ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তর সিকিমের প্রতীক্ষিত গন্তব্য গুরুদোংমার দর্শন (Sikkim Travel Tips) অনেকের স্বপ্নের অংশ। এই স্বপ্নপূরণের জন্য বেশিরভাগ পর্যটকের পরিকল্পনা হয়ে থাকে গ্যাংটক থেকে শুরু করে উত্তর সিকিম যাওয়ার। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে সেখানে বিপর্যয় ঘটে যাওয়ায় পর্যটন কার্যক্রম কিছুটা বন্ধ রয়েছে। গ্যাংটকের স্থানীয় ভ্রমণ সংস্থা জানাচ্ছে, এখনো অনুমতি বিষয়ে নিশ্চিত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে আগাম বুকিং থাকা সত্ত্বেও অনেককে ভ্রমণ বাতিল করতে হচ্ছে। যদি আপনি গ্যাংটকে থেকেই বের হতে চান বা নতুন গন্তব্য খুঁজছেন, তাহলে গ্যাংটকের আশপাশেই ঘুরে দেখার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী কেনাকাটার সুযোগ (Sikkim Travel Tips)
গ্যাংটক শহরটি সাধারণত সিকিম ভ্রমণের মূল দরজা হলেও শহরটিকে পর্যটকরা (Sikkim Travel Tips) পুরোপুরি উপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু এমজি মার্গের দিকে হাঁটাহাঁটি করলেই পাবেন রাস্তার দু’পাশে নানা রকম দোকানপাট, ক্যাফে ও রেস্টুরেন্ট। লাল বাজারে শীতকালীন পোশাক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী কেনাকাটার সুযোগ রয়েছে। একদিনের জন্য গ্যাংটক শহরকে পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখা যেতে পারে, যেখানে স্থানীয় খাবার ও চা পান করে শহরের নিজস্ব সংস্কৃতিকে কাছ থেকে অনুভব করা যায়।
গ্যাংটকের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোও দেখার সুযোগ (Sikkim Travel Tips)
গাড়ি ভাড়া করে গ্যাংটকের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোও দেখার সুযোগ (Sikkim Travel Tips) রয়েছে। বাকথং জলপ্রপাতের প্রকৃতি মনোহর, এছাড়া দো দ্রুল চোর্তেন মনাস্ট্রি, রাজভবন ও সাগলাখাং মনাস্ট্রি পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হলো পাহাড়ের উপর অবস্থিত রুমটেক মনাস্ট্রি, যা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং সৌন্দর্যের জন্য ব্যাপক পছন্দ।

পাহাড়ি বাতাস মন মুগ্ধ করে (Sikkim Travel Tips)
গ্যাংটক থেকে একদিনের ভ্রমণে যেতে পারেন ছাঙ্গু লেক, বাবা মন্দির ও (Sikkim Travel Tips) নাথুলায়। এগুলোকে ঘুরতে অবশ্য আগাম অনুমতি নিতে হয়, যার জন্য প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভোটার কার্ড বা পাসপোর্ট। ১২,৩১৩ ফুট উচ্চতায় পাহাড় ঘেরা ছাঙ্গু লেক প্রকৃতির অপরূপ এক রূপ, যেখানে ঝর্ণার গর্জন আর পাহাড়ি বাতাস মন মুগ্ধ করে। শেয়ার জিপ কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া করে এই যাত্রা খুবই আরামদায়ক।
পূর্ব সিকিমে রেশমপথের দিকে যাত্রা
যারা একটু দূরে যেতে চান, তারা পূর্ব সিকিমে রেশমপথের দিকে যাত্রা করতে পারেন। এখানে নাথাং ভ্যালির শীতল ও মনোরম পরিবেশ এবং রেশমপথের পাহাড়ি বাঁকগুলো সাদৃশ্যপূর্ণ এক সৌন্দর্যের ছবি তৈরি করে। নাথাংয়ের পল্লী জীবন এবং সীমিত সংখ্যক হোমস্টে থাকার সুবিধা এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়। ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা থাকলে একদিন থেকে যাওয়াটা স্মরণীয় হতে পারে।
শান্ত পাহাড়ি জায়গায় যাওয়ার পরামর্শ
যদি পরিবারের সঙ্গে ছোট ছোট বাচ্চা বা বয়স্ক থাকেন এবং খুব বেশি উচ্চতা বা ঠান্ডা সহ্য করতে না পারেন, তাহলে আগমলোর মতো শান্ত পাহাড়ি জায়গায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে দু’দিন থেকে জীবনের ক্লান্তি ভুলে যাওয়ার সুযোগ আছে। রোলেপ ও আরিটার মতো নিকটবর্তী জায়গাগুলোও ঘুরে দেখা যেতে পারে। এছাড়া কালিম্পং হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেন স্টেশনে ফিরে আসাও সুবিধাজনক।
রাবদানস ও রাবাংলার পাহাড়ি পথ
পশ্চিম সিকিমে গ্যাংটক থেকে ১২৫ কিমি দূরে পেলিং ও রাবাংলা জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। নদী, ঝর্ণা, স্কাইওয়াকের কাচের সেতু, বৌদ্ধ মন্দির ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য পেলিংয়ের আকর্ষণ। বিশেষ করে মেঘমুক্ত দিনে কাঞ্চনজঙ্ঘার শ্বেতশুভ্র শিখরের দৃশ্য অপরূপ। রাবদানস ও রাবাংলার পাহাড়ি পথ হাঁটা প্রেমিকদের জন্য সুখকর অভিজ্ঞতা।
আরও পড়ুন: Peyajer Payes: আম-জাম-লিচু নয়, চেখে দেখুন পেঁয়াজের পায়েস!
রিংচেংপং ও ছায়াতালও গ্যাংটকের কাছাকাছি থাকা ছোট পরিসরের হ্রদ ও মনাস্ট্রি সহ মনোরম জায়গা। এখানে ঝকঝকে আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। পাহাড়ের বুক চিরে স্নিগ্ধ রেশমপথ প্রকৃতির অদ্ভুত এক উপহার। সুতরাং, গ্যাংটক ছুঁয়ে উত্তর সিকিমের ভ্রমণ বাতিল হলেও, এই আশপাশেই অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে যা একদিন বা দুই দিনের জন্য ভ্রমণ তালিকায় রাখা যায়। পর্যটকরা নিজেদের শখ ও সুবিধা অনুযায়ী উপযুক্ত গন্তব্য বেছে নিতে পারেন।