ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সুগার বা মিষ্টি(Balance of Sugar Level) জাতীয় খাবার আমাদের নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাসকে আরও মধুর করে তোলে। তবে কতটা খাচ্ছেন মিষ্টি তার উপরেও নির্ভর করে আপনার শরীর। মিষ্টি খাওয়া নিয়ে সবসময়ই দোটানা কাজ করে আমাদের মধ্যে। মিষ্টি খেলেও যেমন সমস্যা, না খেলেও সমস্যা। মিষ্টি বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে সে তো আমরা সবাই জানি কিন্তু কম হলেও কিন্তু হতে পারে বেশ ক্ষতি। বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
শর্করা অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান (Balance of Sugar Level)
এই শর্করা শুধুমাত্র যে মিষ্টি জাতীয় খাবারেই থাকে তা নয়। যে কোনও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারও শরীরে পৌঁছে ভেঙে গিয়ে শর্করায় পরিণত হয়। শর্করা বা মিষ্টি আমাদের দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। এটি শক্তির প্রধান উৎস হলেও অতিরিক্ত বা অপর্যাপ্ত শর্করা গ্রহণ আমাদের শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে(Balance of Sugar Level)। সঠিক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে আমরা এর খারাপ প্রভাবগুলি কমাতে পারি।
শর্করার সঠিক মাত্রা (Balance of Sugar Level)
একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে রোজ ২৩০০ কিলোক্যালোরি শক্তির প্রয়োজন। অর্থাৎ প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট মিলিয়ে মোট শর্করার পরিমাণ হতে হবে ২৩০০ কিলোক্যালোরি। মহিলাদের ক্ষেত্রে হবে ২০০০ কিলোক্যালোরি। রোজের ডায়েটে ৫৫-৬০ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট রোজের খাদ্যাভ্যাসে রাখলে তবেই সব কিছুর ব্যালান্স থাকবে(Balance of Sugar Level)। অল্প পরিমাণে অর্থাৎ একবাটি ভাত, দুটো রুটি কার্বোহাইড্রেটের জোগান হিসাবে রাখা যেতে পারে। আটা, ব্রাউন সুগার ইত্যাদিও অল্প পরিমাণে রাখা যেতে পারে। সপ্তাহে একদিন আলাদাভাবে মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে পুরো সপ্তাহ মিষ্টি না খাওয়াই ভালো।
আরও পড়ুন:Micro Walk: ৩০ মিনিটের বদলে ভাগে ভাগে ৩০ সেকেন্ড হাঁটলেও উপকার, বলছেন গবেষকেরা
শর্করার ঘাটতিতে ক্ষতি
দেহে পর্যাপ্ত শর্করা(Balance of Sugar Level) না থাকলে ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। শর্করা মস্তিষ্কের জন্য প্রধান জ্বালানি, তাই এর অভাবে মনোযোগের ঘাটতি বা স্মৃতিশক্তির সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে মাথা ঘোরা, ঝিমুনি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। যাকে বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া।
শর্করার পরিমান অতিরিক্ত হলে কী হবে?
অতিরিক্ত শর্করা দেহে চর্বি হিসাবে জমা হয় এবং স্থূলতার কারণ। ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত শর্করা গ্রহণ ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা হ্রাসের কারণ হতে পারে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত শর্করা খেলে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হৃদরোগের কারণ হতে পারে। মিষ্টি বেশি খেলে ক্যাভিটি বা দাঁতের ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
শর্করার সঠিক ব্যালেন্স করবেন কীভাবে?
মিষ্টি ফল যেমন আপেল, কমলালেবু, আম এবং শাকসবজি থেকে শর্করা গ্রহণ করুন। এতে প্রাকৃতিক ফাইবার থাকায় শর্করার শোষণ ধীরে হয়। প্যাকেটজাত খাবার বা সফট ড্রিঙ্কে অতিরিক্ত চিনি থাকে। এগুলি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। দিনে ২০০-৩০০ গ্রাম শর্করা গ্রহণ যথেষ্ট। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই পরিমাণ ঠিক করুন।
আরও পড়ুন:Warm Water : সকালে খালি পেটে গরম জল খাওয়া উপকারীতা জানেন? জানলে চমকে যাবেন আপনি
মিষ্টি খাবার খাওয়ার সময় ঠিক করুন
দিনের প্রথম ভাগে শর্করা গ্রহণ করুন, কারণ সকালের দিকে আমাদের শরীরে বেশি শক্তি প্রয়োজন পড়ে। প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত শরীরচর্চা ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ডাক্তারের পরামর্শ
যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন বা মিষ্টি বেশি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য নিয়ম মেনে চলা জরুরি। সঠিক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। এই ব্যালান্স করার ক্ষমতা বিগড়ে গেলেই রক্তে শর্করার মাত্রা ডায়াবেটিসের পাশাপাশি একাধিক অসুখের ঝুঁকি ডেকে আনে। তাই সকলেরই একটা পরিমিত পরিমাণে সুগার বা শর্করা খাওয়া প্রয়োজন। বিশেষত পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে তাঁদের আগাম সতর্ক থাকতে বলছেন ডাক্তার।