ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তুরস্ক ও আজারবাইজান—যেখানে কিছুদিন আগেও ভারতীয় পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম থাকত, সেখানে এখন বাতিলের হিড়িক। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘিরে চলা সাম্প্রতিক উত্তেজনার আবহে পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে তুরস্ক। আর তার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ভারতের সাধারণ পর্যটকদের মধ্যেও। শুরু হয়েছে ‘বয়কট তুরস্ক’ (Boycott Turkey) প্রচার। ভারতীয় পর্যটকদের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে যথেষ্টভাবে।
বাতিল হচ্ছে ট্যুর, মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন ভারতীয় পর্যটকরা (Boycott Turkey)
দেশের একাধিক নামী পর্যটন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গত এক সপ্তাহে তুরস্ক ও আজারবাইজানে বুকিং কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ। একই সঙ্গে, এই দুই দেশের নির্ধারিত ভ্রমণসূচি বাতিলের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ শতাংশ-এ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই দুই দেশ নিয়ে নতুন কোনও ভ্রমণ প্রচার বা বিজ্ঞাপন।
এই অবস্থায় বিকল্প খুঁজছেন ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলিও। সেই জায়গা থেকেই ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গ্রিস। ইউরোপের এই ঐতিহ্যবাহী দেশ বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, বিশেষ করে সান্তোরিনি, মাইকোনাস, এথেন্সের মতো জায়গা। এবার সেখানে ভারতীয়দের উপস্থিতি বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিরও বয়কট তুরস্ক (Boycott Turkey)
এই ‘বয়কট তুরস্ক’ (Boycott Turkey) আন্দোলন শুধু পর্যটনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এবার সরব হয়েছে ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পও। বহু বলিউড ছবির শুটিং হয়েছে তুরস্কে। সেই তালিকায় রয়েছে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’, ‘লাল সিং চাড্ডা’-র মতো ছবিগুলি।

তবে পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে সমর্থনের প্রতিবাদে তুরস্ককে শুটিং লোকেশন হিসেবে বয়কটের ডাক দিয়েছে ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (FWICE)। এই সংগঠনের তরফে ভারতীয় পরিচালক-প্রযোজকদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন তুরস্কে আর কোনও শুটিং না করেন।
আরও পড়ুন:Summer Travel Destinations: ‘তিন পাহাড়ের স্বপ্ন’ নিয়ে এই গরমে ঘুরে আসুন তিন পাহাড়ি গ্রাম থেকে
FWICE-এর বিবৃতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে,
“মাতৃভূমি সবার আগে। এমন পরিস্থিতিতে যে দেশ আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের বিরোধিতা করে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়, সেখানে আমরা ভারতীয় চলচ্চিত্রের শুটিং করতে পারি না।”
গ্রিসই এখন নতুন পছন্দ (Boycott Turkey)
ভারতীয়দের কাছে গ্রিস শুধু ইতিহাসের দেশ নয়, বরং এক স্বপ্নের গন্তব্য। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে সে দেশের সমুদ্রস্নাত দ্বীপ, ধবধবে সাদা ঘরবাড়ি, সুস্বাদু গ্রিক খাবারের ছবি দেখে আগেই বুক বেঁধেছিল বহু ভ্রমণপিপাসু (Boycott Turkey)। এখন তুরস্ক ও আজারবাইজান বাদে বিকল্প হিসেবে গ্রিসকে সামনে রেখেই নতুন ট্যুর প্যাকেজ সাজাচ্ছে দেশজুড়ে ট্র্যাভেল সংস্থাগুলি।
রাজনৈতিক অবস্থান যে আন্তর্জাতিক পর্যটন ও বিনোদন শিল্পেও কীভাবে প্রভাব ফেলে, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ তুরস্ক ও আজারবাইজান। পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর মাশুল হয়তো এখন পর্যটন আর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির হাত ধরে চোকাতে চলেছে এই দুই দেশ। আর ভারতীয়দের কাছে উঠে আসছে নতুন এক প্রশ্ন—”বন্ধু নয়, বিশ্বাসঘাতক? তাহলে কেন যাব?”