ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বুধবার থেকে কার্যকর হল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) ঘোষিত ২৬ শতাংশ আমদানি শুল্ক, যার প্রভাব সরাসরি পড়েছে ভারতীয় পণ্যের উপর (US Tariff War)। বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধের আবহে এই সিদ্ধান্তে শুধু ভারতের অর্থনীতিতেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও তৈরি হয়েছে তীব্র অনিশ্চয়তা। ভারতের শেয়ার বাজারে এর প্রতিফলন দেখা গিয়েছে বুধবার সকাল থেকেই—সূচকের দ্রুত পতন আর বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ এই নীতির তাৎক্ষণিক প্রভাবেরই প্রতিফলন।
মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে (US Tariff War)
সপ্তাহের শুরুতে শেয়ার বাজার প্রায় ১১০০ পয়েন্ট পড়ে যায়, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে (US Tariff War)। মঙ্গলবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও, বুধবার ফের সূচক ৫০০-এর কাছাকাছি পড়ে যায়। এই অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা। আলোচনার মূল বিষয়—এই শুল্কনীতির প্রভাব কীভাবে সামলানো যায় এবং ভারতের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা যায়।
শুল্কনীতির আওতায় বাদ ভারতীয় পণ্য (US Tariff War)
তবে কিছুটা স্বস্তির খবরও আছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত শুল্কনীতির (US Tariff War) আওতা থেকে বাদ পড়েছে ভারতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রফতানি পণ্য—যেমন তামা, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, সোনা-রুপোর বাট, ওষুধ ও ওষুধ তৈরির কাঁচামাল। এই পণ্যগুলি থেকে ভারতের একটি বড় অংশের রফতানি আয় আসে, ফলে এতে কিছুটা হলেও আর্থিক ধাক্কা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাল্টা শুল্ক চাপানোর সম্ভাবনা নেই (US Tariff War)
ভারতের পক্ষ থেকে পাল্টা শুল্ক (US Tariff War) চাপানোর সম্ভাবনা আপাতত নেই। বরং, ভারত সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি সদর্থক বাণিজ্য সমঝোতার দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। অতীতে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক কমানোর নজির রয়েছে—যেমন বুরবোঁ হুইস্কি ও হার্লে ডেভিডসন মোটরবাইক। এমনকি ডিজিটাল পরিষেবার উপর আরোপিত ‘গুগল ট্যাক্স’-এর হারও কিছুটা কমানো হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি স্পষ্ট করে যে, ভারত বর্তমানে সংঘর্ষের পথ নয়, আলোচনার রাস্তা বেছে নিচ্ছে।

আরও পড়ুন: Oil Price Hike : ক্রুড অয়েলের দাম কমলেও কেন কমছে না বাজারে তেলের দাম?
ইটের বদলে পাটকেল (US Tariff War)
ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি আসলে তার ‘ইটের বদলে পাটকেল’ কূটনীতি বা ‘রিসিপ্রোকাল ট্রেড’ নীতিরই প্রকাশ (US Tariff War)। তিনি শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন—যে দেশ আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক চাপাবে, তাদের পণ্যের উপরও সমান কড়াকড়ি আরোপ হবে। তবে একইসঙ্গে তিনি আলোচনার পথ খোলা রেখেছেন এবং শর্তসাপেক্ষে শুল্ক ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনাও রেখেছেন।

আরও পড়ুন: Google Tax : ট্রাম্পকে খুশি করতে “গুগল কর” প্রত্যাহার ভারতের! কারা কী সুবিধা পাচ্ছে?
ভারতের বড় চ্যালেঞ্জ (US Tariff War)
এই পরিস্থিতিতে ভারতের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—ঘরোয়া শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করা, বাজারে স্থিতি বজায় রাখা এবং একইসঙ্গে কৌশলী বাণিজ্যনীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কও দৃঢ় রাখা। অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে মোদী (Narendra Modi) সরকারের কূটনৈতিক দক্ষতাই ঠিক করে দেবে, ভারত কীভাবে এই সঙ্কট সামাল দেবে।
প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ (US Tariff War)
ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ কৌশল ঠিক করে দেবে, এই ধাক্কা কতটা সামাল দেওয়া সম্ভব। এখন সময় কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার, যাতে ভারতের স্বার্থ বজায় থেকেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যায়।