ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ঘাটালের দেওয়ানচক -১ গ্রাম পঞ্চায়েতের (Dewanchak-I Gram Panchayat) কনকপুরে কনকপুর ব্রিজের (KANAKPUR BRIDGE) শিলান্যাস করেছিলেন সাংসদ দেব। কিন্তু চার বছর কেটে গেলেও এখনো শুরুই হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ (Ghatal Bridge Incident)। এবার সেই ভগ্নপ্রায় বিপদজনক সেতু থেকে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারালেন গ্রামের পুরোহিত। ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
সেতু থেকে পড়ে মৃত্যু (Ghatal Bridge Incident)
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভগ্নপ্রায় কাঠের সেতু থেকে জলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় ওই গ্রামের এক পুরোহিতের। মৃতের নাম নিশিথ চক্রবর্তী, বয়স ৪১। নিশীথবাবু দাসপুর থানার গুড়লিতে একটি যজমান বাড়িতে পুজো করতে গিয়েছিলেন। রাতে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু তিনি বাড়ি পৌঁছননি। এদিন সকাল থেকেই তাঁকে খোঁজা শুরু হয়। কনকপুরের বাসিন্দারা জানান নিশীথবাবুকে কোথাও না পেয়ে অবশেষে গ্রামবাসীরা খালের জলে তল্লাশি শুরু করেন। তখনই তাঁর দেহ উদ্ধার হয় (Ghatal Bridge Incident)। পুলিস জানিয়েছে, বুধবার রাতে বাড়ি ফেরার সময় নিশীথবাবু কোনওভাবে জলে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি সাঁতার জানতেন না। ফলে জলে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয়।
গ্রামবাসীদের দাবি (Ghatal Bridge Incident)
এই ঘটনায় এলাকার স্থানীয় মানুষজন ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, কাঠের ওই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দিয়ে বহু মানুষজন চলাচল করে। কাঠের সেতুটি অনেকদিন ধরেই চলাচলের অনুপযুক্ত ছিল। গত বন্যায় সেতুটি ভেঙে গিয়ে আরো খারাপ অবস্থা হয়। স্থানীয়রা পঞ্চায়েতের কাছে বারবার দাবি জানালেও সেতুটি সংস্কার করা হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিক সময়ে কংক্রিটের সেতু তৈরি হলে এই বিপত্তি হতো না (Ghatal Bridge Incident)। গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তরুণ সামন্তর ওই গ্রামেই বাড়ি। তিনিও সবই জানেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
আরও পড়ুন: প্রধানের চেয়ারে বসে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ, ভিডিয়ো ছড়াতেই শোরগোল
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ
এই ঘটনায় কয়েকশ গ্রামবাসী মৃত ব্যক্তির পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে এবং অনতিবিলম্বে ভাঙা কাঠের সেতুর পরিবর্তে পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
কনকপুরের সেতুটির বর্তমান অবস্থা ও গুরুত্ব
কনকপুরের ওই সেতুটি কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি। একটি বাইক গেলেই দুলতে শুরু করে। চকলছিপুর, বাঘাগেড়িয়া, কনকপুর, শোলাগেড়িয়া, ইসলামপুর, নারায়ণপুর সহ ২০-২৫টি গ্রামের মানুষ এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। পাকা সেতু হলে বাইক, ছোট গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে। ফলে ওই সমস্ত গ্রাম থেকে দাসপুরের দূরত্ব অন্তত ৩০ কিলোমিটার কমে যাবে। ওই কাঠের সেতুর একদিকে পিচ রাস্তা অন্যদিকে ঢালাই রাস্তা। ওই স্থানে পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সাংসদ দেব পাকা ব্রিজ নির্মাণের জন্য শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত পাকা ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রশাসনিক কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’ আরও ৫ লক্ষ মহিলা, রাজকোষের বাড়তি খরচ ৫২ কোটি
পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির দুঃখপ্রকাশ
সেতু থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে ঘাটালের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিকাশ কর জানান, আমরা এই কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী তবে দ্রুত এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।