ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: খড়্গপুর আইআইটিতে ফের আত্মহত্যা এক যুবকের(Kharagpur IIT Suicide Case)। রবিবার হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রের দেহ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াচ্ছে কলেজ চত্বরে। মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি দেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কে এই আত্মহত্যাকারী ছাত্র? (Kharagpur IIT Suicide Case)
মৃত পড়ুয়ার নাম শাওন মালিক। বয়স ২১ বছর। আইআইটি খড়্গপুরের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। শাওনের বাড়ি কলকাতার কসবায়। আইআইটি খরগপুরে আজাদ হলে থাকতেন তিনি। শাওনের রুম নাম্বার ছিল ২২৬(Kharagpur IIT Suicide Case)।
শাওনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান বাবা মা (Kharagpur IIT Suicide Case)
গতকাল রাতে মায়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয় শাওন মালিকের। সকাল থেকে ফোনে না পেয়ে খড়গপুরে IIT-তে পৌঁছোন ছাত্রের মা-বাবা। স্থানীয় সুত্রে জানা যায় প্রতি সপ্তাহে রবিবার মা বাবা দেখা করতে আসতেন তাঁর সাথে। তেমনই রবিবার সকালে শাওনের সঙ্গে হস্টেলে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর বাবা-মা। তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। বার বার ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত ভাঙা হয় ঘরের দরজা। ঘরে ঢুকে শাওনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান শাওনের বাবা মা(Kharagpur IIT Suicide Case)। তারপর তাঁকে বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
কী পদক্ষেপ নিলেন পুলিশ?
ঘটনাস্থলে খবর পেয়ে আসেন আইআইটি খড়্গপুরের নিরাপত্তারক্ষীরা। খবর দেওয়া হয় খড়্গপুর টাউন থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে(Kharagpur IIT Suicide Case)। শাওনের দেহ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘হস্টেল থেকে এক ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আমরা ঘটনার সব রকম দিক খতিয়ে দেখছি।“
আরও পড়ুন:Jhargram Doctor News: চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যু, রাজ্যকে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা খরগপুর আইআইটিতে
২০২২ থেকে ২০২৫ পর পর এমন ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে এই আইআইটি খড়গপুরে। রসায়ন বিভাগের জুনিয়ার টেকনিশিয়ান সাকির আলি মোল্লার দেহ উদ্ধার হয় দিন দুই আগে। দেবিকা পিল্লাই নামে কেরলের এক পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় গত জুনে। ২০২৩ সালের অক্টোবর তেলঙ্গানার এক পড়ুয়ার কে কিরণ চন্দ্রের রহস্যমৃত্যু হয়েছিল। ২০২২-এর অক্টোবরে খড়্গপুর আইআইটিতেই অসমের বাসিন্দা ফাইজ়ান আহমেদ নামে এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
কী বলছেন আইআইটি-র পড়ুয়ারা?
এ সম্পর্কে আইআইটি-এর পড়ুয়ারা বলছেন, এখানে সুইসাইড এর মতো ঘটনা গুলো নিয়ে কেউ আর বিচলিত হয়না। সবার যেন সয়ে গেছে। প্রতি বছর কিছু ছাত্র সুইসাইড করে। বিশেষ করে সেমিস্টার ব্রেক এর পর পর ঘটনা গুলো ঘটে। শাওনের আত্মহত্যার কী কারণ জানা না গেলেও অন্যান্য পড়ুয়ারা অনুমান করছেন পড়াশোনা সংক্রান্ত কোনো কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:School Girl Suicide Case: বাবা দিতে পারেনি স্কুলে ভর্তির টাকা, আত্মঘাতী নবম শ্রেনীর ছাত্রী
শোকপ্রকাশ আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষের
শাওনের মৃত্যু ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তাদের সব রকম সহযোগিতা করা হবে।“ খড়গপুর আইআইটি ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর অমিত পাত্র শাওন সম্পর্কে বলেন, টপার্স। নাটক করত। মাস্টারমশাইদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক।
শাওনের পরিবারকে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর
মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট ভাবে এখনও কিছুই জানা যায়নি। খুন না কি আত্মহত্যা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তদন্তের জন্য আনা হয়েছে স্নিফার ডগ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা অব্দি বলা যাচ্ছে না কিছুই। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়েছে শাওনের পরিবারকে ফোন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।