ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওয়াশিংটনে চলমান কূটনৈতিক আলোচনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত, সংখ্যালঘু নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কড়া অবস্থান নিলেন মার্কিন কংগ্রেসের প্রবীণ সদস্য ব্র্যাড শেরম্যান (US On Terrorism in Pakistan)। জইশ-ই-মহম্মদের মতো সংগঠনকে নির্মূল করতে পাকিস্তানকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সে দেশের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি, পাক রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য সিনিয়র কূটনীতিকরা।
দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতায় বাধা সন্ত্রাসবাদ (US On Terrorism in Pakistan)
শেরম্যান (Sherman) পরে সামাজিক মাধ্যমে স্পষ্ট জানান, “২০০২ সালে জইশ-ই-মহম্মদ আমাদের নাগরিক ড্যানিয়েল পার্লকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল (US On Terrorism in Pakistan)। তাঁর পরিবার এখনও আমার জেলাতেই থাকে। এই ভয়ঙ্কর গোষ্ঠীকে পাকিস্তানের মাটি থেকে সরাতে তারা কী করছে, তা এখনই স্পষ্ট করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসবাদ শুধু ভারত-পাক সম্পর্ক নয়, দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার অন্যতম বড় বাধা। জইশ-ই-মহম্মদের মতো সংগঠন কেবল ভারতের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।”বৈঠকে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেসম্যান শেরম্যান বলেন, “পাকিস্তানে হিন্দু, খ্রিস্টান ও আহমদিয়া মুসলিমদের যেন স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণের অধিকার দেওয়া হয়, এটাই মানবাধিকারের মূল শর্ত। গণতন্ত্রে অংশগ্রহণের পথ যেন কারও জন্য বন্ধ না হয় (US On Terrorism in Pakistan)।”
দক্ষিণ এশিয়ায় জল যুদ্ধের আশঙ্কা (US On Terrorism in Pakistan)
শুধু মানবাধিকার নয়, পরিবেশ ও জলবণ্টনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল আমেরিকায় এসে ভারতের সমালোচনা করে (US On Terrorism in Pakistan)। তারা দাবি করে, ভারতের চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত বেআইনি এবং এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় জল যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। বিলাবল ভুট্টো বলেন, “ভারত জল সরবরাহ বন্ধ করে আমাদের ২৪ কোটি মানুষের জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে। এটা যুদ্ধপ্ররোচনামূলক কাজ।” উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হানার পর পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত সিন্ধু জলচুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ড থেকে জঙ্গিদের দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই হামলার পর ভারত চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ (US On Terrorism in Pakistan)।

পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদত ও হামলা (US On Terrorism in Pakistan)
ভারতের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল, শশী তারুরের নেতৃত্বে, একই সময়ে ওয়াশিংটনে উপস্থিত রয়েছে (US On Terrorism in Pakistan)। এই প্রতিনিধি দল আন্তর্জাতিক মহলের সামনে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদত ও হামলার তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছে।এই প্রেক্ষাপটে আমেরিকার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক চাপ এবং নিরপেক্ষ অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে নজর কাড়ছে।সন্ত্রাসবাদ, মানবাধিকার এবং পরিবেশগত উদ্বেগ—তিনটি ইস্যুতে এই দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা নতুন করে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। প্রশ্ন উঠছে, এই চাপের মুখে পাকিস্তান আদৌ জইশ-ই-মহম্মদের বিরুদ্ধে কোনও বাস্তব পদক্ষেপ নেবে কি না। আর ভারত-পাক সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ধারিত হবে আগামী কূটনৈতিক পদক্ষেপে (US On Terrorism in Pakistan)।