ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনা শুরু করতে চলেছে আমেরিকা (US Tariff Row)। আগামী সপ্তাহেই ইসলামাবাদ থেকে প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনে আসছেন। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গেও একটি বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান ট্রাম্প (Donald J. Trump)। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে যদি সংঘর্ষ চলত, তাহলে এই চুক্তিগুলি নিয়ে তাঁর বিন্দুমাত্র আগ্রহ থাকত না।
ট্রাম্প কী জানিয়েছেন? (US Tariff Row)
শুক্রবার মেরিল্যান্ডের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রিউস বিমানঘাঁটি থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা আগামী সপ্তাহেই আসছেন (US Tariff Row)। আমরা তাদের সঙ্গে শুল্ক এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনায় বসব।” উল্লেখ্য, গত মাসে আমেরিকা একাধিক দেশের পণ্যের উপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছিল। পাকিস্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে সেই হার ২৯ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়, যা নিয়ে ইসলামাবাদের তরফে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছিল।
ভারতের ক্ষেত্রে কী বলেছেন ট্রাম্প? (US Tariff Row)
ভারতের বেলায় ট্রাম্প বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন, ভারতের সঙ্গে আমরা একটি বড় বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।” যদিও এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি (US Tariff Row)। ট্রাম্পের শাসনকালে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বেশ কিছু বাণিজ্যিক টানাপোড়েন দেখা গিয়েছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ভারতীয় পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি। তবে সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক বিবৃতিতে বলেন, “আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা এখনও চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য (US Tariff Row)
ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর মধ্যস্থতার ফলেই দুই দেশ বর্তমানে সংঘর্ষবিরতির পথে হাঁটছে (US Tariff Row)। “আমি দুই দেশকেই বলেছি, যদি যুদ্ধ থামায়, তাহলে বাণিজ্য সম্ভব। না হলে কিছুই সম্ভব নয়,” বলেন ট্রাম্প। ওভাল অফিসে বসে সাংবাদিক সম্মেলন এবং পরে বিমানঘাঁটির ব্রিফিং—উভয় ক্ষেত্রেই তিনি একই কথা পুনরাবৃত্তি করেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, আমেরিকা যদি হস্তক্ষেপ না করত, তাহলে এই সংঘর্ষ হয়তো পরমাণু যুদ্ধের দিকেও এগোতে পারত।ট্রাম্পের এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। বিশেষত, ভারত-পাকিস্তানের মতো পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ও শান্তির প্রশ্ন বরাবরই সংবেদনশীল। তাঁর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, আমেরিকার প্রশাসন চায় এই অঞ্চলে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক, যাতে তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থও সুরক্ষিত থাকে।

ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির কূটনীতি (US Tariff Row)
তবে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, ট্রাম্পের বক্তব্য যতটা সরাসরি, বাস্তব চিত্র ততটা সরল নয় (US Tariff Row)। ভারত তার স্বার্থ মাথায় রেখেই বাণিজ্যচুক্তি ও শুল্ক নিয়ে আলাদা করে আলোচনা করছে, যেখানে মার্কিন চাপের চেয়ে পররাষ্ট্রনীতি বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।এখন দেখার বিষয়, আগামী সপ্তাহের বৈঠকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের সমঝোতায় পৌঁছায় এবং ভারতের সঙ্গে চূড়ান্ত বাণিজ্য চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়। দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই দুটি সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।