ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশ প্রশাসনে মহিলা পদাধিকারীদের ‘স্যর’ বলে সম্বোধনের যুগের অবসান ঘটতে চলেছে (Bangladesh Situation)। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে চালু হওয়া এই বিতর্কিত প্রথা এবার বাতিল করল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। ঢাকায় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে মহিলা অফিসারদের কী নামে সম্বোধন করা হবে, তা ঠিক করতে গঠিত হয়েছে একটি বিশেষ কমিটি।
কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? (Bangladesh Situation)
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের (Muhammad Yunus) নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়(Bangladesh Situation)। বৈঠকের পরে সচিবালয় একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি করে জানায়, “শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনকালে সরকারি কর্মীদের মহিলা আধিকারিকদের ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করার বিধান ছিল। যা সামাজিক ও সাংগঠনিকভাবে অনুচিত।”
সেই নিয়ম এখন বাতিল করা হচ্ছে এবং নতুন নিয়ম প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে তারা নতুন সম্বোধনের প্রস্তাব জমা দেবে ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদের কাছে।
কারা থাকছেন এই কমিটিতে? (Bangladesh Situation)
এই গুরুত্বপূর্ণ কমিটির নেতৃত্বে আছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী এবং বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান(Bangladesh Situation)। তাঁর সঙ্গে থাকবেন প্রশাসনিক ও ভাষাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞেরা, যারা সামাজিক প্রেক্ষাপটে লিঙ্গ-সমবেদী সম্বোধন বাছাই করবেন।

আরও পড়ুন: Balochistan Bus Attack : বালোচিস্তানে বাস থামিয়ে অপহরণ ও গণহত্যা,ফের আতঙ্কে পাকিস্তান!
কেন এত দিন মহিলা অফিসারদের ‘স্যর’ বলা হত? (Bangladesh Situation)
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, হাসিনা সরকারের আমলে লিঙ্গ নির্বিশেষে একক সম্মানসূচক সম্বোধন হিসেবে ‘স্যর’ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়(Bangladesh Situation)। এমনকী সাংবাদিক ও সরকারি কর্মীদেরও এই নিয়ম মানতে হত। যাঁরা এই বিধান মানতে অস্বীকার করতেন, তাঁদের প্রশাসনিক চাপে পড়তে হত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ নিয়ে নারীবাদী মহল এবং মানবাধিকার কর্মীরা দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছিলেন। তাঁদের যুক্তি, “স্যর” একটি পুরুষতান্ত্রিক উপাধি, যা মহিলাদের পরিচিতি ও স্বাতন্ত্র্যকে অস্বীকার করে।

আরও নিয়ম পরিবর্তনের সম্ভাবনা (Bangladesh Situation)
‘স্যর’ শব্দটি বাতিল ছাড়াও, হাসিনা সরকারের সময় প্রণীত আরও কিছু আইন ও প্রশাসনিক নির্দেশিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য(Bangladesh Situation)। অনেক ‘পুরনো এবং জটিল আইন’ বর্তমানে সমাজ-প্রেক্ষিতে অসঙ্গত ও লিঙ্গবৈষম্যমূলক বলেই মনে করা হচ্ছে। সেগুলির উপরও আগামী দিনে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বাংলাদেশে মহিলা অফিসারদের ‘স্যর’ বলে সম্বোধনের প্রথা এখন ইতিহাস হতে চলেছে। নতুন যুগে প্রবেশ করছে প্রশাসনিক ভাষা ও আচরণ। লিঙ্গ-সমতা, সামাজিক মর্যাদা ও আধুনিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি প্রশাসনিক সংস্কৃতির পথ তৈরি করতে চায় ইউনূস সরকার। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের প্রশাসনিক ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।