ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রতিবাদে মেদিনীপুর কলেজে আন্দোলনের কারণে এসএসআই ও ডিএসও-এর দুই মহিলা কর্মীকে থানায় পুলিশি অত্যাচারের মামলায় আইজিপি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, সবরকম সাহায্য করতে হবে স্বরাষ্ট্র সচিবকে। এক্ষেত্রে পুলিশের কোনও সাহায্য নেওয়া যাবে না। আইপিএস মুরলীধর শর্মাকে এফআইআর দায়ের করতে হবে। অভিযুক্ত উইনার্স টিমের মহিলা কনস্টেবল কুহেলী সাহার বিরুদ্ধে তদন্ত জারি থাকবে। আইজিপি’র রিপোর্টে স্বীকার করা হয়েছে যে অভিযুক্ত মহিলা কনস্টেবল মামলাকারীদের মারধর করেছেন। ফৌজদারি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের সেশন জাজের মানবাধিকার আদালতে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি শুনানির পর নির্ধারিত হবে।
আরও পড়ুন: SSC Teachers Protest: ‘আইনি পরামর্শ না-পাওয়ার কারণেই তালিকা প্রকাশ হয়নি’, ব্রাত্য বসু
চুল টেনে মারধর, গায়ে মোম! (Calcutta High Court)
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপস্থিতিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন অশান্তির জেরে ছাত্র ধর্মঘটের দিন গত ৭ মার্চ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মেদিনীপুর কলেজ। সেখানকার বাম ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর সময় ছাত্রীদের উপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। কলেজে আন্দোলন করার সময় দুই ছাত্রীকে মেদিনীপুর মহিলা থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর, শারীরিক হেনস্থা ও গায়ে মোম ঢেলে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়, হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এবং কোনও এফআইআর দায়ের না করেই মাঝরাতে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের করেছিলেন নিগৃহীতা এসএসআই নেত্রী সুচরিতা দাস, ডিএসও সমর্থক সুশ্রীতা সরেন।

সেই মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আইজি (প্রশিক্ষণ) আইপিএস মুরলীধর শর্মাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা-সহ পুলিশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাঁকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তদন্তে নামছেন আইজি মুরলীধর শর্মা (Calcutta High Court)
মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সেই জোড়া মামলার রায় দিলেন। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জানান আইজিপি মুরলীধর শর্মার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে উইনার্স টিমের মহিলা কনস্টেবল কুহেলী সাহা মামলাকারী সুচরিতা দাসের চুলের মুঠি ধরে টেনেছেন, ধাক্কা দিয়েছেন ও তাঁকে মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত জারি থাকবে।আইজিপি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে একটি সিট গঠন করতে হবে। সিটে বাকি সদস্য কারা থাকবেন, তা তিনিই ঠিক করবেন। মুরলীধর শর্মাকে ঘটনায় এফআইআর দায়ের করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র সচিবকে সবরকম সাহায্য করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের কোনও সহায়তা নেওয়া যাবে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিএসপি (এডমিনিস্ট্রেশন) যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা আদালত খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ, তিনি যে রিপোর্ট দিয়েছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এবং সিসিটিভি ফুটেজেও সেই ঘটনা নেই।
গোটা ঘটনায় পরবর্তী শুনানি হবে পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের সেশন জাজের মানবাধিকার কোর্টে। ফৌজদারির বিষয়টি দেখবে মানবাধিকার কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি শুনানির পর নির্ধারিত হবে। আগামী জুনে হাইকোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: Kalighater kaku: আরও ২ মাস স্বস্তি কালিঘাটের কাকুর, ১৬ জুন জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করল হাইকোর্ট
নিগৃহীতা ডিএসও সমর্থক সুশ্রীতা সরেনের মামলাতেও একই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।আইজি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট গঠন ও এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ঘোষ। এক্ষেত্রেও সবরকম সহায়তা করতে হবে স্বরাষ্ট্র সচিবকে। এই মামলারও পরবর্তী ফৌজদারি শুনানি হবে পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের সেশন জাজের মানবাধিকার আদালতে (Calcutta High Court)। তবে এক্ষেত্রে আলাদা করে অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আলাদা করে তদন্তের কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। আগামী জুলাইয়ে হাইকোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।