ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মুজিবের পরিবারের দাবি (Fake PMO Official), ২০২১ সাল থেকে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন।
ঘটনার পটভূমি (Fake PMO Official)
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার মধ্যে (Fake PMO Official), “অপারেশন সিঁদুর” চলাকালে, কোঝিকোড়ের এলাথুরের বাসিন্দা মুজিব রহমান প্রধানমন্ত্রীর অফিসের (পিএমও) একজন কর্মকর্তা পরিচয়ে কোচি নেভাল বেসে ফোন করে আইএনএস বিক্রান্তের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। তিনি নিজেকে “রাঘবন” নামে পরিচয় দেন এবং জাহাজটির বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তথ্য চান।
নৌবাহিনীর সতর্কতা ও পুলিশের পদক্ষেপ (Fake PMO Official)
নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা কলটির উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে অবহিত করেন (Fake PMO Official)। হারবার পুলিশ স্টেশন একটি এফআইআর নথিভুক্ত করে এবং তদন্ত শুরু করে। কোচি সিটি পুলিশ কমিশনার পুট্টা বিমলাদিত্য জানান, প্রাথমিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের পর মুজিব তার ফোন বন্ধ করে দেন। তবে তদন্তকারীরা নম্বরটি ট্র্যাক করে সোমবার তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
মানসিক স্বাস্থ্য ও তদন্ত
মুজিবের পরিবার দাবি করেছে, তিনি ২০২১ সাল থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য চিকিৎসাধীন এবং মানসিকভাবে অস্থিতিশীল। তারা অভিযোগ করেন, তিনি অনলাইনে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন পড়ে কলটি করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে আইএনএস বিক্রান্ত করাচি বন্দরে হামলা চালিয়েছে—যা “অপারেশন সিঁদুর” চলাকালে ছড়ানো গুজবের অংশ।
কমিশনার বিমলাদিত্য জানান, মুজিবের মানসিক অবস্থা নির্ধারণে একটি মেডিকেল মূল্যায়ন করা হবে। “তিনি মানসিকভাবে অস্থিতিশীল কিনা তা নির্ধারণে চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করবেন। এদিকে, একটি বিস্তারিত তদন্ত চলছে,” তিনি বলেন। 
প্রতিরক্ষা তথ্যের সুরক্ষা
নৌবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রচেষ্টা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে, তারা জানায়, “৯ মে ২০২৫ তারিখে কোচি নেভাল বেসে একটি বেসামরিক ফোন নম্বর থেকে নৌবাহিনীর সম্পদের বিষয়ে একটি সন্দেহজনক কল পাওয়া যায়। নৌবাহিনীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি চিহ্নিত করে এবং সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে অবহিত করে। হারবার পুলিশ স্টেশনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে একজন বেসামরিক নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এবং দক্ষিণ নৌ কমান্ড এই ঘটনায় তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।”
নৌবাহিনী আরও জানায়, “ভারতীয় নৌবাহিনী বিরোধী উপাদান দ্বারা পরিচালিত ধ্বংসাত্মক এবং গুপ্তচরবৃত্তির কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সর্বদা সতর্ক। জাতীয় স্বার্থে সর্বোচ্চ স্তরের প্রস্তুতি বজায় রেখে, ভারতীয় নৌবাহিনী পরিচালনাগত নিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
উল্লেখযোগ্য তথ্য: আইএনএস বিক্রান্ত
আইএনএস বিক্রান্ত হল ভারতের নিজস্বভাবে নির্মিত প্রথম বিমানবাহী রণতরী, যা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কমিশন করা হয়। এটি কোচিন শিপইয়ার্ডে নির্মিত হয়েছে এবং দুটি স্কোয়াড্রন MiG-29K যুদ্ধবিমান (মোট ৪০টি বিমান পর্যন্ত) এবং ১০টি কামোভ Ka-31 হেলিকপ্টার বহন করতে সক্ষম। জাহাজটি ৬৪টি বারাক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত, যা আকাশ থেকে আসা হুমকি নিরসনে সক্ষম। এর দৈর্ঘ্য ২৬২ মিটার এবং প্রস্থ ৫৯ মিটার, এবং এটি সর্বোচ্চ ৩০ নট গতিতে চলতে পারে। আইএনএস বিক্রান্ত বিশ্বের শীর্ষ ১০টি বিমানবাহী রণতরীর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই ঘটনাটি প্রতিরক্ষা এবং গোয়েন্দা মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন “অপারেশন সিঁদুরের” মাধ্যমে ভারতের কৌশলগত সামুদ্রিক অবস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এই ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রচেষ্টা তথ্য যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ এবং সাইবার ও যোগাযোগ নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।