ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ (100 Days Work) থাকার পর অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে আবার চালু হতে চলেছে ‘১০০ দিনের কাজ’ প্রকল্প। কলকাতা হাই কোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ১ অগস্ট থেকে এই প্রকল্প শুরু করতেই হবে। তবে কেন্দ্র চাইলে এর জন্য কিছু শর্ত আরোপ করতে পারে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই পুরো প্রকল্প বন্ধ রাখা যাবে না।
মামলার শুনানি ছিল বুধবার (100 Days Work)
এই মামলার শুনানি ছিল বুধবার, কলকাতা (100 Days Work) হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি.এস. শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাটি দায়ের করেছিল পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি। তাদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। একই সঙ্গে পৃথক একটি মামলাও দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
১০০ দিনের কাজের মজুরি বন্ধ (100 Days Work)
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের মজুরি (100 Days Work) বন্ধ রয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, এই সময়ে বকেয়া মজুরির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৪৮৪ লক্ষ টাকা। তাঁদের আরও দাবি, এই টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে এবং মজুরি আটকে রাখার কারণে প্রতি মাসে ০.০৫ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে।
প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, এই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রকৃত শ্রমিকদের প্রাপ্য টাকা অন্যদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদহ এবং দার্জিলিং, এই চার জেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। সেই কারণেই টাকা আটকে রাখা হয়েছিল।
কেন মজুরি থেকে বঞ্চিত হতে হবে?
তবে আদালত স্পষ্ট করেছে, দুর্নীতির তদন্ত চলতেই পারে, কেন্দ্র চাইলে দুর্নীতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলিতে আলাদা নজরদারি চালাতে পারে, এমনকি সেগুলি সাময়িকভাবে প্রকল্পের আওতার বাইরে রাখাও যেতে পারে। কিন্তু রাজ্যের বাকি অংশে কেন এই প্রকল্প বন্ধ থাকবে? যারা প্রকৃত শ্রমিক, যাঁরা কাজ করছেন বা কাজের অপেক্ষায় রয়েছেন, তাঁদের কেন মজুরি থেকে বঞ্চিত হতে হবে?
প্রকল্পটিকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা সংবিধানসম্মত নয়
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ‘১০০ দিনের কাজ’ প্রকল্প একটি দীর্ঘমেয়াদি এবং জনস্বার্থমূলক উদ্যোগ, যার পুরো অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার দিয়ে থাকে এবং টাকা সরাসরি শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে যায়। অতএব প্রকল্পটিকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা সংবিধানসম্মত নয়।
আরও পড়ুন: Cholera Spread: ওড়িশায় ফের ছড়াচ্ছে কলেরার আতঙ্ক, মৃত ১১!
এই রায়ের পর রাজ্য সরকারের মুখে হাসি ফুটলেও, প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা অনেকটাই নির্ভর করছে কেন্দ্রের শর্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপের উপর। তবে, সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষের কাছে এই রায় এক নিঃশ্বাসে স্বস্তি বয়ে এনেছে, কারণ ‘কাজ’ এবং ‘অধিকার’-এর মধ্যে অবশেষে ফের যোগসূত্র তৈরি হল।