ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার (ICDS) নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে মোট শূন্যপদের ৫০ শতাংশ পূরণ করতে হবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে থেকে পদোন্নতির মাধ্যমেই। বাকি ৫০ শতাংশ বাইরে থেকে নিয়োগ করা যাবে। সিঙ্গেল বেঞ্চের আগের রায়কেই বহাল রেখে রাজ্যকে এই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি আইসিডিএস (ICDS) সুপারভাইজার নিয়োগে জট কাটলো। রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতি মামলায় হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট শূন্যপদের ৫০ শতাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের থেকে নিতে হবে। বাকি ৫০ শতাংশ বাইরে থেকে নিয়োগ করতে পারবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ (ICDS)
বছর দেড়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার নিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, অঙ্গনওয়াড়িতে সুপারভাইজার নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ শূন্যপদে পদোন্নতির ভিত্তিতেই অঙ্গনওয়াড়ির (ICDS) কর্মীদের মধ্যে থেকেই নিতে হবে। আর বাকি ৫০ শতাংশ বাইরে থেকে নিয়োগ করা যাবে।
কিন্তু, হাইকোর্টের সেই নির্দেশ মানা হয়নি। ফলে অঙ্গনওয়াড়িতে কর্মরত কর্মীরা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টের উচ্চ বেঞ্চে ফের মামলা হয়। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। মামলাকারীরা প্রথমে বিষয়টি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে তা বিচারপতি চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে পৌঁছয়।
শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী আশিস চৌধুরী আদালতে অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মানছে না। ২০১৫ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার (ICDS) নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট শূন্যপদের ৫০ শতাংশ নিয়োগ করতে হবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে থেকেই। বাকি ৫০ শতাংশ নেওয়া যাবে বাইরে থেকে।
কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের নির্দেশ না মেনে ৭৫ শতাংশই বাইরে থেকে নিয়োগ করেছে। ফলে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা পদোন্নতির ভিত্তিতে সুপারভাইজার পদের জন্য পরীক্ষাও দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকার ১১৫২ জনের একটি মেধাতালিকাও প্রকাশ করে। কিন্তু পরে সেই প্যানেল প্রকাশ না করেই সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু রাখে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: Kolkata Book Fair 2025: কলকাতা বইমেলায় স্টল দিতে পারবে না বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আদালতে খারিজ আর্জি
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের দেওয়া আগের নির্দেশকেই বহাল রাখলেন। অর্থাৎ, ২০১৫ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার (ICDS) নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট শূন্যপদের ৫০ শতাংশই নিতে হবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে থেকে। বাকি ৫০ শতাংশ বাইরে থেকে নেওয়া যাবে। ফলে এবার পদোন্নতির আশা দেখছেন রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
তবে, হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশের পর অঙ্গনওয়াড়িতে সুপারভাইজার নিয়োগে সাময়িকভাবে জট কাটলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কারণ, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য যদি ডিএ এবং ওবিসি সার্টিফিকেট মামলার মতো এক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়, তাহলে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা অঙ্গনওয়াড়িতে সুপারভাইজার পদে নিয়োগ থমকে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।