ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২২ এপ্রিল বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ (Kashmir Terror Attack) জঙ্গি হামলার পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে কাশ্মীরের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পহেলগাঁও। বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন মরশুমে হঠাৎ থমকে গিয়েছে গোটা এলাকার জীবনযাত্রা। বেতাব ভ্যালি, বৈসরন ভ্যালি সহ আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলিতে এখন পর্যটকের দেখা নেই, কারণ সেই ভয়াবহ ঘটনার পর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব পথ। টহল দিচ্ছে সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনী, আর রাস্তাঘাট যেন ক্রমেই শ্মশানের নিস্তব্ধতায় ঢেকে যাচ্ছে।
অলিখিত লকডাউন (Kashmir Terror Attack)
একসময় যে পহেলগাঁও পর্যটকদের ভিড়ে মুখর থাকত, এখন তা (Kashmir Terror Attack) পর্যটকশূন্য। অলিখিত লকডাউনের চেহারা নিয়েছে এলাকা। এলাকার প্রায় হাজারটিরও বেশি হোটেল এখন ফাঁকা। বহু হোটেল কর্মীকে কাজ হারাতে হয়েছে, আনুমানিক ৮০ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিকেরা। এক হোটেল কর্মীর কথায়, “১৫ মার্চ থেকে ১৫ জুন, এই তিন মাসই আমাদের বাঁচার সময়। অথচ এবার সব শেষ হয়ে গেল। ২৩ এপ্রিল থেকে একটার পর একটা বুকিং ক্যানসেল হতে শুরু করেছে।”
পর্যটনের জন্য আদর্শ হলেও এখন শুধুই আতঙ্ক (Kashmir Terror Attack)
পাহাড়ি রাস্তা, পাইন গাছে ঘেরা উপত্যকা, সব কিছুই পর্যটনের জন্য আদর্শ হলেও এখন সেখানে (Kashmir Terror Attack) শুধুই আতঙ্ক। ঘোড়াওয়ালা, শাল বিক্রেতা, ট্যাক্সি চালক, যাঁদের জীবিকা একমাত্র পর্যটকদের উপর নির্ভর করে, তাঁদের আজকের দিন চলে খোঁজ নেই। এক ট্যাক্সিচালকের কথায়, “পর্যটক না এলে আমরা কী করব? সব দোকান খোলা, কিন্তু কেউ সাইট সিয়িংয়ে যেতে পারছে না। সব বন্ধ।”
জঙ্গি হামলার ঘটনায় সরকারও নড়ে চড়ে বসেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীর উপত্যকার ৪৮টি পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্যে রয়েছে ইউসমার্গ, দুধপাথরি, তুসাময়দান, আহারওয়াল জলপ্রপাত, বাঙ্গুস ভ্যালি, সিন্থান টপ, কৌসরনাগ, রাজপোরা, ভেরিনাগ এবং আস্তানমার্গ প্যারাগ্লাইডিং পয়েন্টের মতো জনপ্রিয় স্থান। উপত্যকার প্রতিটি প্রান্তে টহল বাড়ানো হয়েছে, চলছে নজরদারি।
প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে এসে পর্যটকদের প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পর্যটনমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তাঁর বক্তব্য, “আমার হাতে পুলিশ নেই, কিন্তু আমি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ওদের রক্ষা করতে পারিনি, আমার অপরাধ। আমি ক্ষমা চাওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।”
আশার আলো শ্রীনগরে
তবে এর মাঝেও আশার আলো দেখা গিয়েছে শ্রীনগরের ডাল লেকে। ধীরে ধীরে পর্যটকরা ফিরতে শুরু করেছেন সেখানে। কিন্তু পহেলগাঁও সহ উপত্যকার অন্যান্য অঞ্চলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে যে আরও সময় লাগবে, তা বলাই বাহুল্য।