ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আজ টলিউডের অনেক কলাকুশলী থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রী (Tollywood in which direction), প্রযোজক-পরিচালকরা ভয়ে বলছেন, “যায় যদি যাক প্রাণ, হীরকের রাজা ভগবান”! প্রতিবাদ করলে ছবির হীরক রাজার মতো হাতে না মারলেও ভাতে মারছে টালিগঞ্জের “হীরক রাজা”! কেননা প্রতিবাদ করলেই বন্ধ হচ্ছে কাজ! তাই টলিউড জুড়ে ধ্বনিত হচ্ছে “কাজ যদি পেতে চান, গান,-হীরকের রাজার জয়গান!”
হারাচ্ছে কৌলিন্য (Tollywood in which direction)
যে বাংলা ফিল্ম এক সময় প্রশংসিত হত দেশে দেশে, মন জয় করতো কোটি কোটি দর্শকের, সেই বাংলা চলচিত্র কৌলিন্য হারিয়ে এখন গভীর সংকটে (Tollywood in which direction)। যে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘শুভ মহরৎ’, গৌতম ঘোষের ‘দেখা’, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘জাতিস্বর’-এর মতো সৃজনশীল এবং বাণিজ্যিক ভাবে সফল বাংলা ছবি তৈরি হয়েছে, তা আজ আর নেই বললেই চলে। আজ বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি,টলিউডের এই পরিস্থিতির জন্য কে বা কারা দায়ী?
সমস্যা কোথায়? (Tollywood in which direction)
টলিউডে ঠিক কী কী সমস্যা হচ্ছে (Tollywood in which direction)? আর এবার দেখবো টলিপাড়ার যে কলাকুশলী, অভিনেতা অভিনেত্রী কিংবা প্রযোজক পরিচালকরা এই সমস্যায় পড়েছেন তারা কী বলছেন? তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কী? কী ভাবে চলছে টালিগঞ্জের এই সিন্ডিকেট রাজ? এমনকি ছবি তৈরিতে সরাসরি টাকা লগ্নি করতে পারছেন না প্রযোজকরা, তাদের উপর আঙুল ঘোরাচ্ছে টলিউডের দাদারা। যেমন কলাকুশলী, অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা ক্যামেরা লাইটের মতো ইকুইভমেন্ট নেওয়ার ক্ষেত্রেও স্বাধীনতা পাচ্ছেন না পরিচালক ও প্রযোজকরা। সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে সিন্ডিকেট রাজ! স্বাধীনভাবে উপযুক্ত কলাকুশলী, অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা লাইট ক্যামেরা না পাওয়ায় ভালো ছবি তৈরি করতে পারছেন না তারা। অভিনেতা-অভিনেত্রী কলাকুশলীদের সুরক্ষার দোহাই দিয়ে চলছে তোলাবাজি!
কমছে প্রযোজক (Tollywood in which direction)
বাংলা সিনেমায় সরাসরি অর্থ লগ্নি না করতে পারায় কমছে প্রযোজকের সংখ্যা! আগে যেখানে প্রতিবছর অনেক নতুন প্রযোজক আসতেন, বিনিয়োগ করতেন, কিন্তু এখন সেই সংখ্যাটা দ্রুত কমছে। ফলে কমছে সিনেমার সংখ্যা, কমছে কাজ! এতে আরও বাড়ছে সিন্ডিকেট রাজের বাড় বাড়ন্ত! ডুবছে টলিউড, হারাচ্ছে বাংলা সিনেমার ঐতিহ্য। যোগ্যরা পাচ্ছে না কাজ, আর অযোগ্যরা টাকার লোভে ইন্ডাস্ট্রিকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
আরও পড়ুন: Train Cancellations: দমদম জংশনে রক্ষণাবেক্ষণ, ফের বাতিল একাধিক লোকাল-দূরপাল্লার ট্রেন
বদলাচ্ছে পেশা (Tollywood in which direction)
বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী, প্রযোজক-পরিচালক কলকুশলীর মতো প্রকৃত শিল্পীরা বাধ্য হয়ে তাদের পেশা বদলে ফেলছে। কেউ চাউমিনের দোকান দিচ্ছেন, আবার কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় শাড়ি বিক্রি করছেন। পুরোনো দিনের টলিউডের গল্প বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলছেন আবেগে। বাংলা সিনেমায় যোগ্য শিল্পীরা ব্রাত্য হতে বসায় দর্শকরাও বঞ্চিত হচ্ছে ভালো সিনেমা থেকে। বাংলা ছবির হাল ফিরবে কীভাবে? সমাধান কোন পথে? বাংলার অভিনেতা-অভিনেত্রী, প্রযোজক-পরিচালক কলকুশলীরা কী আবারও স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবেন? সমস্যা গুলো যেভাবে বাড়ছে তাতে যদি টলিউডের এই পচন খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ না করা যায় তাহলে একদিন রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে টালিগঞ্জ!
ব্যভিচার বন্ধ করতে কারা উদ্দ্যোগী হবে?
কিন্তু এখানেও রয়েছে প্রশ্ন, বিড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাধঁবে কে? মানে এই ব্যভিচার বন্ধ করতে কারা উদ্দ্যোগী হবে? সমস্ত অন্যায় অবিচার কে দমন করে কি জয় হবে শিল্পী আর শিল্পের? টলিগঞ্জের দাদারা কবে বুঝবেন শিল্পী ও শিল্পের কদর? এ প্রসঙ্গে একটা গল্প মনে পড়ছে জানেন! শিলং পাহাড়ে শুটিং চলছে। পাহাড়ি পাথুরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া! একজন ছবির পরিচালক, অন্যজন প্রযোজক। ছবির প্রধান মহিলা চরিত্র যক্ষ্মায় আক্রান্ত। কী হবে তাঁর পরিণতি? ধন্দে পরিচালক। যক্ষ্মায় আক্রান্ত ‘নীতা’ কি বেঁচে থাকবে? নাকি নিতার বাঁচতে চাওয়ার করুণ আকুতি হার মানবে? ঝগড়াটা সেই নিয়েই! তখন দুই রকম শট নিলেও শেষ পর্যন্ত ছবির পরিচালক ঋত্বিক ঘটক সিনেমায় জায়গা দিলেন দ্বিতীয় টাকে! “দাদা, আমি বাঁচতে চাই!”- এই সংলাপে তৈরি হল ‘মেঘে ঢাকা তারা’ নামক এক ইতিহাসের…।
আরও পড়ুন: Weather Update: বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কয়েক ঘণ্টাতেই ভাসবে কোন কোন জেলা?
জিতেছে শিল্প আর শিল্পীদের পরিশ্রম
পুরোনো বাংলা সিনেমার ইতিহাস ঘাটলে এমনই বহু ঘটনা পাওয়া যায়। কিন্তু যতবারই এমন মতবিরোধ তৈরি হয়েছে ততবারই জিতেছে শিল্প আর শিল্পীদের পরিশ্রম। কিন্তু আজ পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা! টালিগঞ্জের শিল্পীদের উপর চাপানো হচ্ছে নিয়মের বেড়াজাল। সেই বেড়াজাল ভেদ করে টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিও এখন বলছে, “দাদা, আমরা বাঁচতে চাই!” কিন্তু সেই আকুতি কি দাদাদের কান পর্যন্ত পৌছবে? সিন্ডিকেটের মেঘ সরিয়ে আজকের নক্ষত্ররাও কি জ্বলে উঠবে? সেই অপেক্ষায় থাকবো আমরা!