রোনে ভারতের দুটি সংস্থার তৈরি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার স্পষ্ট অভিযোগ তুলেছে—রাশিয়ার ব্যবহৃত ‘শাহিদ-১৩৬’ ড্রোনের কিছু মূল উপাদান ভারতীয় কোম্পানির তৈরি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনের দাবি, বিষয়টি নিয়ে তারা নয়াদিল্লি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-কে ইতিমধ্যেই অবহিত করেছে।
কোন যন্ত্রাংশ কোথা থেকে? (Russian Drone)
পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউক্রেন সেনার(Russian Drone) একটি তদন্তে দেখা গেছে,
- ‘শাহিদ-১৩৬’ ড্রোনের ভোল্টেজ রেগুলেটর ইউনিটে ব্যবহার হয়েছে ‘ইন্টারটেকনোলজি’-র তৈরি ‘ব্রিজ রেক্টিফায়ার ই৩০০৩৫৯’।
- স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত দিকনির্দেশক ব্যবস্থায় (নেভিগেশন সিস্টেম) রয়েছে ‘অরা সেমিকন্ডাক্টর’-এর তৈরি ‘সিগন্যাল জেনারেটর এইউ৫৪২৬এ চিপ’।
এই দুটি সংস্থাই ভারতের বলে দাবি করছে ইউক্রেন। যদিও তারা এও স্বীকার করছে যে, উপাদানগুলো হয়তো সরাসরি রাশিয়ায় রপ্তানি করা হয়নি, বরং তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সেখানে পৌঁছেছে।
ইরানের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন (Russian Drone)
কিভের অভিযোগ, রাশিয়ার এই ড্রোনগুলি মূলত ইরানি নকশায় তৈরি। অর্থাৎ, তেহরানের প্রযুক্তি ও উপাদান ব্যবহার করে মস্কো এই ড্রোন বানাচ্ছে। ইউক্রেনের বক্তব্য—“রাশিয়া এবং ইরানের এই যৌথ প্রচেষ্টা কেবল ইউক্রেন নয়, গোটা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”
ভারতের উপর বাড়তে পারে আন্তর্জাতিক চাপ (Russian Drone)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) আগেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন। এবার ইউক্রেনের এই অভিযোগ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের উপর নতুন করে চাপ তৈরি করতে পারে। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই বলেছিলেন—“ভারত কেবল রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে না, বরং সেই অর্থে রাশিয়ার যুদ্ধকে অর্থায়ন করছে।”
এই প্রেক্ষাপটে নতুন অভিযোগ ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে জটিল করে তুলতে পারে।

আরও পড়ুন: Bangladesh Election : বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, ঘোষণা করলেন ইউনূস!
নয়াদিল্লির অবস্থান কী? (Russian Drone)
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি(Russian Drone)। তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, যদি যন্ত্রাংশ রাশিয়ায় পৌঁছেও থাকে, তা সম্ভবত তৃতীয় দেশের মাধ্যমে অননুমোদিত রপ্তানির ফল।
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনায় নয়াদিল্লিকে প্রমাণ করতে হবে যে সরকারি অনুমোদন ছাড়া রাশিয়ায় কোনও প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত পণ্য রপ্তানি করা হয়নি।

আরও পড়ুন: India US Tariff War : ইউরেনিয়াম আমদানির প্রশ্নে চুপ ট্রাম্প, তেল নিয়ে আবারও শুল্কের হুঁশিয়ারি
পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট কী বলছে? (Russian Drone)
ইউক্রেন সেনার রিপোর্ট উদ্ধৃত করে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে—২০২৩ সালেই এই যন্ত্রাংশগুলির উপস্থিতি ধরা পড়ে। জেলেনস্কির সরকার এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। এই নতুন বিতর্ক শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কূটনৈতিক চাপই বাড়াচ্ছে না, ভারতের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।