ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (WB Assembly Session) নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্প্রতি ওবিসি (অনগ্রসর শ্রেণি) সংরক্ষণ নীতি সংশোধনের জন্য একটি নতুন তালিকা অনুমোদন করেছে। এই তালিকা রাজ্যের উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে আগের ৬৬টি জাতির পরিবর্তে ৬৪টি জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সাথে নতুন করে ৭৬টি জাতি যুক্ত হয়েছে। এর ফলে রাজ্যে স্বীকৃত ওবিসি সম্প্রদায়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪০টি।
সংশোধিত তালিকা পেশ (WB Assembly Session)
২ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনগ্রসর কল্যাণ দফতর থেকে এই সংশোধিত (WB Assembly Session) তালিকা পেশ করা হয়, যার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তালিকায় সিলমোহর দেন। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল আইনি জটিলতা দূর করা এবং রাজ্যের ওবিসি সম্প্রদায়ের অধিকারের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। তবে এই তালিকা নিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
‘অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি’ রুখতে চেষ্টা (WB Assembly Session)
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে বক্তব্য রাখেন এবং ‘অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি’ রুখতে (WB Assembly Session) চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ওবিসি শংসাপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে কোনও ধর্মের প্রভাব নেই, বরং এটি সম্পূর্ণই আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে নির্ধারিত। তিনি জানান যে, ওবিসি বিভাগে বর্তমানে ৪৯টি ওবিসি ‘এ’ এবং ৯১টি ওবিসি ‘বি’ শ্রেণি রয়েছে এবং আরও ৫০টি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমীক্ষা চলছে। তিনি আশ্বাস দেন, সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এই দাবিকে মানতে নারাজ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল
তবে এই দাবিকে মানতে নারাজ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদলের রাজনৈতিক কারণেই প্রকৃত ওবিসি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উল্লেখ করেন যে, সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি শংসাপত্র বিষয়ক বিষয়টি নিয়ে তারা পরবর্তী শুনানিতে নিজেদের অবস্থান জানাবেন। বিজেপি বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করে বিধানসভা থেকে বিক্ষোভসহ সেশন ত্যাগ করেন। তারা অভিযোগ করেন, বিধানসভায় বিরোধীদের বক্তৃতার সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে।

জনগোষ্ঠীর কল্যাণমূলক উদ্যোগ
এই বিষয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে, ওবিসি সংরক্ষণ নীতিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে তীব্র টানাপোড়েন চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নীতি সংশোধনকে জনগোষ্ঠীর কল্যাণমূলক উদ্যোগ হিসেবে তুলে ধরেন, যেখানে বিরোধীরা এটি তাদের রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখছেন।
আরও পড়ুন: Arijit Singh Ed Sheeran: বিদেশি গানে পাঞ্জাবি তড়কা, ‘স্যাফায়ার’-এ মত্ত নেটপাড়া!
মোটকথা, ওবিসি শংসাপত্রের বিষয়টি রাজ্যের সামাজিক ও রাজনৈতিক মঞ্চে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আইন ও রাজনীতির জটিলতা কাটিয়ে রাজ্যের নানা সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করাই এই নীতির মূল লক্ষ্য। আগামী দিনে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির সিদ্ধান্ত ও রাজ্যের রাজনীতির দিকনির্দেশনা এই বিতর্কের ফলাফল নির্ধারণ করবে।