ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বড়সড় ধাক্কা রাজ্য বিজেপির। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন (John Barla joined TMC)। তাঁর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারও।
জন বার্লার দলবদল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। অবশেষে সেই জল্পনার ইতি ঘটল তৃণমূল ভবনে। অনুষ্ঠানস্থলে জন বার্লাকে পাশে বসিয়ে সুব্রত বক্সী জানান, বার্লা বিজেপির রাজ্য রাজনীতিতে একপ্রকার হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে যে উন্নয়ন হয়েছে, তাতেই উৎসাহিত হয়ে তিনি তৃণমূলে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেই অনুরোধকে সম্মান জানিয়েই তাঁকে দলে স্বাগত জানানো হয়েছে বলে জানান বক্সী।
বিজেপিকে কড়া আক্রমণ, দলত্যাগের জন্য বিরোধী নেতাকে দায় (John Barla joined TMC)
তৃণমূলে যোগ দিয়েই প্রাক্তন দল বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খোলেন জন বার্লা। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য বিজেপি এখন দিশাহীন এবং দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে মতানৈক্য প্রবল। নিজের দলত্যাগের পেছনে তিনি সরাসরি বিরোধী দলনেতার ভূমিকাকেই দায়ী করেন।
জন বার্লা বলেন, রাজ্য বিজেপির নেতারা জনসংযোগ হারিয়ে ফেলেছেন এবং মানুষের প্রকৃত সমস্যাগুলোর প্রতি কোনও মনোযোগ নেই।
উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য মমতাকে ধন্যবাদ (John Barla joined TMC)
এই প্রথম নয়, মাসকয়েক আগেই জন বার্লাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক সরকারি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল। যদিও তখন তিনি সরকারি মঞ্চে থাকায় দলবদল করতে পারেননি। এবার সব নিয়ম মেনেই তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন তিনি।
উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে জন বার্লা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে কাজ করেছেন উত্তরবঙ্গের জন্য, তা আগে কেউ করেনি। আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।”
তৃণমূলের নতুন রণনীতি, বিজেপির ঘাঁটিতে চপেটাঘাত (John Barla joined TMC)
২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের চা-বাগান এলাকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ২০২১-এ হারের পর শাসক তৃণমূল সেই অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধারে সক্রিয় হয়। জন বার্লার মতো প্রভাবশালী নেতার দলবদল সেই অভিযানে তৃণমূলের বড় সাফল্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই দলবদলের মাধ্যমে একদিকে যেমন তৃণমূল উত্তরবঙ্গে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করতে চাইছে, অন্যদিকে রাজ্য বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ সংকটও প্রকাশ্যে চলে এলো।
জন বার্লার দলবদল নিঃসন্দেহে ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে এক বড় রাজনৈতিক বার্তা। এতে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ভিত শক্ত হতে পারে, আর বিজেপির জন্য এটা নতুন চ্যালেঞ্জের সূচনা।