ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের আগে দলীয় জল্পনা (BJP State President) তুঙ্গে। সোমবার বিজেপির সমন্বয় বৈঠক চলাকালীন দিল্লির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাসভবন এবং মেছো হাটের তুলনা ঘুরে ফিরে আসছিল। বৈঠকের প্রথম দিকে, দক্ষিণবঙ্গের এক সাংসদ পরবর্তী রাজ্য সভাপতির জন্য দিলীপ ঘোষের নাম প্রস্তাব করতেই সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী সহ বেশ কিছু নেতা রেগে ওঠেন। তখন সাংসদদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। সূত্র মারফত এই খবরই এসেছে প্রকাশ্যে।
সভাপতির পদে কে? (BJP State President)
রাজ্য সভাপতি পদে সুকান্ত মজুমদারকে আরও এক বছর রাখার পক্ষে মত পোষণ করেন (BJP State President) দক্ষিণবঙ্গের আরেক সাংসদ। এছাড়া, বৈঠকের আগে শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই নিয়ে আরও বেশি জল্পনা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও চাইছেন, রাজ্য বিজেপির শীর্ষনেতারা একত্রে বৈঠক করে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ান, যাতে রাজ্য সভাপতি নির্বাচন আগেই সুরাহা পায়।
শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক (BJP State President)
বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সুকান্ত ও শুভেন্দুর সাথে একাধিক বার আলাদা আলাদা (BJP State President) বৈঠক করেছে এবং তারা দ্রুত নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন। এজন্য সাংসদদের নিয়ে দুই নেতার বৈঠকও জরুরি হয়ে পড়েছে, যা রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের আগেই অনুষ্ঠিত হবে।
দিলীপ ঘোষ নাকি সুকান্ত মজুমদার?
গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সুকান্ত মজুমদারকে আগামী নির্বাচনের জন্য আরও এক বছর রাজ্য সভাপতি রাখা হতে পারে। কিন্তু অন্য একটি মহল মনে করছে, রাজ্য সভাপতির পদে সুকান্তকে রাখা নাও হতে পারে এবং এর পরিবর্তে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পুনরায় দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

বিজেপির অন্দরেই দ্বন্দ্ব!
অনেকেই মনে করছেন বিজেপি নেতাদের মধ্যে বর্তমানে গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। দলের কিছু অংশ মনে করছে, যদি রাজ্য সভাপতি বদল করা হয়, তাহলে পদ্ম শিবিরের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে। তবে কিছু দলীয় নেতার মতে, একবছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ায় সুকান্তকেই রাখা হতে পারে। তবে সিদ্ধান্ত সুরাহা করতে বিজেপি সর্বশেষ সংঘের অনুমোদন প্রয়োজন।
তালিকায় আছেন কারা?
রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ নামগুলির মধ্যে শমীক ভট্টাচার্য, দেবশ্রী চৌধুরি, ও অগ্নিমিত্রা পাল আছেন। দিল্লির নেতৃত্ব চাইছে, দলের মধ্যে ভারসাম্য রেখে নতুন সভাপতি নির্বাচন করা হোক। কিছু অংশ আবার মনে করছে, সুকান্ত মজুমদারকেই রাখা হবে, তবে যদি না হয়, দিলীপ ঘোষই সম্ভবত নতুন সভাপতি হতে পারেন।
বিধানসভায় দিলীপ ঘোষ
এদিকে, রাজ্য সভাপতি পদ নিয়ে চলা জল্পনার মাঝেই আজ বিধানসভায় যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। এছাড়া, দিলীপ বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করবেন। তার সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় রাজ্য বিজেপিতে নতুন গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৪৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ২৫টি জেলার সভাপতি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
বৈঠক শেষে নৈশভোজ
সুকান্ত মজুমদারের বাসভবনে বৈঠক শেষে একটি নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। মেনুতে দিল্লির কোনও ছোঁয়া ছিল না, বরং ছিল বাঙালি খাবারের প্রাধান্য। সূত্রের খবর মেনুতে ছিল কাতলা মাছের কালিয়া, চুনো মাছের ঝাল এবং খাসির মাংস। পাশাপাশি, কিছু সাংসদ নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করেন, তাদের জন্য ডাল, সবজি ও পনিরের ব্যবস্থা ছিল। শেষ পাতে চাটনি এবং গুড়ের মিষ্টি ছিল। বাঙালিয়ানার ছোঁয়া নিশ্চিত করতে, দিল্লিতে একটি বাঙালি ক্যাটারার নির্বাচিত করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।