ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিলেন সোমবার। আর তাঁর সঙ্গেই উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন জেডি ভ্যান্স(JD Vance)। সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ তম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন জেডি ভ্যান্স। তার স্ত্রী ঊষা এবং কনিষ্ঠ কন্যা মিরাবেল রোজ সহ তার পরিবারের সাথে ভ্যান্সের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাশেই ছিলেন স্ত্রী ঊষা।
জমকালো শপথ অনুষ্ঠান (JD Vance)
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান জমকালো ভাবে আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিটা অনুষ্ঠান পরিকল্পিত ছিল সুন্দরভাবে। এবং সুষ্ঠভাবেই তা সম্পূর্ণ হয়েছে। যদিও অত্যন্ত ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটল ভবনের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৬০০ জন উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। এছাড়াও অনুষ্ঠান দেখার ব্যবস্থা ছিল বড় স্ক্রিনে। বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তি, ধনী ব্যক্তি, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতিরা এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেখানে। অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের পরেই শপথ নিলেন ভ্যান্স(JD Vance)।
মার্কিন সিনেটেও ছিলেন ওহিওর (JD Vance)
২ আগস্ট, ১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন জেডি ভান্স(JD Vance)। তিনি হলেন একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ, অ্যাটর্নি, লেখক এবং মেরিন কর্পস অভিজ্ঞ। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মার্কিন সিনেটে ওহিওর প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন জেডি ভান্স। তিনি রিপাবলিকান পার্টির একজন সদস্য এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য দলের নির্বাচিত প্রার্থী ছিলেন ও জয়লাভ করেন। তিনি ২০ জানুয়ারী, ২০২৫-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার অভিষেক হওয়ার প্রস্তুতির জন্য সিনেট থেকে পদত্যাগ করেন।
করেছিলেন সাংবাদিকতাও
১৭ বছর বয়সে, জেমস ডেভিড ভ্যান্স(JD Vance) ডিলম্যান ফুডসে একজন ক্যাশিয়ার হিসাবে কাজ করেছিলেন। ২০০৩ সালে মিডলটাউন হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন। তিনি মেরিন কর্পসে তালিকাভুক্ত হন, দ্বিতীয় মেরিন এয়ারক্রাফ্ট উইং-এর সাথে একজন সামরিক সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। ভ্যান্স ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ইরাকে ছয় মাস যুদ্ধকালীন সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। তার চার বছরের চাকরির সময়, তাকে ২০০৫ সালে ছয় মাসের জন্য ইরাকে নিযুক্ত করা হয়েছিল। এরপর তিনি ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ২০০৯ সালে স্নাতক হন এবং ২০১৩ সালে ইয়েল ল স্কুল থেকে স্নাতক হন।
স্মৃতিকথা ‘হিলবিলি এলিজি’
২০১৬ সালে তার লিখিত নিজের স্মৃতিকথা হিলবিলি এলিজি নিউ ইয়র্ক টাইমসের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বই হয়ে ওঠে এবং ২০২০ সালে একটি অস্কার-মনোনীত ফিচার ফিল্ম হিসেবে তৈরি হয়। ভ্যান্স তার আত্নজীবনী হিলবিলি এলিজি বইতে উল্লেখ করেছেন যে তিনি ওহাইওর মিডলটাউন শহরে একটি নিম্ন আয়ের পরিবারে বড় হয়েছেন।[১৬] তার মা এবং দাদী তাকে এককভাবে লালন-পালন করেছেন। ভ্যান্সের পরিবার কঠিন জীবনের মুখোমুখি হয়েছিল। তার মা-দাদী কেনটাকি থেকে এসে ওহাইওতে বসবাস শুরু করেছিলেন, এবং সেই পরিবেশেই ভ্যান্সের শৈশব কাটে।
আরও পড়ুন:Donald Trump: মার্কিন মসনদে ট্রাম্প, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা বার্তা মোদির
রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শনে স্নাতক
ভ্যান্স কর্পোরালের পদমর্যাদা অর্জন করেন এবং মেরিন কর্পস গুড কন্ডাক্ট মেডেল এবং নেভি অ্যান্ড মেরিন কর্পস অ্যাচিভমেন্ট মেডেল অর্জন করেন। তিনি ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং দর্শনে স্নাতক হন। পরে তিনি ইয়েল ল স্কুলে পড়াশোনা করেন, যেখানে তিনি তার স্মৃতিকথা হিলবিলি এলিগি লিখেছিলেন এবং ২০১৩ সালে জুরিস ডক্টর ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক হন।
এক সময় ছিলেন ট্রাম্প-বিরোধী
যদিও ভ্যান্স ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রার্থী পদের বিরোধিতা করেছিলেন, কিন্তু ভ্যান্স এ সময়ের পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের শক্তিশালী সমর্থক হয়ে উঠেন। ১৫ জুলাই, ২০২৪-এ, ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্যান্সকে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে তার নির্বাচনী সঙ্গী অর্থাৎ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করেন। রিপাবলিকান পার্টির সদস্য হলেও একসময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন জেডি ভ্যান্স। আর সেই ভ্যান্সকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর রানিংমেট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনীত করেছিলেন।