ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চিন-আমেরিকা বাণিজ্যযুদ্ধ যখন তুঙ্গে, তখন ওয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটের (Karoline Leavitt) পোশাক ঘিরে নতুন বিতর্কে উত্তাল কূটনৈতিক মহল(US China Tariff War)। ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ঝাং ঝিশেং সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেভিটের একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে তাঁর পরনে ছিল একটি লাল রঙের পোশাক। অভিযোগ উঠেছে, পোশাকটির গলা ও বুক পকেটের কালো লেইস চিনের একটি কারখানায় তৈরি।
ঝাং ঝিশেং-এর পোস্ট (US China Tariff War)
ঝাং ঝিশেং-এর সেই পোস্ট সামনে আসার পরেই শুরু হয় জোরদার বিতর্ক (US China Tariff War)। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন— যখন প্রেস সচিব খোলাখুলি চিনা পণ্যের সমালোচনা করছেন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump) তাঁর নেতৃত্বে চিনের বিরুদ্ধে একের পর এক অর্থনৈতিক শাস্তি জারি করছেন, তখন তাঁর নিজের পোশাক কীভাবে চিনে তৈরি হলো?
চিনা মাবুজ়েন পোশাক কারখানা (US China Tariff War)
বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে মাবুজ়েন নামের একটি চিনা পোশাক কারখানা, যা আন্তর্জাতিক বাজারে লেইস এবং ডিজাইনার অ্যাপারেলের জন্য পরিচিত (US China Tariff War)। যদিও এখনও পর্যন্ত লেভিট বা ওয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পোশাকটি সত্যিই চিনে তৈরি কি না, তা নিয়েও কোনও নিশ্চিত বক্তব্য আসেনি মার্কিন প্রশাসনের তরফে।
আমদানি শুল্ক (US China Tariff War)
তবে এই ঘটনা রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চিনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। আমেরিকায় চিনা পণ্যের উপর ১৪৫% পর্যন্ত আমদানি শুল্ক বসানো হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, চিন আমেরিকার বাজারে ‘অন্যায্য প্রভাব’ বিস্তার করছে এবং মার্কিন শিল্পক্ষেত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

আরও পড়ুন: Balochistan Blast : বালোচিস্তানে ফের রক্তাক্ত হামলা! বোমা বিস্ফোরণে মৃত ৩ পুলিশকর্মী, আহত অন্তত ১৬
পাল্টা পদক্ষেপ চিনের (US China Tariff War)
এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চিনও আমেরিকান পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ১২৫% পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। বেজিংয়ের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়, তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত। অর্থাৎ দু’পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ এখন কেবল অর্থনৈতিক নয়, তা হয়ে উঠেছে প্রতীকী শক্তি প্রদর্শনের লড়াই।

আরও পড়ুন: US Iran Nuclear Talks : পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে পিছু না হটলে সামরিক পদক্ষেপ, হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের!
পোশাক বিতর্ক (US China Tariff War)
ঠিক এই পরিপ্রেক্ষিতেই ক্যারোলিন লেভিটের চিনা পোশাক বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে— “চিনকে বর্জন করুন” বললেও, বাস্তবে কি তা সম্ভব? বিশেষ করে যখন চিন বিশ্বের অন্যতম প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র এবং আমেরিকান জীবনযাত্রার সঙ্গে অগণিত চিনা পণ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে।
শিবিরে মতভেদ (US China Tariff War)
বিষয়টিকে ঘিরে দুই শিবিরে মতভেদও স্পষ্ট। কেউ বলছেন, এটা নিছকই একটি পোশাক— এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। আবার অনেকে মনে করছেন, সরকারি প্রতিনিধিদের প্রতীকী আচরণেও দায়িত্ববোধ থাকা উচিত, বিশেষ করে যখন তারা অন্য দেশকে বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছেন।এখন দেখার, ওয়াইট হাউস এই বিতর্কে কী অবস্থান নেয় এবং লেভিট নিজে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন কি না। তবে এতটুকু নিশ্চিত— চিন-আমেরিকা উত্তেজনার আবহে এই ঘটনাও হয়ে উঠেছে আরও একটি জ্বালানি, যা এই দুই সুপারপাওয়ারের দ্বন্দ্বকে আরও উসকে দিতে পারে।