ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বড়সড় অগ্রগতি(National Herald Case)। এ মাসের শুরুতেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল। সেই চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর এবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক শুনানির নির্দেশ দিল। আগামী ৮ মে ধার্য হয়েছে মামলার পরবর্তী দিন।
চার্জশিটে কাদের নাম?(National Herald Case)
আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, চার্জশিটে উল্লেখিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, স্যাম পিত্রোদা ও সুমন দুবে। সকলের কাছে ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিচারক বিশাল গগনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, “এই মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ, এতে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। অভিযুক্তরা তাঁদের বক্তব্য রাখার অধিকার রাখেন। সেই অধিকার প্রয়োগ করলেই তদন্ত প্রভাবিত হবে না।”
মামলার পটভূমি (National Herald Case)
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলার সূত্রপাত হয়েছিল ২০১২ সালে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর করা একটি মামলার মাধ্যমে (National Herald Case)। তাঁর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেসের কাছ থেকে প্রায় ৯০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিল Associated Journals Limited (AJL), যারা ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকা প্রকাশ করত। ২০০৮ সালে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে গেলে AJL–এর দায়-দেনা কাঁধে নিয়ে Young Indian Pvt. Ltd নামের একটি নতুন সংস্থা AJL–কে অধিগ্রহণ করে। এই সংস্থার ৭৬ শতাংশ শেয়ার ছিল সনিয়া ও রাহুল গান্ধীর হাতে।

“নন-প্রফিট” কোম্পানি (National Herald Case)
স্বামীর দাবি, এর মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি Young Indian–এর দখলে চলে আসে, অথচ এই সংস্থা একটি “নন-প্রফিট” কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত ছিল। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পরে জানানো হয়, দেওয়া ঋণ তারা মকুব করে দেয়, কারণ সেই টাকা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ছিল না। তবে স্বামীর বক্তব্য, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে কংগ্রেস কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকে ঋণ দিতে পারে না। এটা রাজনৈতিক এবং আর্থিক শিষ্টাচারবিরোধী।

ইডি-র তদন্ত ও বাজেয়াপ্তি (National Herald Case)
২০২১ সালে ইডি এই মামলায় তদন্ত শুরু করে এবং কয়েক দফায় সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অভিযোগ, টাকা নয়ছয়ের মাধ্যমে দুর্নীতি হয়েছে এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিপুল সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ইডি বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, যার মূল্য কয়েকশো কোটি টাকা।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া (National Herald Case)
কংগ্রেস এই মামলাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছে। দলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এই সরকার বিরোধী নেতাদের হেনস্থা করতে ইডি-কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।” অন্যদিকে বিজেপি বলছে, “আইনের হাত সকলের জন্য সমান। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”
পরবর্তী পদক্ষেপ (National Herald Case)
৮ মে মামলার শুনানিতে অভিযুক্তদের পক্ষে প্রাথমিক বক্তব্য পেশ করা হবে (National Herald Case)। বিচারক সিদ্ধান্ত নেবেন, মামলাটি গম্ভীরতা সহকারে গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে কিনা।এই মামলার ফলাফল শুধু সনিয়া ও রাহুল নয়, ভারতের রাজনীতিতে বিরোধী দলের অবস্থান ও গণতান্ত্রিক চর্চার ভবিষ্যতের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে।