ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২৯ জানুয়ারি(Mouni Amavasya 2025) খুব আড়ম্বরের সাথে পালিত হচ্ছে প্রয়াগরাজে মৌনী অমাবস্যা। এদিকে প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে অমৃতস্নান শুরুর আগেই বহু মানুষের হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু বেশ কয়েকজনের, আহত হন বহু মানুষ। তারপরেও পূণ্যলাভের আশায় সঙ্গমে স্নান করছেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। জানেন কেন কোটি কোটি মানুষ এই মৌনী অমাবস্যার দিন কেন পুণ্যস্নানের জন্য হাজির হোন মহাকুম্ভসহ বিভিন্ন জায়গার গঙ্গা তীরে? জেনে নিন এই দিনের মাহাত্ম্য।
স্বয়ম্ভূ মনুর জন্ম (Mouni Amavasya 2025)
মৌনী অমাবস্যা(Mouni Amavasya 2025) তিথিতেই স্বয়ম্ভূ মনুর জন্ম হয়েছিল বলে শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। এই দিনেই প্রজাপতি ব্রহ্মা মনুকে সৃষ্টি করেন এবং বিশ্ব সৃষ্টির উদ্যোগ নেন। মনুর আবির্ভাব দিবস বলেও এই দিন মৌনী অমাবস্যা নামে পরিচিত। এই দিন মৌনতা পালন করা শুভ বলেও মাঘী অমাবস্যার অন্য নাম মৌনী অমাবস্যা। কথিত আছে, এই দিন পূণ্যস্নান করলে কোষ্ঠীর সব রকম দোষ থেকে মুক্তি পান মানুষ। বিশেষ করে কালসর্প দোষ ও পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পেতেও মৌনী অমাবস্যায় পূণ্যস্নানের মাহাত্ম্য রয়েছে। এই বিশ্বাস থেকেই এই দিনে কোটি কোটি মানুষ সঙ্গমে স্নান করেন।
সমুদ্র মন্থন (Mouni Amavasya 2025)
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের পর যখন অমৃত কলস উঠে আসে, তখন অমৃতের ভাগ নিয়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে লড়াই বাধে। ইন্দ্রের ছেলে অমৃতের কলস নিয়ে পালান, তখন অসুররা তাঁকে ধাওয়া করে। সেই সময় মোট ১২টি স্থানে অমৃত চলকে পড়ে। তার মধ্যে আটটি স্থান স্বর্গে এবং চারটি স্থান মর্ত্যে। মর্ত্যের এই চার স্থান হলো প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, নাসিক ও উজ্জ্বয়িনী(Mouni Amavasya 2025)। ১২ দিন ধরে এই ধাওয়া চলতে থাকে। স্বর্গের এক দিন মর্ত্যের এক বছরের সমান। সেই কারণে ১২ বছর অন্তর পূর্ণকুম্ভ হয়। আবার, বৃহস্পতি ১২ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। বৃহস্পতির মহাজাগতিক শক্তি ১২ বছর অন্তর পৃথিবীতে এসে পড়ে বলেও ১২ বছর অন্তর আয়োজিত হয় পূর্ণকুম্ভ। আর, ১২ বার পূর্ণকুম্ভের পর আয়োজিত হয় একটি মহাকুম্ভ। এই কারণে ১৪৪ বছর পর আয়োজিত এই মহাকুম্ভ ঘিরে বিপুল উন্মাদনা।
আরও পড়ুন:Mouni Amavasya 2025: ২৯ জানুয়ারি পালিত হবে মৌনী অমাবস্যা, জেনে নিন শুভ সময়
গঙ্গায় অমৃত বর্ষণ
মাঘ মাসের অমাবস্যা তিথি মৌনী অমাবস্যা হিসেবে পালিত হয়। এই দিনে(Mouni Amavasya 2025) সঙ্গমে স্নান করলে পাপমুক্তি ঘটে বলে প্রচলিত বিশ্বাস। এই তিথিতে সূর্য, চন্দ্র ও বৃহস্পতি এক রেখায় আসে। মহাজাগতিক শক্তির প্রভাব এসে পড়ে নদীর জলে। সেই কারণে মৌনী অমাবস্যার বিশেষ ক্ষণে ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করলে শরীর ও মনে বিশেষ শক্তি লাভ হয় বলে শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মত। এই দিনে গঙ্গার জলে অমৃতের বর্ষণ হয় বলে প্রচলিত বিশ্বাস।
আরও পড়ুন:Spices Vastu Tips: রান্নাঘরের মশলা ফেরাতে পারে ভাগ্য, জানুন টোটকা
কম নয় পুণ্যার্থীর ভিড়
শুধু ত্রিবেণী সঙ্গমে নয়, গঙ্গাতেও এই দিন বহু মানুষ স্নান করেন। মহাকুম্ভে যতগুলি শাহী স্নানের তারিখ রয়েছে, হিন্দু শাস্ত্র মতে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মৌনী অমাবস্যা। সেই কারণে মৌনী অমাবস্যাতেই প্রয়াগরাজে সবচেয়ে বেশি মানুষ স্নান করবেন বলে আগেই অনুমান করেছিল যোগী প্রশাসন। সেই মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল। তবু এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা। কিন্তু তবুও একটুকুও কমতে দেখা গেল না পুণ্যার্থীর ভিড়।