ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই ইদানিং বেছে নিচ্ছেন নীল চা(Blue Tea)। অপরাজিত ফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরি হয় ব্লু টি। চায়ের দুনিয়ায় সাড়া ফেলেছে এই নীল রঙা চা। স্বাদও যেমন চমৎকার, তেমনই স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। একই ভাবে, ত্বকের যত্নেও দুর্দান্ত কাজ করে। এই চা খেলে ও মুখে মাখলে হতে পারে নানা উপকার। এ চায়ের উপকারী গুণের কথা জানলে সবার উপরে এই চা কে প্রাধান্য দেবেন আপনিও।
কচি চাপাতার কুঁড়ি ও অপরাজিতা ফুল (Blue Tea)
ফুল ব্যবহার করে চা তৈরি করা নতুন বিষয় নয়। ক্যামোমাইলের চা এই দৌড়ে সবচেয়ে আগে রয়েছে। সেখানেই এবার যুক্ত হল নীল চা। এই নীল চা(Blue Tea) অপরাজিত ফুল থেকে তৈরি করা। বাজারে পেয়ে যেতে পারেন অনায়াসেই এই নীল চা। আপনার ছাদ বাগানে যদি অপরাজিত ফুল ফুটে থাকে তাহলে এই চা আলাদা করে আর কেনার প্রয়োজন নেই। ভারত ও বাংলাদেশে খুব কম পরিসরে এই চা তৈরি হয়ে থাকে। সাধারণত অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে বিশেষ ধরনের কচি চাপাতার কুঁড়ি ও অপরাজিতা ফুলের অংশবিশেষ একসঙ্গে মিশিয়ে এই বিশেষ চা তৈরি করা হয়।

বিভিন্ন সমস্যায় নীল চা (Blue Tea)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষায়, চর্বি কমাতে, মেদ ঝরাতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে, শরীরের কোলাজেনের মাত্রা বাড়াতে, সৌন্দর্য বাড়াতে, ত্বকের যত্নে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এই চা(Blue Tea) অনেক কার্যকরী। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মুটিয়ে যাওয়ার কারণে যকৃতের যেসব সমস্যা দেখা দেয়, সেগুলো প্রতিরোধে নীল চা বেশ উপকারী।
মানসিক চাপ কমাতে
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এই অপরাজিত ফুলের চা(Blue Tea)। এতে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও কমে। এই চা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। মানসিক উদ্বেগ কেটে যায়। মানসিক হতাশা দূর হয়। স্মৃতিশক্তি ক্ষুরধার হয়। দিনের শেষেও যদি নীল চা পান করেন তাহলে আরাম পাবেন।
আরও পড়ুন:Chia Seeds: চিয়া সিড উপকারী হলেও অতিরিক্ত খেলে হতে পারে সমস্যা
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে
নীল চা পান করলে দৃষ্টিশক্তিও বাড়ে। চোখের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে নীল চা। রেটিনাল ড্যামেজ, ম্যাক্যুলার ডিজেনারেশন, গ্লকোমা, ঝাপসা দৃষ্টি-সহ একাধিক সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিসের সমস্যায়
অ্যান্টি-ডায়াবেটিক গুণাগুণ- নীল চা খেলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিসের সমস্যা না হয়। প্রতিদিন নীল চা খেলে খিদেও কমে লাগে। এনার্জি দেয়- এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সারাদিন শরীরকে সতেজ রাখে। প্রতিদিন এক কাপ নীল চা পান করলে ক্লান্তিবোধ হয় না।

ডিপ্রেশন দূর করে
দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন দূর করে- নীল চায়ে উপস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তা উদ্বেগ কমায়। স্ট্রেস দূরে রাখতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে নীল চা। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। পেটের পেশির সচলতা বজায় থাকে। মেটাবলিজমের হার বৃদ্ধি পায়। কৃমি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
আরও পড়ুন:Cooking Oil: খাবার তেল থেকে হতে পারে শরীরে ক্ষতি, সতর্ক না হলেই বিপদ
ওজন কমাতে
ওজন কমাতে সকালে এই চা পান করুন। কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার ওজন কমবে। চর্বি পোড়াতে এই চা খুবই উপকারী।চায়ে ক্যাটেচিন থাকে, যার কারণে পেটের চর্বি বার্ন করতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। উষ্ণ জলে সিদ্ধ অপরাজিতা ফুল দিয়ে পান করলে পরিপাকতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি কার্যকর উপায় বলে মনে করা হয়।
ত্বকের যত্নে
নিয়মিত ব্লু টি খেলে ত্বক সূর্যালোকের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকবে। নীল চায়ের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে। এতে ত্বকে দাগছোপ, বলিরেখার সমস্যা কমে যায়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে চামড়া কুঁচকে যায় না। নীল চা ত্বককে মসৃণ ও নরম রাখে। নিয়মিত ব্লু টি খেলে ত্বক হাইড্রেট থাকে। পাশাপাশি ত্বক অনেক বেশি সতেজ ও উজ্জ্বল দেখায়।