ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক (Bangladesh Circumstance) পরিস্থিতি ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
রিপোর্টে পাঁচ দফার সুপারিশ (Bangladesh Circumstance)
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের (Bangladesh Circumstance) তথ্যানুসন্ধান দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ‘পরিকল্পিত বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর বিষয়ে কড়া মন্তব্য করা হয়েছে। রিপোর্টে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে, যা হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে শান্তি এবং রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ফেরাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম সুপারিশ (Bangladesh Circumstance)
প্রথমত, রাষ্ট্রপুঞ্জ সুপারিশ (Bangladesh Circumstance) করেছে যে, বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম করা এবং নির্যাতনের মতো অপরাধের তদন্ত ও বিচারের জন্য কার্যকর, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। এই ধরনের অপরাধের নির্দেশদাতাদের বিচার করতে হবে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী। ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Sunita Williams Return Date: পৃথিবীতে ফিরছেন সুনীতা, এগোলো সেই তারিখ, তৎপর নাসা
দ্বিতীয় সুপারিশ
দ্বিতীয়ত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে পুরো পুলিশবিধি সংশোধন করার সুপারিশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট অনুযায়ী, পুলিশকে সশস্ত্র প্রাণঘাতী হামলার মোকাবিলা ছাড়া গুলি চালানোর অধিকার দেওয়া যাবে না। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর কড়া শাস্তি এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত র্যাব বাহিনী ভেঙে দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় সুপারিশ
তৃতীয়ত, রাষ্ট্রপুঞ্জ বিতর্কিত ফৌজদারি আইনগুলো রদ অথবা সংশোধন করতে বলেছে। বিশেষ করে বাক্স্বাধীনতার অধিকার ফেরাতে এই সংক্রান্ত অভিযোগে গ্রেফতার ও বিচার স্থগিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন এবং সন্ত্রাসবাদ দমন আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও নাগরিক অধিকার-কর্মীদের বিরুদ্ধে বেআইনি নজরদারি বন্ধ করার কথাও বলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

চতুর্থ সুপারিশ
চতুর্থত, রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, বাংলাদেশকে হিংসা এবং বিদ্বেষের আবহ থেকে মুক্ত রাখতে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পদ্ধতির প্রয়োজন। এতে কোনও রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা কাম্য নয়। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার যে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, তাতে সায় নেই রাষ্ট্রপুঞ্জের।
পঞ্চম সুপারিশ
পঞ্চমত, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের পাশাপাশি হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে আর্থিক সুশাসন ফিরিয়ে আনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জ সুপারিশ করেছে, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ বা বড় মাপের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতিদমন সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে উচ্চ স্তরের সরকারি কর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই পাঁচ দফা সুপারিশে রাষ্ট্রপুঞ্জ স্পষ্টভাবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সরকারের কাছে এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে, যাতে দেশের রাজনৈতিক স্বচ্ছতা এবং সামাজিক ন্যায় নিশ্চিত করা যায়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সুপারিশগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।