ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে ফের রক্তাক্ত হিংসা। একটি যাত্রিবাহী বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে অপহরণ করার পর ন’জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে(Balochistan Bus Attack)। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা পাকিস্তানে। শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বালোচিস্তানের প্রাদেশিক সরকার। এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও, বালোচ স্বাধীনতাপন্থী বিদ্রোহীদের দিকেই আঙুল উঠছে।
কী ঘটেছে? (Balochistan Bus Attack)
প্রাদেশিক মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝোভ এবং লরালাই জেলার সীমানা সংলগ্ন সুর-ডাকাই এলাকায় ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা(Balochistan Bus Attack)। দুটি যাত্রীবোঝাই বাসকে পথ আটকায় সশস্ত্র অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। যাত্রীদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে জোর করে নামিয়ে কাছের পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁদের গুলিতে ঝাঁঝরা করে হত্যা করা হয়।
আর এক সরকারি আধিকারিক নাভিদ আলম জানান, নিহত ন’জনের শরীরেই গুলির চিহ্ন রয়েছে। মৃতদেহগুলি রাতভর তল্লাশির পরে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন।
সন্দেহের তির বালোচ বিদ্রোহীদের দিকে (Balochistan Bus Attack)
ঘটনার দায় কেউ না নিলেও, বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)-এর দিকেই নজর প্রশাসনের(Balochistan Bus Attack)। আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্ত ঘেঁষা বালোচিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্রোহী বালোচদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বালোচিস্তান থেকে মূল্যবান খনিজ সম্পদ লুটে পঞ্জাবে পাচার করছে পাক সরকার, অথচ অঞ্চলটির উন্নয়নে কোনও উদ্যোগই নেই।
বিদ্রোহীরা বারবার সরকারি সম্পত্তি, রেললাইন ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে আসছে। মার্চ মাসেই পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে বোমা ও গুলির হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ২৫ জনের। ওই ট্রেনটি মাশকাফ সুড়ঙ্গে ঢোকার সময় বিস্ফোরণের শিকার হয়েছিল। ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছিল বিদ্রোহীরা।

সামরিক অভিযান, তবে থামছে না হিংসা (Balochistan Bus Attack)
বালোচিস্তানে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোর নিয়মিত অভিযান চালালেও বিদ্রোহ দমন করা যাচ্ছে না। এই হিংসা থামাতে পাক সেনার উপস্থিতি ক্রমশ বাড়ানো হলেও, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

আরও পড়ুন: Donald Trump : গণছাঁটাইয়ের পথে আমেরিকার বিদেশ দফতর! ব্যয় সংকোচ নাকি রাজনৈতিক রদবদল?
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া নেই (Balochistan Bus Attack)
এই হামলার জেরে এখনো পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহলের কোনও সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসেনি(Balochistan Bus Attack)। তবে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও প্রান্তিক প্রদেশগুলিতে নিপীড়নের অভিযোগ বারবার উঠেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলির তরফে।
এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট, পাকিস্তানের (Shehbaz Sharif) অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও জটিল হয়ে উঠছে। শুধু সামরিক পদক্ষেপ নয়, বালোচদের দীর্ঘদিনের অবহেলিত দাবিগুলি সমাধানে রাজনৈতিক উদ্যোগ না নিলে, এই রক্তচক্র থামার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তবে তার আগেই সাধারণ যাত্রীরা যেন না হন রাজনীতির বলি — এটাই এখন প্রধান প্রশ্ন।