ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: জো বাইডেনের সময় নিযুক্ত সমস্ত অ্যাটোর্নিকে বরখাস্তের নির্দেশ(US President Donald Trump) দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে নিয়োগ পাওয়া ইউএস অ্যাটর্নিদের যাঁরা এখনো কাজে আছেন, তাঁদের বরখাস্ত করার আদেশ দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ট্রাম্প লিখেছেন,বাইডেনের আমলে বিচার বিভাগের যে ধরনের রাজনীতিকরণ হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি।
কী বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প? (US President Donald Trump)
মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্তের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে ট্রাম্প(US President Donald Trump) বলেন, “হাউস পরিষ্কার করতে হবে। আমেরিকার বিচার ব্যবস্থায় পুরনো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। আমেরিকার স্বর্ণযুগ তৈরিতে একটি ন্যায্য বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।” ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিভাগ থেকে বাইডেন-যুগের সমাপ্তি কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেল। সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘গত চার বছরে মার্কিন বিচার বিভাগের এতটাই রাজনীতিকরণ হয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। এ জন্য আমি বাইডেন আমলে নিয়োগ পাওয়া বাকি সব অ্যাটর্নিকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছি।’ ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এ স্বর্ণযুগে অবশ্যই একটি স্বচ্ছ বিচারব্যবস্থা থাকতে হবে, যা আজ শুরু হলো।’ যদিও আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস এই বিষয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি।
বরখাস্তের চিঠি পাঠানো হয়েছে (US President Donald Trump)
প্রশাসনের এক সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মার্কিন অ্যাটর্নিকে চাকরি থেকে বরখাস্তের চিঠি পাঠানো হয়েছে, যাদের সবাই ছিলেন বাইডেন প্রশাসনের নিয়োগপ্রাপ্ত(US President Donald Trump)। এর জেরে সোমবার কয়েকজন অ্যাটর্নি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের ভারপ্রাপ্ত ইউএস অ্যাটর্নি গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন। তিনি বিগত ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য বিচার বিভাগ থেকে তাঁকে অনুরোধ করার পর তিনি পদত্যাগ করেছেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh July Warriors: হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে মৃত ‘জুলাই শহিদ’ ও আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’র স্বীকৃতি
ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহার
২০২১ সালে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনিও ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছিলেন। ট্রাম্প সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘‘এই উদাহরণটি তৈরি করেছেন বাইডেন নিজেই। তিনি ২০২১ সালে আমার নিরাপত্তার ছাড়পত্র তুলে নিয়েছিলেন এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেন আমাকে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো তথ্য না দেওয়া হয়। এখন আমি শুধু সেই একই নিয়ম অনুসরণ করছি।’’ তিনি বাইডেনের নিরাপত্তার ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছেন, যার ফলে আমেরিকার গোপন নথি বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আর বাইডেনের কাছে পৌঁছবে না। সাধারণত, ক্ষমতা হারালেও প্রাক্তন প্রেসিডেন্টরা কিছু নির্দিষ্ট নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু ট্রাম্প সেই নিয়ম ভেঙে বাইডেনকে এই সুবিধা রাখলেন না।

আইনি ও রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে
মার্কিন প্রশাসনে নতুন প্রেসিডেন্ট(US President Donald Trump) দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজের পছন্দমতো কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে সাধারণত এই ধরনের রদবদল আনুষ্ঠানিকভাবে করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এবার নির্দেশ জারি করে সরাসরি বরখাস্তের ঘটনা নজিরবিহীন। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আইনি ও রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War: যুদ্ধ থামাতে বৈঠক ট্রাম্প-পুতিনের, যোগ দিচ্ছেন জেলেন্সকি ও রুবিও
বাইডেন প্রশাসনের ‘অবশিষ্টাংশ’ মুছে ফেলবেন
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তগুলো তার ভবিষ্যৎ কৌশলেরই অংশ। ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রচারের সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, বাইডেন প্রশাসনের যেকোনো ‘অবশিষ্টাংশ’ তিনি মুছে ফেলবেন এবং প্রশাসনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাবেন। তাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। এই সিদ্ধান্তে আমেরিকার রাজনৈতিক পরিবেশ সরগরম হয়ে উঠেছে। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে প্রতিশোধের রাজনীতি।