ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: খুব বেশি হলে আর দিন পাঁচেক। তারমধ্যেই বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস(Bangladesh Election)। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলি সূত্রে খবর, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে একথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন (Bangladesh Election)
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেছেন, তিনি আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সময়সীমা এবং তারিখ ঘোষণা করবেন(Bangladesh Election)।’ মোস্তফার সংযোজন, ‘আলোচনার সবচেয়ে ফলপ্রসূ বিষয় হচ্ছে এটাই। বাংলাদেশে যে অরাজকতা, তার একমাত্র সমাধানের পথ নির্বাচন- এটা সরকার বুঝতে পেরেছে।’

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য (Bangladesh Election)
অন্যদিকে বৈঠকে ইউনূস বলেছেন, কিছু অশুভ শক্তি নির্বাচনের আয়োজনকে ভন্ডুল করার চেষ্টা করছে(Bangladesh Election)। সম্মিলিত ভাবে এই অপচেষ্টাকে রুখতে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী’ সমস্ত শক্তিকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, গত শনিবার বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। জানা যাচ্ছে, ওই বৈঠকে তিনি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আহ্বান করেছেন একটি ‘সুন্দর নির্বাচন’ পরিচালনার।ইউনূস জানিয়েছেন, কিছু অপশক্তি সুযোগ পেলেই বাংলাদেশে অশান্তি পাকাচ্ছে। এতে তাঁর দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আশু সমাধান হল নির্বাচন। এবং সেই ভোট যাতে ভাল ভাবে পরিচালনা করা যায়, সে জন্য বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলিকে আবেদন করেছেন।
নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা (Bangladesh Election)
নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন ইউনূস। তাঁকে উদ্ধৃত করে ‘দ্য ডেলি স্টার’ লিখেছে, ‘’যখনই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এগোচ্ছি, তখনই নানা ষড়যন্ত্র সামনে আসছে। কিন্তু বাস্তব হল, ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রের রাস্তা বন্ধ করা যাবে না(Bangladesh Election)। কারণ, ফ্যাসিবাদ প্রশ্নে সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন ইউনূস। বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক নেতারাও প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।এদিকে বৈঠকে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে অন্তত তিনটি দলের প্রতিনিধি বলেছেন, সরকার প্রধান চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করবেন। দুটি দল বলেছে, ড. ইউনূস তিন-চার দিনের মধ্যে ঘোষণা করবেন। আরেকটি দল বলেছে, ৫ অগাস্টের আগেই ঘোষণা করবে সরকার। যদিও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এসব বক্তব্যকে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করেনি।

শেখ হাসিনার ইস্তফা (Bangladesh Election)
বাংলাদেশে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভের পর ক্ষমতায় এসেছিলেন ইউনূস(Bangladesh Election)। গতবছর জুলাই-অগাস্ট মাস জুড়ে বাংলাদেশ ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরোধী আন্দোলনে রক্তাক্ত। ২০২৪ সালের অগস্ট মাসে প্রবল গণবিক্ষোভের চাপে পড়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে চলে আসেন। তার পর ৮ অগস্ট বাংলাদেশে নোবেলজয়ী ইউনূসের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে অন্তর্বর্তী সরকার। কথা ছিল, বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকার সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবে এবং গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হবে। সেই নির্বাচনে দেরি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন (Bangladesh Election)
এই অশান্তির আবহে গত জুন মাসে ইউনূস ঘোষণা করেন ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে(Bangladesh Election)। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেনি খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি তথা বিএনপি। তাদের বক্তব্য, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব। সেটিই উপযুক্ত সময়। তার জন্য ২০২৬-এর এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।
