ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: স্বাধীনতা পরবর্তী দিনগুলিতে চরম দারিদ্র্যকে সঙ্গে নিয়ে দিনযাপন করেছেন নিরালায়।বটুকেশ্বর (Batukeshwar Dutt) জাতীয় বীর হিসেবে মর্যাদা পেলেও এই বঙ্গে প্রায় উপেক্ষিতই ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বটুকেশ্বর-চর্চা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি সংগঠিতভাবে বটুকেশ্বর স্মৃতি (Batukeshwar Dutt) সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছেন এলাকার মানুষ। ১১৫ তম জন্মদিনে তাঁর অবদান স্মরণে ইতিহাস মেলার আয়োজন।
স্বাধীনতা সংগ্রাম (Batukeshwar Dutt)
দেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করতে যে সকল তাজাপ্রাণ নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তাঁদেরই একজন বটুকেশ্বর (Batukeshwar Dutt)। সূর্য সেন, ভগৎ সিং, প্রীতিলতা, কল্পনা, রাজগুরু, সুকদেবদের পথেরই পথিক বটুকেশ্বর দত্ত। বটুকেশ্বর দত্তের ১১৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত স্মরণে ইতিহাস মেলা (Batukeshwar Dutt) ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয় সোমবার।
স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা (Batukeshwar Dutt)
ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় চরিত্র, বটুকেশ্বর দত্ত। যাঁর সাহসিকতা এবং ত্যাগ জাতির স্বাধীনতার সংগ্রামে অমূল্য অবদান রেখেছে, তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা (Batukeshwar Dutt) নিবেদন করতে বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে তিন দিন ব্যাপী ইতিহাস মেলার আয়োজন। সোমবার ১৮ নভেম্বর ইতিহাস মেলায় যোগ দেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানী, পিও.কাম.ডি ডব্লিউ. ও. ব্যাক ওয়ার্ড ক্লাসেস কৃষ্ণেন্দু কুমার মন্ডল, বর্ধমান সদর দক্ষিণ মহকুমা শাসক বুদ্ধদেব পান, খণ্ডঘোষ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অভিক কুমার ব্যানার্জি, খণ্ডঘোষ থানার অফিসার ইনচার্জ পঙ্কজ নস্কর, গবেষক ডক্টর রমজান আলি, গাছ মাস্টার খ্যাত অরূপ চৌধুরী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
আরও পড়ুন: চরম অমানবিক ছবি সরকারি হাসপাতালে, সদ্যোজাত শিশুকে তুলে নিয়ে গেল কুকুর
বাংল্য জন্ম স্বাধীনতা সংগ্রামীর
স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পথিকৃত বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের জন্মবার্ষিকী। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তর নাম লেখা রয়েছে স্বর্ণাক্ষরে। ১৯১০ সালে ১৮ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করে বটুকেশ্বর। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গীঙ্গী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার অনেক বীর সন্তানের নাম, আর তাঁদের মধ্যে অন্যতম বটুকেশ্বর দত্ত।
ইতিহাস
সালটা ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল। ব্রিটিশদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দুই যুবক। দেখিয়ে দিলেন ভারতীয়রা স্বাধীনতার জন্য পিছিয়ে আসবে না, বরং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে লড়াই চলবে। আর এই দুই যুবকের মধ্যে একজন ছিলেন বটুকেশ্বর। বটুকেশ্বর দত্তের স্মৃতি রক্ষায় নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও, বর্ধমান রেলস্টেশনের নাম তাঁর নামে রাখার প্রস্তাব আজও বাস্তবায়িত হয়নি। যদিও তাঁর বসতবাড়ি সরকারের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণ করে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে, কিন্তু তাঁর জীবনের প্রতি রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা ও মর্যাদা এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
শেষ ইচ্ছা
জীবনের যখন শেষ প্রহর গুণছেন বটুকেশ্বর সেসময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে ভগৎ সিংয়ের মা বিদ্যাবতী দেবী। নিজের ছেলেকে তো কবেই হারিয়েছেন, আর তাঁর ছেলের প্রাণপ্রিয় সখাকে এমন অবস্থায় দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি ভগৎ সিংয়ের মা। কবেই সাথী-হারিয়েছিলেন, শেষ শয্যায় বটুক মনে করেছেন সেকথাও। যাওয়ার বেলায় নিজের শেষ ইচ্ছার কথা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন বন্ধু ভগৎ সিংয়ের মায়ের কাছেই। জানিয়েছিলেন তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা, চেয়েছিলেন পঞ্জাবের একই গ্রামে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হোক যেখানে চিরনিদ্রায় রয়েছেন তাঁর প্রাণপ্রিয় সখা ভগৎ সিং, রাজগুরু আর সুখদেব।