ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ফের বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Patharpratima Bomb Blast)। সোমবার রাত ন’টা নাগাদ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা থানার দক্ষিণ রায়পুর তিন নম্বর ভেড়ি এলাকায়। জানা যাচ্ছে বাজি তৈরির সময় হঠাৎ ধরে যায় আগুন। সেই আগুনের তাপে বাড়িতে থাকা একাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটে। ৩ শিশু এবং একই পরিবারের সাতজন সহ একাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা। বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে খবর। পাথরপ্রতিমায় বিস্ফোরণের ঘটনায় পরিবারের বড় ছেলে চন্দ্রকান্ত বণিককে আটক করল পুলিশ।
গোটা পরিবারই শেষ হয়ে গিয়েছে বিস্ফোরণে (Patharpratima Bomb Blast)
আচমকা বিস্ফোরণ ঘটায় বাড়িতে থেকে কেউ বেরিয়ে আসতে পারেননি। চন্দ্রকান্তদের পরিবারে মোট ১১ জন সদস্য ছিলেন। তিন জন বাদে গোটা পরিবারই শেষ হয়ে গিয়েছে বিস্ফোরণে (Patharpratima Bomb Blast)। মৃত্যু হয়েছে পরিবারের বাকি সকলের। চন্দ্রকান্ত এবং তুষারের বাবা অরবিন্দ বণিক (৬৫), ঠাকুরমা প্রভাবতী বণিক (৮০) , চন্দ্রকান্তের স্ত্রী সান্ত্বনা বণিক (২৮), দুই সন্তান অর্ণব বণিক (৯) ও অস্মিতা বণিক (৮ মাস) এবং তুষারের দুই সন্তান অনুষ্কা বণিক (৬) এবং অঙ্কিত বণিকের (৬ মাস) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। তুষারের স্ত্রী রূপা বণিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে তাঁরও মৃত্যু হয়।
প্যাকেটজাত করার সময়েই বিস্ফোরণ (Patharpratima Bomb Blast)
বাড়িতে বাজি প্যাকেটজাত করার সময়েই কোনও ভাবে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে (Patharpratima Bomb Blast)। স্থানীয় সূত্রে খবর, বড় ভাই চন্দ্রকান্তই মূলত এই ব্যবসার বেশির ভাগ কাজকর্মের দেখভাল করতেন। তাঁকে সাহায্য করতেন তুষার। প্রশাসন সূত্রে খবর, বণিক পরিবারের বাজি তৈরির লাইসেন্স রয়েছে। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানাও সে কথাই জানিয়েছেন। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, অনুমোদনপত্র থাকলেও সেখানে অবৈধ বাজিও তৈরি হত। দুর্ঘটনার সময়ে পর পর কয়েক বার বিকট শব্দে শোনা গিয়েছে। এলাকাবাসীদের একাংশের দাবি, সেগুলি শব্দবাজি হতে পারে।
আরও পড়ুন: Birbhum Acid Attack Case: বিয়ের প্রস্তাবে রাজি নয়, প্রেমিকার মুখে অ্য়াসিড ছোড়ে যুবক
বাড়িতেও বেশ কিছু বাজি মজুত?
এ বিষয়ে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর কুমার জানা বলেন, ‘বাজি তৈরি করার সময় হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুরো বাড়িতে আগুন ধরে গিয়েছে। ওই বাড়ির ভিতরে আরও কিছুজন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’ বিধায়ক জানিয়েছেন, বাড়ির কাছেই একটি জায়গায় চন্দ্রকান্তেরা বাজি তৈরি করতেন। তবে বাড়িতেও বেশ কিছু বাজি মজুত ছিল বলে জানিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর অনুমান, বাড়ি থেকেই বাজি বিক্রি করতেন চন্দ্রকান্তেরা। বিধায়কের বক্তব্য, বাড়িতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার ফাটার ফলে ওই শব্দগুলি হয়ে থাকতে পারে।
জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু
ঘটনার পরে বণিক পরিবারের দুই ভাই চন্দ্রকান্ত এবং তুষারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে ঢোলাহাট থানা। ঘরে বিপজ্জনক বস্তু মজুত রাখা, অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা-সহ মোট ছ’টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দমকল আইনেও মামলা রুজু হয়েছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। চন্দ্রকান্ত এবং তাঁর ভাই তুষার বর্তমানে গ্রামেই রয়েছেন। চন্দ্রকান্তকে আটক করা হলেও তাঁকে এখনও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়নি। পুলিশের নজরদারির মধ্যেই রয়েছেন চন্দ্রকান্ত।