ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কোচবিহারের দিনহাটার ভেটাগুড়িতে জোড়া খুন(Cooch Behar Incident)। মঙ্গলবার রাত ১০ টা নাগাদ দিনহাটার ভেটাগুড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগরমণ্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
খুন হয়েছে কারা? (Cooch Behar Incident)
জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম ইউসুফ মিয়া, বয়স ৫৫ ও হাসানুর রহমান, যার বয়স ৩৫। দুজনইে ভেটাগুড়ি দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা(Cooch Behar Incident)। মঙ্গলবার রাতে দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তার। দেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
কী বলছেন স্থানীয়রা? (Cooch Behar Incident)
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ নগরমণ্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায় একে অপরের সঙ্গে বচসায় জড়ায়। তারপর দুজন দুজনকে ছুরি মারে বলে অভিযোগ(Cooch Behar Incident)। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জানান, যারা খুন হয়েছে তারা দুজনে কয়েকমাস আগে চার বছর জেল খেটে বাড়িতে আসেন। এখন তাদের মধ্যে কোন লেনদেনের ব্যাপার রয়েছে কি না তা জানি না। শুনেছি তারা দুজনে নাকি একসাথে একই জেলে ছিলেন। আজ কে কাকে খুন করলো তা বলতে পারব না।
আরও পড়ুন:Awas Yojana at Memari: ‘বাংলার বাড়ি’র টাকা থেকে ‘উন্নয়ন ফি’? অভিযোগে উত্তাল মেমারি
কী পদক্ষেপ পুলিশের?
খবর পেয়ে দিনহাটার এসডিপিও ধীমান মিত্র ও দিনহাটা থানার আইসি জয়দীপ মোদকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী নগর মণ্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায় যান(Cooch Behar Incident)। জোড়া খুনের তদন্ত চলছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের মধ্যে পুরনো দ্বন্দ্ব ছিল। তা নিয়ে বচসার সময় ওই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের অনুমান। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে ছুরি বা অন্য কোনও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। তাই অনেকের অনুমান, খুনের ঘটনায় তৃতীয় কোনও ব্যক্তির যোগ থাকলেও থাকতে পারে।
ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ইউসুফ ও হাসানুর
কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ১২ বছর আগে মাথাভাঙায় একটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ইউসুফ এবং হাসানুর। সেই সময় দু’জনেরই জেল হেফাজত হয়েছিল। কিছু দিন পরে হাসানুর জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। জেলমুক্তির পরে ইউসুফের স্ত্রীকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ইউসুফের স্ত্রী তাতে রাজি হননি। পুলিশ জানতে পেরেছে, ইউসুফের স্ত্রী রাজি না হওয়ায় তাঁকে সেই সময় হেনস্থা করেছিলেন হাসানুর। এর পর অন্য একটি মামলায় ফের তিনি গ্রেফতার হন। পাঁচ বছর জেল হেফাজতেও ছিলেন। সেই জেলেও ইউসুফ এবং হাসানুরের মধ্যে শত্রুতা তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন:Bankura News : ট্রাইব টিভি বাংলার খবরের জের, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জল পৌঁছল আদিবাসী গ্রামে
কী বলছেন পুলিশ কর্তারা?
দিনহাটার এসডিপিও ধীমান মিত্র বলেন, “দুজনেই মৃত্যু হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সুপার আরও বলছেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, মদ্যপ অবস্থায় বচসা হয়েছিল। সেই সময়েই হামলা হয়। প্রচুর রক্ত ঝরেই মৃত্যু বলে মনে করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তবে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।“
স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বললেন হাসানুরের স্ত্রী
মৃত হাসানুর রহমানের স্ত্রী সাহেরা বানু বলেন, “আমাকে পাশের বাড়ির একজন গিয়ে বলল যে তোমার স্বামীকে কেউ ছুরি মেরেছে। আমি শোনামাত্র ছুটে গিয়ে দেখি জমিতে পড়ে রয়েছে। পরে তাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ডাক্তার জানান ওর মৃত্যু হয়েছে। একটা পুরনো মামলা নিয়ে অনেক দিন ধরেই আমার স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। হয়তো সেই কারণেই আমার স্বামীকে খুন হতে হল।”