ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওর (Pahalgam Terror Attack) বৈসরন উপত্যকায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। নিহত ২৬ পর্যটকের এই গণহত্যার পেছনে পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিদের সহযোগিতায় কাজ করেছে জম্মু-কাশ্মীরেরই অনন্তনাগ জেলার এক স্থানীয় জঙ্গি, নাম আদিল ঠোকর। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সে ২০১৮ সালে অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে যায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে এবং ২০২4 সালে আবার ফিরে আসে কাশ্মীরে।
পাকিস্তানি জঙ্গিদের আদর্শ ‘গাইড’ (Pahalgam Terror Attack)
পাকিস্তানি জঙ্গিদের জন্য আদর্শ ‘গাইড’ হয়ে উঠেছিল এই আদিল (Pahalgam Terror Attack) ঠোকর ওরফে আদিল গুরি। অনন্তনাগ জেলার বাসিন্দা হওয়ায় সে পহেলগাঁও ও বৈসরন অঞ্চলের প্রতিটি বাঁক, গাছপালা, পাথর চেনা ছিল তার হাতের রেখার মতো। সেই সুযোগেই বৈসরনের ঘন পাইনের জঙ্গলে হামলার ছক কষে জঙ্গিরা। এই পাইনবনই তাদের আশ্রয় ও গোপন অবস্থান স্থাপনের জায়গা হয়ে ওঠে।
দৃঢ় সন্দেহ (Pahalgam Terror Attack)
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ-ছ’জনের একটি জঙ্গি দল ওই জঙ্গলে (Pahalgam Terror Attack) লুকিয়ে ছিল। তারা হামলার আগেই এলাকায় পরিদর্শন করে রেখেছিল। সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছে যে, ওই গোটা প্রস্তুতি পর্বের পিছনে ছিল আদিল ঠোকরের মদত। এমনকি, হামলার পর দ্রুত পালানোর পথও সে-ই দেখিয়ে দিয়েছিল।
সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত
এই হামলায় যেমন উঠে এসেছে এক ‘আদিল’-এর বিশ্বাসঘাতকতার কথা, ঠিক তেমনই আরেক আদিল—সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ—জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। পেশায় ঘোড়াচালক এই তরুণ পর্যটকদের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে নিজেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান। তাঁর এই আত্মত্যাগ কাশ্মীরের মাটিতে যেমন শোকের ছায়া এনেছে, তেমনি সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে।
শোকস্তব্ধ কর্ণাটকের পল্লবী রাও
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জেরে জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। সেইসঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের মনোভূমিও। শোকস্তব্ধ কর্ণাটকের পল্লবী রাও জানিয়েছেন, কিভাবে তাঁর স্বামী মঞ্জুনাথ রাওকে চোখের সামনে গুলি করে মারে জঙ্গিরা। পল্লবী বলেন, “এক জঙ্গি আমায় বলে, তোকে মারব না। যা, মোদীকে গিয়ে বল।” এই কথায় ফুটে উঠছে হামলার পিছনে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বার্তার ইঙ্গিত।
আরও পড়ুন: Pahalgam Attack: জঙ্গিকে আসতে দেখেই কলমা পড়ে প্রাণ রক্ষা অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্যের
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন দেশজুড়ে বহু মানুষ। এমনকি অনেক মুসলিম নাগরিকও প্রকাশ্যে বলেছেন, “মুসলিম হিসাবে আমি লজ্জিত।” পহেলগাঁওয়ে যা ঘটেছে, তা কেবল একটি সন্ত্রাসী হামলা নয়, বরং মানবতাবিরোধী নৃশংসতার এক জ্বলন্ত প্রমাণ। নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় এখন নজর গোটা দেশের—আদিল ঠোকর সহ সমস্ত জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি ক্রমেই জোরাল হচ্ছে।