ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বড়দের মতো ছোট বাচ্চারাও(Child Care Tips) রেগে যেতে পারে। এবং এটা স্বাভাবিক। বাবা-মা কাজে সারাদিন বাইরে। দেখভালের লোকের কাছে একা বেড়ে ওঠে সন্তান। ফলে আচরণগত নানা সমস্যা দেখা যায় তাদের মধ্যে। বিশেষত অল্পতেই রেগে যাওয়ার সমস্যা কিংবা অতিরিক্ত জেদি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ওই পরিস্থিতিতে কীভাবে সন্তানকে সামলাবেন, তা বুঝতে পারেন না অনেক বাবা-মা। তবে তাদের রাগ কমানো একান্তই জরুরি। এ বিষয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
রাগের কারণ বোঝার চেষ্টা করুন (Child Care Tips)
সন্তান রাগ করলে উল্টে তাদের উপর রাগারাগি না করে, কেন তারা রাগ করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন(Child Care Tips)। কারণ বাচ্চাদের রাগের পেছনে অন্য কোনও গভীর সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পারে। অবসাদ, অভিভাবকদের রাগী স্বভাব, ব্যবহার সংক্রান্ত সমস্যা, আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না-পারা, পিয়ার প্রেশার, হতাশায়, বুলিংয়ের কারণে অথবা অসাফল্য বাচ্চাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করতে পারে। বাচ্চারা কেন রাগ করছে, তা বুঝতে হবে সবার আগে। কোনও অভ্যাস, ঘটনা, কার্যকলাপের কারণে তারা রেগে যাচ্ছে কী না, তা খুঁজে বের করুন। কারণ জানা থাকলে তাদের রাগ শান্ত করা যাবে ও এতে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
কোন পরিস্থিতিতে রাগ হয় চিনুন (Child Care Tips)
কোনও পরিস্থিতি বা ঘটনা বার বার সন্তানের রাগের কারণ হয়ে দাঁড়ালে তা দূর করার চেষ্টা করুন(Child Care Tips)। অসাফল্য সন্তানের রাগের কারণ হলে শিক্ষকের সঙ্গে এ বিষয় আলোচনা করুন। প্রয়োজনে অতিরিক্ত টিউশান দিন।
আরও পড়ুন:Morning Routine: সাতসকালে এই কাজগুলো ‘না’, বিপদ আসতে পারে জীবনে
পরিস্থিতি বোঝান
আপনার খুদে কিছুটা শান্ত হয়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি সম্পর্কে বোঝান(Child Care Tips)। যে বিষয়টিতে সে এত রেগে গেল, কান্নাকাটি করল, তা ঘটনাক্রম মিলিয়ে আলোচনা করুন। খুদেকে বোঝান সেই সময় সে যা আচরণ করল, তা হয়তো করার প্রয়োজন ছিল না। অন্য কৌশলেও যে ওই পরিস্থিতি সে সামলাতে পারত, তা বুঝিয়ে বলুন।
রেগে গেলে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখুন
সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন, যখন সে কোনও বিষয়ে বিরক্ত হচ্ছে, রেগে যাচ্ছে, তখন কীভাবে নিজেকে অন্য কিছুতে ব্যস্ত রাখবে। সেক্ষেত্রে তাকে অন্য কোনও পছন্দসই কাজ করতে বলতে পারেন। তাহলে দেখবেন আচমকা অতিরিক্ত রেগে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে আপনার সন্তান।
সন্তানের সাথে আপনিও রেগে যাবেন না
সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে আপনিও রেগে যাবেন না। সন্তান মেজাজ হারালো মানেই আপনাকে চিৎকার করতে হবে, তা নয়। প্রথমে খুদেকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরুন। দেখবেন, তাতেই সে খানিক নিজেকে সামলে নিয়েছে। এরপর সে কেঁদে ফেলতে পারে। আপনি তাকে বকাঝকা করে কান্নাকাটি করতে বারণ করবেন না।
ভালো কাজের প্রশংসা করুন
আপনার সন্তান ভালো ব্যবহার করলে, তাদের প্রশংসা করতে ভুলবেন না। সমীক্ষা অনুযায়ী অভিভাবকরা বাচ্চাদের ভালো ব্যবহারের জন্য প্রশংসা করলে তাদের মনে রাগ বা কোনও নেতিবাতক চিন্তাভাবনা জন্ম নেবে না। কোনও বন্ধু বা অন্য কোনও ব্যক্তির কারণে রাগ করলে তাদের মধ্যে শীঘ্র মিটমাট করিয়ে নিন।
আরও পড়ুন:Beauty Benefits Of Eggs : শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে ত্বক? ডিমেই রয়েছে সমস্যার সমাধান
রেগে অন্যের প্রতি খারাপ ব্যবহার করতে আটকান
রেগে গিয়ে ভুল শব্দ বললে বা ভুল পদক্ষেপ করলে, তাকে তৎক্ষণাৎ আটকান। তারা যতক্ষণ রেগে থাকবে, তাদের বকাঝকা করবেন না। শান্ত হওয়ার পর বোঝান যে অপশব্দ ব্যবহার করা বা হিংস্র হওয়া উচিত নয়। এর ফলে অপর ব্যক্তি কষ্ট পেতে পারে। আবার রাগের মাথায় সে অন্যের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করে, তেমনই যদি কেউ তার সঙ্গে করে, তা হলে কেমন লাগবে, তাও নিজের সন্তানকে ভেবে দেখতে বলুন।
রিভার্স কাউন্ট প্রক্রিয়া
রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদের উল্টো গণনা করতে, গভীর শ্বাস নিতে বলুন। সমীক্ষা অনুযায়ী রেগে গেলে ১০ থেকে ১ পর্যন্ত রিভার্স কাউন্ট করলে ও গভীর শ্বাস নিলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
নিজেকে পরিবর্তন করুন
আপনিই সন্তানের রোল মডেল। কোন পরিস্থিতিতে আপনি কেমন আচরণ করছেন, তা দেখেই সন্তান বেড়ে ওঠে। তাই খুব রেগে চিৎকার করার প্রবণতা থাকলে, তা এখনই পরিত্যাগ করুন। যেকোনও পরিস্থিতিতে শান্তভাবে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করুন। আপনার দেখাদেখি সন্তানও রাগ নিয়ন্ত্রণে করতে শিখে যাবে।