ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক চাপাল আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণা ইতিমধ্যেই ভারতের রফতানিকারকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে (US Tariff On India)। তবে এক বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে— ভারতে তৈরি অ্যাপ্লের পণ্যে, বিশেষত আইফোনে, এর কী প্রভাব পড়বে?
ট্রাম্পের (Donald J. Trump) নতুন শুল্ক নীতি অনুযায়ী, যেসব পণ্য আমেরিকায় উৎপাদিত হয় না, তাদের উপরে এই শুল্ক চাপানো হচ্ছে না। ফলে অ্যাপ্লের স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য আপাতত এই শুল্কের আওতার বাইরে রয়েছে। অর্থাৎ ভারতে তৈরি আইফোন এখনও নির্বিঘ্নেই আমেরিকায় রফতানি করা যাবে।
ভারতের উত্থান অ্যাপ্লের উৎপাদনে (US Tariff On India)
বর্তমানে অ্যাপ্ল বিশ্বব্যাপী যে পাঁচটি দেশে সবচেয়ে বেশি পণ্য তৈরি করে, তার মধ্যে অন্যতম ভারত(US Tariff On India)। কোভিড-পরবর্তী সময়ে চিনে উৎপাদনে ঘাটতির কারণে অ্যাপ্ল ভারতে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। ফলে আমেরিকায় রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের গুরুত্ব ক্রমাগত বেড়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমেরিকায় বিক্রি হওয়া আইফোনের এক বড় অংশ এখন ভারত থেকেই রফতানি হয়। এমনকি, চীনকেও এই দিক থেকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ভারত। আইফোন তৈরি, রফতানি এবং সফটওয়্যার ও সাপ্লাই চেনের পরিকাঠামো— এই সব কিছুই এখন ধীরে ধীরে ভারতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। ফলে এই মুহূর্তে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি অ্যাপ্লের জন্য স্বস্তির হলেও, ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আসছে মূল্যবৃদ্ধি? (US Tariff On India)
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, ভবিষ্যতে যদি এই শুল্ক নীতি আরও বিস্তৃত হয়, এবং ইলেকট্রনিক পণ্যকেও যদি শুল্কের আওতায় আনা হয়, তবে ভারতে তৈরি আইফোন আমেরিকায় বিক্রি করতে গিয়ে দামি হয়ে উঠবে(US Tariff On India)। ফলত, ক্রেতাদের ঝোঁক চলে যেতে পারে অন্য দেশে তৈরি সস্তা বিকল্পের দিকে, যেমন ভিয়েতনাম বা চীনের পণ্য।

আরও পড়ুন: Digital Arrest : মহিলা চিকিৎসককে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’, ১৯ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা!
বাণিজ্য কূটনীতিতে চাপ (US Tariff On India)
ভারতের উপর একাধিক অভিযোগ এনেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প(US Tariff On India)। রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনার জন্য ভারতের উপর ‘জরিমানা’ চাপানোর কথাও বলেছেন তিনি। যদিও পরিমাণ বা সময়সীমা স্পষ্ট করেননি। একই সঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। তবে ট্রাম্প এ-ও বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে আলোচনার দরজা এখনও খোলা রয়েছে।”
আরও পড়ুন: US Pakistan Trade : যুক্তরাষ্ট্র-পাক বাণিজ্য চুক্তি ঘিরে ধোঁয়াশা! তেল, শুল্ক নাকি কূটনৈতিক কৌশল?
এই মুহূর্তে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যে চাপে রয়েছেন, তা অনস্বীকার্য। যদিও অ্যাপ্লের মতো সংস্থা আপাতত কিছুটা স্বস্তিতে, তবে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। ভারতের পক্ষে এই মুহূর্তে প্রয়োজন হবে কূটনৈতিক দক্ষতার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।