ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানি করায় ভারতের ছয়টি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করল আমেরিকা(US Sanctions)। বুধবার মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মোট ২০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার উপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যার মধ্যে ভারতের ‘জুপিটার ডাই কেম প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘রামনিকলাল গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি’, ‘পারসিসটেন্ট পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘কাঞ্চন পলিমারস’, ‘অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘গ্লোবাল ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস লিমিটেড’ রয়েছে।
সন্ত্রাসবাদে মদত (US Sanctions)
মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর দফতর জানায়, ইরানের পেট্রোলিয়াম রফতানি থেকে পাওয়া অর্থ সন্ত্রাসবাদে মদত এবং দেশীয় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর দমন করতে ব্যবহার করছে তেহরান(US Sanctions)। তাই এই লেনদেন রুখতে যে সমস্ত সংস্থা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানের সঙ্গে ব্যবসায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে, সংশ্লিষ্ট ভারতীয় সংস্থাগুলির আমেরিকায় থাকা সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। এছাড়াও যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এই সংস্থাগুলিতে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অংশীদারিত্ব রয়েছে, তাদের উপরও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে আশঙ্কা(US Sanctions)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পেট্রোকেমিক্যাল ভিত্তিক শিল্পের উপর প্রভাব ফেলতে পারে(US Sanctions)। কারণ অভিযুক্ত ভারতীয় সংস্থাগুলি মূলত ওষুধ, প্লাস্টিক ও বস্ত্র শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করে থাকে। একাধিক দেশে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: ED Raid : সমবায় ব্যাঙ্কে ২০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি! আন্দামান ও কলকাতায় ইডি-র অভিযান
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া(US Sanctions)
এই ঘটনায় আমেরিকার সমালোচনায় সরব হয়েছে ইরান। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “অর্থনীতিকে অস্ত্র করে স্বাধীন দেশের উপর আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে আমেরিকা। এই বৈষম্যমূলক আচরণ আন্তর্জাতিক আইন এবং সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। এটি অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদের আধুনিক রূপ।”
সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা(US Sanctions)
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) একটি নির্বাহী নির্দেশে ইরানের শক্তি, জাহাজ এবং প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে লেনদেনকারী সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান করেছিলেন(US Sanctions)। তার পর থেকে বারবার ইরানকে আন্তর্জাতিক স্তরে একঘরে করতে পদক্ষেপ নিয়েছে হোয়াইট হাউস। তেহরানের পরমাণু প্রকল্প ও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ভূরাজনৈতিক ভূমিকা ঘিরেই এই তিক্ততা।

আরও পড়ুন: F-35 Crash : ক্যালিফোর্নিয়ায় ভেঙে পড়ল মার্কিন নৌসেনার এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান!
তবে ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির তরফেও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু ব্যবসায়িক সম্পর্ক নয়, কূটনৈতিক স্তরেও ভারত-আমেরিকা সম্পর্ককে কিছুটা চাপে ফেলতে পারে। আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেদিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কূটনৈতিক মহল।