ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মুক্তি পেল এসকে মুভিজ প্রযোজিত জয়দীপ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘অপরিচিত’ (Oporichito Movie Review)। গত ২৩শে ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে সেই ছবির টাইটেল ট্র্যাক। ১০ ই জানুয়ারি মুক্তি পেল সিনেমা। রহস্যে মোড়া এই সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে মুখ্য চরিত্রে দেখা গেল ঋত্বিক চক্রবর্তী, ইশা সাহা এবং অনির্বাণ চক্রবর্তীকে।
রেটিং: ৩/৫
অপরিচিত সিনেমার গল্প (Oporichito Movie Review)
বিদেশের বাস করেন রঞ্জন ও রিয়া। মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছে তারা। সেখানেই কেউ আক্রমণ করে রঞ্জনকে(Oporichito Movie Review)।রহস্য লুকিয়ে আছে এই আক্রমণের পিছনে, কে-ই বা এই আক্রমণের জন্য দায়ী, তা তদন্তের ভার পুলিশ অফিসার অভীকের হাতে। শেষমেশ খুন হয় কেউ। কেই বা করে এই খুন, গ্রফতারই বা হয় কে? এই ঘটনা নিয়ে কোন দিকে মোড় নেবে, এই থ্রিলার মুভি সেটাই রহস্যের(Oporichito Movie Review)।
কোন চরিত্রে অভিনয় করলেন কারা? (Oporichito Movie Review)
কাহিনীর মূল চরিত্র রঞ্জনের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যায় ঋত্বিক চক্রবর্তীকে(Oporichito Movie Review)। পুলিশ ইন্সপেক্টর অভীকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। ইন্সপেক্টর অদিতির ভূমিকায় রয়েছেন ঈশা সাহা। এছাড়াও অরণ্যর ভূমিকায় দেখা গেছে সাহেব ভট্টাচার্য এবং রিয়ার বাবা শুভঙ্কর ভাদুড়ির ভূমিকায় রয়েছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:Ritwick Chakraborty: মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ থেকে গুণী অভিনেতা, নিজেকে ভাগ্যবান বললেন ঋত্বিক
নিজের চরিত্র কতটা ফুটিয়ে তুললেন অভিনেতারা
অভিনেতা হিসেবে বরাবর দক্ষতা দেখিয়েছেন ঋত্বিক(Oporichito Movie Review)। এবারও তার অন্যথা হয়নি। এবারও রঞ্জনের ভূমিকায় নিজের অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। একটি মানুষ তাঁর স্মৃতি ভুলে গেলে কতটা মরিয়া হয়ে ওঠে তা তিনি যথাযথ ফুটিয়ে তুলেছেন। শুরু থেকে শেষ অব্দি তাঁর অভিনয়ের কোনো কমতি দেখা যায়নি, যেখানে যতটুকু প্রয়োজন ততটাই দিয়েছেন তিনি। ইন্সপেক্টর অদিতি বা রঞ্জনের নিখোঁজ স্ত্রী রিয়া উভয় চরিত্রেই জমিয়ে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঈশা সাহা। শুরুর দিকে অনির্বাণের ইন্সপেক্টর অভীক হিসেবে অভিনয় খুব একটা নজর না করলেও কিছু কিছু জায়গায় ভালো অভিনয় করেছেন তিনি, তবে উনি যে মাপের অভিনেতা বা ওনার থেকে দর্শকের যেমন অভিনয়ের প্রত্যাশা তা কিছুটা কম লেগেছে এবারে। অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য এবং কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় নিজের নিজের অভিনয়ের জায়গাটুকু ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
কেমন হয়েছে কাহিনী, সংলাপ?
ছবির কাহিনী, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লিখেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। অসাধারণ একটি কাহিনী নিয়ে তৈরি এই সিনেমাটি। থ্রিলার মুভি হিসাবে শুরুর দিকে যদিও অনেকটাই ধিমিয়ে থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু যত কাহিনী climax এর দিকে এগিয়েছে দর্শকের মনে সৃষ্টি করেছে সাসপেন্স। তবে ঋষি কাপুরের ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘খোঁজ’ সিনেমার সাথে এই সিনেমার মিল পাওয়া যায়। সেখানেও একই ঘটনা, একই কাহিনী। চরিত্র অনুযায়ী সংলাপ বসিয়েছেন তিনি। তবে কিছু জায়গায় সংলাপের ওজন আরো ভালো হতে পারতো বলে মনে করেছেন দর্শক। তবে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার হিসেবে কাহিনী অবশ্যই অনবদ্য।
পরিচালক হিসেবে জয়দীপ
পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় কাহিনী হিসেবে সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন যথাযথ। তিনি চরিত্র নির্বাচনের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন অবশ্যই মূল চরিত্রে ঋত্বিকের মতো অভিনেতাকে না কাস্ট করলে হয়তো ঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হত না সিনেমার কাহিনী। এছাড়াও জায়গা নির্বাচন, প্রতিটা সিনে ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ও ওভারঅল কম্পোজিশন সিনেমার ভিজুয়াল দিকটি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তবে কিছু চরিত্র নির্বাচনে ত্রুটি দেখা গেছে যে চরিত্রগুলির জায়গায় অন্য কেউ হলে ভালো হতে পারতো বলে মনে করেছেন দর্শক।
আরও পড়ুন:Raghu Dakat: খাদানের পর ঝড় তুলবে দেবের রঘু ডাকাত, প্রস্তুতি শুরু
কেমন হল সিনেমার গান?
সিনেমায় একটা টাইটেল ট্র্যাক রাখা হয়েছে ‘কে আমি,কে তুমি, অপরিচিত লাগে’। গানটি রিমো ও নীলাঞ্জন মণ্ডলের কথায়, শুভম মৈত্রের সুরে, গানটি গেয়েছেন দেব অরিজিৎ। গানটি গভীরভাবে সিনেমার আসল অর্থকে প্রকাশ করছে। শ্রোতার মনে এই গানের সুর,কথা ভীষণভাবে ভালোলাগার সৃষ্টি করেছে।
সমগ্র পর্যালোচনা
পুরো সিনেমার ঘটনাসহ, সংলাপ, চরিত্র নির্মাণ, সিনেমাটোগ্রাফি মোটামুটি ভালোই বলা যায়। তবে পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের কাছে দর্শকের চাহিদা অনেকটাই।যে চাহিদা উনি নিজেই তৈরি করেছেন দর্শকের কাছে ভালো সিনেমা উপহার দিয়ে। তবে এই সিনেমার কিছু কিছু দিকে আর একটি নজর দিতে পারতেন তিনি। দর্শক ওনার কাছে আশা রাখেন পরবর্তীতে আরো ভালো সিনেমা নিয়ে হাজির হবেন অবশ্যই।